বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কঙ্গনার ‘ইমার্জেন্সি’, গুজব ছড়াচ্ছে ভারতীয় মিডিয়া!
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ, উসকানিমূলক এবং ভুলভাল তথ্য প্রকাশ স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রায় সময়ই সূত্র ছাড়া খবর বা গুজব ছাপিয়ে আসছে। এবার লেখা হলো বাংলাদেশবিদ্বেষী বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত অভিনীত ও পরিচালিত ছবি ‘ইমার্জেন্সি’ ঢাকা নিষিদ্ধ করেছে।
ভারতে একাধিক বাধা পেরিয়ে ১৭ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে কঙ্গনার ছবিটি। এর মাঝে আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাসহ বেশকিছু অনলাইন মাধ্যম বলছে, ‘ইমার্জেন্সি’ বাংলাদেশে ব্যান করা হল।
সিনেমাটি প্রসঙ্গে হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, “ইন্দিরা গান্ধীর সময় ভারতের ১৯৭৫ সালে জরুরী অবস্থা তৈরি হয়েছিল। যা রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল ভারতকে। ছবিটিতে ভারতের রাজনীতি ও সমাজনীতির একটা অন্ধকার দিক ফুটে উঠেছে। তাছাড়া ছবিতে দেখানো হয়েছে ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধতে সাহায্য করেছিল।
সেই সময় পাকিস্তান-বাংলাদেশের যুদ্ধে যাতে ভারত না জড়িয়ে পড়ে তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রমাগত চাপ আসছিল, কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে ভারতে জায়গা দেওয়ার থেকে অর্থনৈতিক স্তরে ভারতের পক্ষে সরাসরি পাকিস্তানের মোকাবিলা করা ভালো হবে।
কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ, এখনও যে অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে তা বলা যায় না। তাছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দিয়েছিল। তাই সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ছবিটির মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। তবে অনেকের মতেই এর ফলে ছবির বেশ কিছুটা ক্ষতি হবে। কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, কিন্তু সেখানেই প্রবেশ করতে পারছে না এই ছবি। ফলে ছবির আয়ের উপর যে এর বড় প্রভাব একটা পড়বে তা বলাই বাহুল্য।
আজ তকের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিষয়টির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র শেয়ার করেছে যে, ‘বাংলাদেশে ‘ইমার্জেন্সি’ ব্যান করার সিদ্ধান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গেও জড়িত। তাই ছবিটি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি কর হয়েছে। অনেকের মতে ‘ইমার্জেন্সি’র অনেক বিষয়বস্তু দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক সমস্যার নানা দিককে প্রভাবিত করবে।’”
প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য নেই অদৌ বাংলাদেশে কেউ এ সিনেমা আমদানি অনুমতি চেয়েছে কিনা। কারণ ‘স্ত্রী ২’ এর ভরাডুবির পর কেউ আর ভারতীয় সিনেমা নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি। সাধারণত ভারতে অতিআলোচিত ও সুপারস্টারদের হিট সিনেমা নিয়ে বাংলাদেশি দর্শকদের আগ্রহ দেখা যায়। সেক্ষেত্র কঙ্গনা সিনেমার কোনো ভবিষ্যৎ নেই বাংলাদেশে। তবে সেটা অন্য বিষয়। ঘটনা হলো, ‘ইমার্জেন্সি’ বাংলাদেশে আমদানির জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে বলে কোনো তথ্য নেই ভারতীয় খবরে বা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোয় এ ধরনের কোনো তথ্য নেই।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর একটি অংশ ভারতীয় বাংলা অনলাইনের খবর প্রায়শ হুবহু ছাপিয়ে থাকে। ‘ইমার্জেন্সি’র ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। তারা ভারতীয় গুজবকে হুবহু ছাপিয়ে দিয়েছে। কোনো ধরনের যাচাইয়ের চেষ্টা সেখানে দেখা যায়নি।