বিরল রেকর্ড : ববিতার বাবা-প্রেমিক-মামা রাজ্জাক
ববিতার সঙ্গে অসংখ্য হিট রোমান্টিক সিনেমা উপহার দিয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাক। মজার বিষয় হলো, এ নায়িকার বাবা ও মামা চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা। এমনটা খুবই কম পাওয়া যাবে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে।
বড়বোন সুচন্দা অভিনীত জহির রায়হানের সংসার চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ববিতার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। এই চলচ্চিত্রে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ওই সময় তার নাম ছিল সুবর্ণা। সে ছবিতে ববিতার নায়ক ছিলেন মাহমুদ সাজ্জাদ।
পরের বছর ‘শেষ পর্যন্ত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন প্রথম নায়িকা চরিত্রে। ততদিন নামও হয়ে গেছে ববিতা। তার বিপরীতে ছিলেন রাজ্জাক।
এ প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, “রাজ্জাক ভাইয়ের সাথে ‘সংসার’-এ পিতা-কন্যার ভূমিকায় অভিনয়ের পর ‘শেষ পর্যন্ত’-এ প্রেমিকার অভিনয় করতে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর পর কিছুতেই সহজ হতে পারছিলাম না। কীভাবে হবো বলেন? আমার বয়সই বা কত— কিশোরী, চুলে বেণী করি। যাই হোক জহির (রায়হান) ভাই আমাকে এসে ধমক দিলেন। ভয়ে ভয়ে অভিনয়টা করলাম।”
১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ‘আলোর মিছিল’ সিনেমাটি। আর এ সিনেমায় ববিতার ছোট মামার চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক। ওই সময় অনেকে এ ভূমিকায় অভিনয়ে মানা করেন দুই তারকাকে। তাদের মতে, পরে রোমান্টিক জুটি হিসেবে দর্শক তাদের নেবেন না। এ অনুমান ভুলই হয়েছে। ‘আলোর মিছিল’ ঢালিউডের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ছবি। কিন্তু রাজ্জাক-ববিতার রোমান্টিক রসায়নে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।
১৯৭৭ সালের মার্চে মুক্তি পায় চিত্রনায়ক রাজ্জাক পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র অনন্ত প্রেম। এই চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে রাজ্জাক-ববিতার গভীর চুম্বনের একটি দৃশ্য ছিল যা সেই সময়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল। তবে চুম্বনের দৃশ্য বাদ দিয়েই চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটির জন্যই চিত্রায়িত হয়েছিল বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের প্রথম চুম্বন দৃশ্য।
এ জুটির অন্যান্য ছবির মধ্যে রয়েছে টাকা আনা পাই, স্বরলিপি, পীচ ঢালা পথ, আলোর মিছিল, বাঁদী থেকে বেগম, সোহাগ, ভুল যখন ভাঙ্গল, বিরহ ব্যাথা, প্রফেসর ও কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি।
তথ্য ও ছবি : উইকিপিডিয়া, মীর শামসুল আলম বাবু ও অন্যান্য