Select Page

ফারুকী’র কল্পনার “টেলিভিশন” ও বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ

ফারুকী’র কল্পনার “টেলিভিশন” ও বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ

tv

কোন সিনেমা দেখার পর অধিকাংশ দর্শকই সেই সিনেমা’র বিষয়ে কিছু না কিছু বলতে চান। সিনেমাটা আমার ভালো লেগেছে বা আমার ভাল লাগেনি এই জাতীয় মন্তব্য যতই সহজ মনে হোক না কেন, তার মধ্যে নিহিত থাকে চলচ্চিত্র সম্পর্কে ঐ দর্শকের বিশিষ্ট মনোভাব। মানুষ যখন এই ভাল লাগা বা খারাপ লাগা নিয়ে আলোচনা শুরু করে তখন নিজের অজ্ঞাতসারেই সমালোচনার জগতে প্রবেশ করে“—(সিনেমার কথা, গাস্ত রোবের্জ)

কিছুদিন আগে আমি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী’র “টেলিভিশন” সিনেমাটা দেখেছি এবং নানা কারণে এই সিনেমাটা আমার বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। এই লেখাটিতে তাই ফারুকী’র চলচ্চিত্রের কিছু বৈশিষ্ট্যসহ টেলিভিশন সিনেমা নিয়ে নানা প্রসংগের অবতারণা করেছি। এতে বাংলাদেশের সিনেমা, রাজনীতি, সিনেমা নিয়ে ভুল ধারণা, সমালোচনায় ব্যক্তিগত আক্রমণ এসব নানা বিষয় উঠে এসেছে।

ফারুকী’র সিনেমা নিয়ে যে সব আপত্তিঃ
ফারুকী’র সিনেমা নিয়ে বোদ্ধা(!!?) মহলে ব্যাপক নাক সিটকানি ভাব দেখা যায় তাদের কিছু কমন অভিযোগ হল, সুশীল বাংলা একাডেমীয় ‘বাংলা ভাষা’কে ফারুকী নষ্ট করে দিচ্ছে এবং ফারুকীর সিনেমা নাকি নাটক নাটক লাগে।

আমার কিছু আপত্তি আছে এই দুই সমালোচনা’র ব্যাপারে। বাংলাদেশে শুদ্ধ বাংলা একাডেমীয় ভাষায় কয়টা লোক কথা বলে?? আর এখনকার যে আঞ্চলিক diversity তা ভাষা, কৃষ্টি, চলন-বলন সব কিছুতেই স্পষ্ট একটা ছাপ পাওয়া যায়। ফারুকী সেই লোকালিটি বা মহল্লা বা পাড়ার ভাষাটা ব্যবহারে সমস্যা কোথায়?? (এটা নিয়ে অনেক ফিলসফিকাল প্যাচাল ও পাড়া যাবে, এখানে in general বললাম)

আর যারা নাটক লাগে বলেন তারা কোন নাটকের কথা বলছেন, এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। মঞ্চ নাটক তো নয়ই, তারা টিভি নাটক জিনিসটা কি আসলে কিভাবে ব্যাখ্যা করেন সে জিনিসটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। টেলিভিশনে আমরা যে ধারাবাহিকগুলো দেখি (পশ্চিম বিশ্বে এবং মুম্বাই-কলকাতা-ঢাকা) তার আলাদা একটা ফরম্যাট অবশ্যই আছে। এর সাথে বিজ্ঞাপন বিরতি’র একটা যোগাযোগ ও আছে, যেগুলোকে সাধারণত আমরা সোপ অপেরাই বলে থাকি। সেই সব কথা বাদ দিলে টেলিফিল্ম নামক বস্তুটা কি তাও একটু জানা দরকার। সারা বিশ্বে প্রচলিত ধারণ হল- যে সিনেমাটা হলে রিলিজের জন্য তৈরি না করে টিভিতে রিলিজের উদ্দেশ্যে বানানো হয় তাই টেলিফিল্ম বা টিভি মুভি। সমস্যাটা মূলত ফিল্ম সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা বা মিসপারসেপশন নিয়ে।

