Select Page

বক্স অফিসের ‘ভয়ংকর দিক’ নিয়ে বললেন ফারুকী

বক্স অফিসের ‘ভয়ংকর দিক’ নিয়ে বললেন ফারুকী

বক্স অফিস অবশ্যই সার্বিকভাবে সিনেমার জন্য ভয়ংকর একটা দিক….

রাজধানীর কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশে আয়োজিত ‘মঙ্গল সমাবেশ’ নামের আড্ডার সাম্প্রতিক (২ আগস্ট) পর্বে অতিথি ছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। খবর চ্যানেল আই অনলাইন।

নির্মাতার বেড়ে ওঠা, চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, চলচ্চিত্র জগতের অভিজ্ঞতা এবং ব্যক্তিজীবনের নানা প্রসঙ্গের বাইরে উপস্থিত দর্শকদের নানান প্রশ্নেরও সাবলীল উত্তর দিতে দেখা যায়। এদিন এক দর্শক ‘ডুব’-খ্যাত নির্মাতাকে দেশের সিনেমায় ‘বক্স অফিস’ এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন।

ফারুকী এ প্রসঙ্গে বলেন,‘বক্স অফিস বিষয়টি নিয়ে দুটো জিনিস আছে। একটি হচ্ছে, বক্স অফিসে কতো আয় হলো- এটি প্রডিউসার ও ডিস্ট্রিবিউটরটা জানার সুযোগ পান। এটা অবশ্যই ব্যবসায়িক হিসেবের জন্য তাদের দরকারি।’

বক্স অফিসের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ফারুকী হলিউডের অন্যতম দাপুটে নির্মাতা মার্টিন স্করসিসের একটি লেখার প্রসঙ্গ টেনে বলেন,‘বক্স অফিস কালচার নিয়ে মার্টিন স্করসিস একটা লেখা লিখেছেন। সেখানে তিনি বক্স অফিস নিয়ে দারুণ বলেছেন। একজন কিশোর ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে ঢুকে দেখছে, অমুক ফিল্মটি একশো কোটি টাকা আয় করেছে, সে ভাবে এটা অবশ্যই তার দেখা উচিত। একশো কোটি টাকা আয় করেছে মানে এটা নিশ্চয় বহু মানুষ দেখেছে, আমাকেওতো ট্রেন্ডে থাকতে হবে।’

ফারুকী বলেন, ‘এটা অবশ্যই সার্বিকভাবে সিনেমার জন্য ভয়ংকর একটা দিক। আমি যদি আমার সিনেমা শুরুর সময়ের কথা চিন্তা করি, সেসময় ডিপজলের সিনেমা বেশি আয় করতো। তখন যদি বক্স অফিস থাকতো, তাহলে কী হতো! কল্পনা করুন, একটা ছেলে ঘুম থেকে উঠে দেখলো ডিপজলের অমুক ছবি পাঁচ কোটি টাকা ব্যবসা করেছে, সে ভাবতো ‘লেটস গো ওয়াচ ডিপজল’! আর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ছবি পঁচিশ হাজার, সেই কিশোর কি কখনও এরকম সিনেমার প্রতি ইন্টারেস্ট ফিল করতো? নিউ ভয়েস উড হ্যাভ বিন কিলড!’

‘একটা ভালো ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে, আবার একটা খারাপ ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে। ফলে গরিষ্ঠ মানেই সব সময় বেটার, এটা কিন্তু না। গরিষ্ঠ দেখেছে বলেই ছবি দেখতে যেতে হয় আমার, এটা কিন্তু না। এজন্যই বললাম, বক্স অফিস দরকার ছিলো শুধু প্রযোজক ও পরিবেশকের জন্য। কিন্তু এটা এখন দর্শককে প্রভাবিত করছে, বক্স অফিস দেখে লোকজন সিনেমা দেখতে যায়। এজ ইফ, ওই শার্টটা সবাই পরছে- আমাকেও এটা পরতে হবে! এটা কেন? আপনি আপনার শার্টটি খুঁজে বের করুন, কোন শার্ট পরলে আপনার ভালো লাগবে! কেন ও যেটা পরছে, সেটা আপনাকে পরতে হবে? ইটস বিকজ, সোশাল মিডিয়া আপনাকে অনবরত প্রেসারাইজ করছে! সেটা না করলে আপনি ব্যাক ডেটেড!’- বলছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

বক্স অফিসের আয় ব্যয়ের হিসেব মানুষকে সিনেমাটি দেখতে কিংবা বিমুখ হতে প্রভাবিত করছে। সিনেমা যেরকমই হোক, শুধু মাত্র বক্স অফিসে শত কোটি টাকা আয় করেছে শুনে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। এর ফলে অনেক সময় ভালো সিনেমাকেও মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা যায়। সাম্প্রতিক ভারতীয় সিনেমায় বক্স অফিসের এমন সংস্কৃতির সমালোচনাও করেছেন সিনেবোদ্ধারা। এমনকি গেল কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে ‘বক্স অফিস’ কালচার নিয়ে সমালোচনা করেন খোদ নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী।


মন্তব্য করুন