প্রেম ও রহস্যের ‘আগামীকাল’
দুই ধরনের ছবি থাকে এবং দর্শকও। এক ধরনের ছবি ধুমধাড়াক্কা, নাচে-গানে ভরপুর আরেক ধরনের ছবি গল্পের মাধ্যমে এগিয়ে চলে। সেসব ছবিতে বাণিজ্যিক ধারার মসলাদার উপাদান না থাকলেও একটা ভালো গল্প থাকে এবং গল্পের জন্যই সেসব ছবি কেউ কেউ দেখে। ‘আগামীকাল‘ গল্পনির্ভর একটি ছবি। নির্মাণে অঞ্জন আইচ।
‘আমার জীবনে সবকিছুই খুব নিখুঁত শুধু জীবনটা ছাড়া’ মম-র কণ্ঠে এ আক্ষেপ থেকে ছবিটির পিনপয়েন্ট ভাবা যায়। তার আক্ষেপ এবং যা কিছু ঘটেছে তার সাথে অন্যান্য চরিত্র সহযোগে তারই একটি পূর্ণরূপ ‘আগামীকাল’ ছবি।
মম একটা ভীষণ রকম মানসিক অশান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর এসে পড়েছে সাইকিয়াট্রিস্ট শতাব্দী ওয়াদুদ তাকে হেল্প করার জন্য। মম কেন মানসিক অশান্তির মধ্যে আছে সেটার জট খুলতে তাকে আসতে হয়েছে। মমও মানসিক যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে তাকে সব কথা বলে হালকা হতে চায়। দেখার বিষয় কোথায় গিয়ে থামে গল্পটি।
পরিচালক অঞ্জন আইচ একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন তার ছবিতে। ছবির গানগুলো সব ভালো মানের এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘হৃদয়ের এ কূল ও কূল দু’কূল ভেসে যায়’ এর দৃশ্যায়ন মন খারাপ করা ছিল। ছবির গল্পকে গানের মাধ্যমে ফোকাস করেছেন নির্মাতা। গানগুলো গল্প বলার ধরনকে প্রভাবিত করেছে। ধীরগতির গল্প এবং ক্লাইমেক্সে রহস্যের পরিণতি টানার যে দক্ষতা সেটি অতটা স্ট্রং না হলেও গানগুলো ছবিটিকে প্রভাবিত করেছে। বিজিএম, বান্দরবানের পাহাড়ি লোকেশন ভালো ছিল। কমেডি দুর্বল এবং অনেকটা অপ্রয়োজনীয় ধরনের।
অভিনয়ে মম-ই সবচেয়ে ফোকাসড। তার অভিনয়ের গভীরতার সামনে সূচনা আজাদ যেন ম্লান হয়ে গেছে তবে সূচনা বেশ স্মার্ট। ইমন তার নিজস্ব ধারার অভিনয়ই করেছে তবে ভালো অভিনয়ই ছিল। শতাব্দী ওয়াদুদের অভিনয় ও ভয়েসের প্রশংসা না করলেই নয়। ফারুক আহমেদের চরিত্রটি প্রাণ পায়নি। সাবেরী আলমকে ভিন্নভাবে পাওয়া গেছে। টুটুল চৌধুরীর অভিনয় গতানুগতিক এবং ক্ষেত্রবিশেষে লাউড অ্যাকটিং যথেষ্ট দুর্বল। ছবির সবচেয়ে ব্যতিক্রমী চরিত্রে ছিলেন আশীষ খন্দকার, তাঁর অভিনয়ের লেভেল আলাদা।
‘আগামীকাল’ ছবি গল্পনির্ভর এবং মোটামুটি মানের মানসম্মত কাজ।
রেটিং – ৬/১০