মুম্বাই বা বলিঊড বা উপমহাদেশীয় ফিল্ম স্ট্রাকচার এর যে গতবাঁধা প্রভাব সেই অনুসারে সিনেমা হতে হলে তাতে ৫-৭ টা গান (নাচ সমেত), ফাইটিং, অতি সংলাপ ইত্যাদি অবশ্যই থাকতে হবে। ফলে দেখা যায় যে, যখনি ফারুকী বা নুরুল আলম আতিক একটু ভিন্ন ধাঁচের গল্প এবং বলিউড বা প্রতিষ্ঠিত এফডিসি ঘরানা থেকে বেরিয়ে অন্য কিছু করার চেষ্টা করেন তখনি তকমা লাগিয়ে দেয়া হয় যে এটি টেলিফিল্ম। এতে করে টেলিফিল্ম কি, ফিল্ম কি আসলে সব টেলিফিল্ম ও যে ফিল্ম সব ধারণা গুলো জগাখিচূড়ি হয়ে যায়। এভাবে যদি বলিউডে কায়দায় ফিল্মকে সংজ্ঞায়িত করা হয় তবে দুনিয়ার অনেক ক্লাসিক সিনেমাকে আমাদের দর্শকরা ফিল্ম না (!!) বলে চালিয়ে দিতে পারেন।

সিনেমা টিভি তে রিলিজ হোক বা হলে হোক, সিনেমাটিক ট্রিটমেন্ট পাওয়া গেলে সেই সিনেমা কে অযথা সমালোচনা কেন?? ফারুকী, নুরুল আলম আতিকের মত পরিচালকেরা বাজেট ঘাটতি বা মেইন্সট্রিম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নানা জটিলতার কারণে স্বাভাবিক ভাবে প্রবেশ করতে পারেন নি দেখে তাদেরকে টিভি’র আশ্রয় নিতে হয়েছে। তাও আবার এখন তারা হলে’ই মুভি রিলিজ দিচ্ছেন। তারপরো কেন এইসব অযথা সমালোচনা কেন করা হয়???

সমালোচনার ধরণঃ তিক্ত অভিজ্ঞতা-
ফারুকীর recent ‘টেলিভিশন‘ সিনেমাটা আমার নানা কারণে অসাধারণ লেগেছে। দেখার পর ইন্টারনেট SEARCH করে কোথাও একটা ভাল রিভিউ পেলাম না এই সিনেমা’র উপর। কেউ বলছেন ফারুকি তো নাটক ছাড়া কি বানাবে আর? আর কেউ বলছেন এটা তুরষ্কের Vizontele’র নকল (তারা আদৌ নকল ব্যাপার টাকে identify করতে পারেন নাকি আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে, বিশেষত ফিল্মের ক্ষেত্রে)। বলে রাখা ভাল, Vizontele সিনেমা’র প্রসংগে আমি কিছুক্ষণ পরেই তুলনামূলক আলোচনা করব। তখন আশা করি পরিষ্কার হবে যে, এই সমালোচনা অতি নিম্ন মানের বিষোদগারী দৃষ্টিভঙ্গী বহন করে।

১। ঈলমাজ এরদোগান এর VIZONTELE:
তুরষ্কের এক প্রত্যন্ত গ্রামে এক মেয়র, তার পরিবার এবং ঐ গ্রামের গ্রামবাসী নিয়ে এই গল্প। গল্প আবর্তিত হয় মেয়র যখন সরকারের তরফ থেকে একটি টেলিভিশন সেট ও ট্রান্সমিটার লাভ করে। এখানেই মেয়রের সাথে শত্রুতা শুরু হয় লতিফ নামের সিনেমা হল ব্যবসায়ীর সাথে। লতিফ মনে প্রাণে চায় যাতে টেলিভিশন সারা গ্রামে চালু না হয়। কারণ চালু হলে তার ব্যবসা লাটে ঊঠবে। ওদিকে চিন্তাভাবনায় উদার মেয়র ভাবেন এই টেলিভিশনের মাধ্যমে সারা দুনিয়ার সাথে সমান তালে আধুনিক হবে তার গ্রাম। সবাই ঘরে বসেই এই আশ্চর্য আবিষ্কারের সুফল ভোগ করবে। সমস্যা হয় টিভি’র ট্রান্সমিটার স্থাপন কে কেন্দ্র করে। এভাবেই এই সিনেমা’র গল্প এগুতে থাকে। বলে রাখা ভাল তখন তুরষ্ক এক যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। গল্পের বাকিটুকু বললে এই অসাধারণ সিনেমা’র অভিজ্ঞতা পুরো নষ্ট হয়ে যাবে।

২। ফারুকীর ‘টেলিভিশন’ এর গল্প এইরকমঃ
বাংলাদেশের কোন এক প্রত্যন্ত গ্রামে (ধরে নেই নোয়াখালি) এক চেয়ারম্যান, তার ছেলে সোলায়মান, এবং সোলায়মানের প্রেমিকা কোহিনূর ও এসিস্ট্যান্ট মজনু কে ঘিরে এই গল্প। চেয়ারম্যান অত্যন্ত একরোখা এবং রক্ষণশীল প্রকৃতির। গ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে মোটামুটি ছাড় দিলেও সকলের চারিত্রিক গঠনের ব্যাপারে(বিশেষত তরুণ তরুণিদের) তিনি বেশ dictator এবং গোঁড়া টাইপের। গ্রামে হঠাত একদিন এক হিন্দু কুমার বাবু টেলিভিশন নিয়ে আসার পর থেকে চেয়ারম্যান পড়েন বেকায়দায়। তিনি না পারছেন টেলিভিশন কে গ্রহণ করতে না পারছেন অন্যান্য ধর্মের অধিকার হরণ করতে। অতএব কড়া শর্তারোপ করে তিনি টিভি দেখার অনুমতি দিলেন। একসময় কিছু অসংগতির কারণে চেয়ারম্যান সাহেব গ্রাম থেকে টেলিভিশন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। এবং গল্পের এক পর্যায়ে টেলিভিশনের কারণে চেয়ারম্যান ও তার ছেলের মধ্যে প্রেম বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এরি মধ্যে চেয়ারম্যান হজ্জ্বে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত পুরো সিনেমা’র গল্প সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জায়গায় মোড় নেয় এবং দর্শক অসাধারণ এক উপলব্ধির সাথে নিজেকে একাত্ম করতে বাধ্য হয়।

৩। এবার আপনারা দেখুন এই দুই সিনেমা’র মধ্যে কি মৌলিক কোন মিল আছে? যা মিল আছে তা হল দুই গল্পই একটা দূরবর্তী গ্রামে সংগঠিত হচ্ছে। আর দুই সিনেমার প্রধান চরিত্রে দেখা যাচ্ছে একজন গ্রামের প্রধান। আর দুই সিনেমার গল্প টেলিভিশন কে কেন্দ্র করে। গল্পের বিষয়বস্তু’র আগাগোড়া কোন মিল খুঁজে পেলাম না। believe me, দুই সিনেমা’ই অসাধারণ উপভোগ করেছি। দুইটা সিনেমাই ক্লাসিক। যারা না বুঝে ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছেন যে ফারুকী’র টেলিভিশন এরদোগান এর সিনেমা থেক কপি করা হয়েছে তাদের কে বলব দুইটা সিনেমাই দেখুন। তারপর কথা বলবেন।

ফারুকী’র “টেলিভিশন” ও ঈলমাজ এরদোগান এর “VIZONTELE” এর গুরুত্বঃ
দুটি সিনেমাই অসাধারণ কিছু বার্তা বহন করেছে নিজ নিজ সমাজ ও দেশের জন্য। বাংলাদেশের লোকালিটি’র বৈশিষ্ট্য ছিল “টেলিভিশন” এ এবং তুরষ্কের বৈশিষ্ট্য ছিল “VIZONTELE” তে। ভুল সমালোচনার কারণে দর্শক রা দুইটা সিনেমা’র মূল এসেন্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখন অনেকে বলতে পারে ফারুকী সিনেমা’র নাম অন্যকিছু রাখতে পারতো। না ,এটা সম্ভব না। কারণ দুই গল্পে টেলিভিশন দুই ধরণের অভিজ্ঞতা ছুঁড়ে দেয় নিজ নিজ চরিত্র এবং সেই সাথে দর্শক দের কেও। ফারুকীর “টেলিভিশন” হল- বাস্তবে একটা ইচ্ছা নির্বাসিত হওয়ার পর তা এই যাদুর বাক্স দিয়ে আবার কিভাবে প্রাপ্তি ঘটল । এরদোগানের টেলিভিশন জানিয়ে দেয় “মেয়র কিছু একটা হারাল” এবং অনুভূতিটা এমন যেন টেলিভিশন ই সেই হারানোর জন্য দায়ী। প্রথমটি পুনরুদ্ধারের গল্প, দ্বিতীয়টি হারানোর গল্প। বাস্তব কে ঠিক বিপরীত ভাবে mediate করেছে দুই সিনেমাতে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সব কিছু এই যাদুর বাক্সে আমরা নানা ধরণের sensation এর মধ্য দিয়ে পার করি। এইসব নানা sensation এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক এই দুই সিনেমাতে কালজয়ী ভাবে ফুটে ঊঠেছে।

“টেলিভিশন” — বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণঃ
ফারুকী’র টেলিভিশনে একটা সিকোয়েন্স আছে যখন গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকেরা চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করতে আসে যে তাদের কে টিভি কিনতে না দিলে তারা আত্মহত্যা করবে কারণ কুমার বাবুর টিভি’র কারণে তার কাছে সব ছাত্র ছাত্রী অংক পড়তে যায়। ঐ দৃশ্যের এক ফাঁকে দেখা যায় পাশের একটা মক্তবে এক মাদ্রাসা বালক কোরান পাঠ করছিল। তার শট টা এমন ভাবে নেওয়া যা তার মুখ থেকে নিচের অংশ আর কোরান শরীফ টাই দেখা যাচ্ছে…অসাধারণ একটা সিনারি দিয়ে ফারুকী বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় ও শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের একটা গাফিলতী’র ইতিহাস তুলে ধরেছেন। মুখটা তিনি ঢেকে দিলেন কেন??এই প্রশ্নটাই মুখ্য আমার কাছে। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে এই মাদ্রাসা (কওমি, মক্তব) পড়ুয়া বিশাল অংশকে নিয়ে আমাদের কোন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, এলাকা’র প্রভাবশালী লোকজন কখনই কিছু ভাবেন নি…এই ভাবা মানে এটা বলছিনা যে তাদেরকে দুই বেলা খানাপিনা ensure করা হোক। ভাবা দরকার এই কারণে যে, nation building process এ তাদের ভূমিকা টা কি রকম হবে? তারা যে পঠন পাঠন করছে তার সংস্কার কি দরকার আছে? থাকলে কি ধরণের সংস্কার করতে হবে?? সমাজ-রাষ্ট্রের communication এ তারা কিভাবে act করবে?? তাদের উর্দু শিক্ষা টা কতটুকু যুতসই এই সময়ে?? এবং আরো অনেক প্রশ্ন।

ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো আজীবন তাদের ব্যবহার করে আসছে main force হিসেবে। মেইনস্ট্রিম পার্টি ব্যস্ত তাদেরকে বিভাজন করতে, আর বামপন্থী রাজনীতি তো আজ পর্যন্ত দেশে শ্রমিক কারা, কৃষক কারা, proletariet কারা তাই ঠিক করতে পারলনা!!!!!

এই অবজ্ঞতার শাস্তি আমরা ‘মে’ মাসে কিছুটা হলেও পেয়েছি। শাস্তি এই অর্থে যে বাংলাদেশের সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে এই বিশাল অংশের তরুণদের এখনো include করতে পারিনি। এই exclusion এর ফলস্বরূপ বাংলাদেশ রাষ্ট্র নিয়েই তার আন্তিরিকতা’র ঘটতির সুযোগ নিচ্ছে এইসব ধর্ম ব্যবসায়ীরা। কেন include করতে পারিনি সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজাটাও অনেক জরুরী।

টেলিভিশন সিনেমা নিয়ে এই আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ।


২ Comments

  1. সুমন সেনগুপ্ত

    লেখক রিসাত খুব ভালো লিখেছেন,খুব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ছবিটির মূল বক্তব্যটি তুলে ধরেছেন,ছবিটির সামাজিক,রাজনৈতিক,এবং আদর্শিক বক্তব্য লেখকের লেখায় স্পষ্টভাবেই উঠে এসেছে তবে এর সাথে ছবিটির নির্মাণশৈলী এবং কিছু টেকনিকাল দিক বা সিনেমাটিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে কিছু আলোচনা করলে রিভিউটা পরিপূর্ণ হতো বলে আমার মনে হয়।আরেকটা বিষয় আসলে আমরা স্বীকার করি বা না করি শুধু উপমহাদেশেই নয় সারা বিশ্বেই সিনেমা মূলত অঘোষিতভাবে দুইভাগে বিভক্ত বাণিজ্যিক ধারা এবং বিকল্প বা শৈল্পিক ধারা বলতে পারেন,আরেক রকম ছবি করেন কিছু নির্মাতা যেগুলো একি সাথে ধুন্ধুমার ব্যবসাও করছে আবার শিল্পসম্মত ছবি হিসেবেও সমাদৃত হচ্ছে,আমাদের উপমহাদেশে নাচ গান বা মারপিট সমৃদ্ধ ছবি আর বর্হি বিশ্ব স্পেশাল ইফেক্ট আর মারপিট সমৃদ্ধ ছবিগুলো মূলত বাণিজ্যিক ধারার ছবি হিসেবে গণ্য হয় এবং সাধারণ দর্শকদের কাছে এই ছবিগুলোই মূলত সিনেমা ভরপুর বিনোদন,larger than life জাতীয় কিছু… এই দিক দিয়ে বিবেচনা করেই ফারুকীর ছবি গুলো কিংবা তারমত নির্মাতা যারা কিনা বুদ্ধিদীপ্ত ভিন্ন ধারার ছবি বানাতে চেষ্টা করে চলেছেন তাদের ছবিগুলো অনেকের কাছে নাটক নাটক বা ছোট পর্দার কাজ বলে মনে হয় এটা আবার অনেকটা বাজেটের কমতির কারনেও মনে হয়,আরো অনেক টেকনিকাল কারনেও এই নাটক নাটক ভাবটা মনে হয় যেমন প্রচুর পরিমাণে close up শটের ব্যবহার বা টিভি ফিকশনের অভিনেতা অভিনেত্রীর দ্ধারা অভিনয় ইত্যাদি …যাই হোক আপনার লেখাটা খুব ভালো লেগেছে একটা অর্থবহ লেখা আপনাকে ধন্যবাদ।

    • risat

      ভাইয়া, আপনার অসাধারণ এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ কমেন্ট এর জন্য অনেক ধন্যবাদ। সিনেমার টেকনিকাল দিকটা ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গিয়েছি। অনেকেই লিখেছে সেজন্য। তবে সিনেমাটিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে আলাদা আর একটা লেখা লেখব।প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর আমি কমার্শিয়াল ফিল্ম কে ছোট কখনই করিনা। কারণ সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বলতে আমি যেটা বুঝি যে এখানে সিনেমা মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে এবং মানুষকে তৈরিও করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম কাজটা ভালভাবে করতে পারে কমার্শিয়াল সিনেমা (এর অতিরিঞ্জন বা এটাকেই ideal মনে করে ফেললে আবার অনেক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়)। সিনেমা সব ধরণের মানুষের কাছে পৌছাঁনোর জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মাধ্যম, তাই কমার্শিয়াল সিনেমা’র গুরুত্ব এবং দায়িত্ব ও অনেক । আর তৈরি’র যা বিশাল কাজ, তা করবে ঐসব “ভাল” সিনেমা গুলো। । আপনার কমার্শিয়াল সিনেমা’র যে ধারণা তার সাথে আমি ১০০ ভাগ একমত। সিনেমা নিয়ে আপনার সাথে আশা করি সামনে এমন বাতচিত হবে। ভাল থাকবেন

Leave a reply