বড়পর্দার তারিক আনাম খান
তারিক আনাম খান চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম বর্তমানে। তিনি অনেকদিন থেকেই চলচ্চিত্রে কাজ করেন কিন্তু তাঁর আগের কাজের সাথে বর্তমান সময়ের একটা বিরাট পার্থক্য আছে।তিনি যখন ক্যারিয়ার শুরু করেছেন তাঁর আশেপাশে যারা কাজ করতেন তাঁরা তাঁর চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলেন না বা প্রতিযোগিতা ছিল চরমে। বিশেষ করে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই সময় পার করে তিনি বর্তমানে যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন এখন চলচ্চিত্রে তাঁর অবস্থান অবধারিতভাবেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাঁর মতো অভিনেতা বর্তমানে নেই।
তিনি যাদের সাথে কাজ করতেন অনেকেই আজ নেই আমাদের নেই, চলে গেছেন। তারিক আনাম সেজন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ তিনি বড় একটা অভাব একাই পূরণ করে যাচ্ছেন।
তারিক আনামের চলচ্চিত্রে যে ইমেজ তিনি একাই নিজের অভিনয়শক্তিতে ছবির নায়ক-নায়িকার থেকে মূল আকর্ষণে পরিণত হতে পারেন তাঁর গুণে। সেই যোগ্যতা তাঁর আছে। তিনি পর্দায় ফাটিয়ে অভিনয়টা করতে পারেন।
তাঁর ছবিগুলো: ঘুড্ডি, লাল সবুজের পালা, সুরুজ মিয়া, কত যে আপন, আমার ঘর আমার বেহেশত, জয়যাত্রা, মেড ইন বাংলাদেশ, আহা, জাগো, দ্য লাস্ট ঠাকুর, ঘেটুপুত্র কমলা, দেশা দ্য লিডার, আহা, পদ্মপাতার জল, জোনাকির আলো, রান আউট, সুপার হিরো, সাপলুডু, মেকআপ, আবার বসন্ত এবং মৃধা বনাম মৃধা।
‘ঘুড্ডি, লাল সবুজের পালা, সুরুজ মিয়া’ তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথমদিকের উল্লেখযোগ্য কাজ। ‘ঘুড্ডি’-র মতো মাস্টারপিস ছবিতে তিনি কাজ করেছেন। ছবিটিতে শিল্পচর্চার প্রতি তাঁর আগ্রহের প্রকাশ ঘটে। ‘লাল সবুজের পালা, সুরুজ মিয়া’-তে ‘ঘুড্ডি’-র মতোই লুকে ছিলেন এবং তখন তাঁকে দেখতে অন্যরকম লাগত অনেকটা হলিউডি ফ্লেবার ছিল লুকের মধ্যে। পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ছবিতে যেমন তিনি অসাধারণ আবার অন্যধারার ছবিতেও সম্পূর্ণ অন্যরকম। ‘জাগো’ ছবির সেই ফুটবল কোচের চরিত্রটি কে ভুলতে পারে! প্রফেশনাল কোচের মতো পর্দায় একটি তরুণ ফুটবল দলকে উজ্জীবিত করে সাফল্য এনে দেন। ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবির জমিদার চরিত্রে নিজের ব্যক্তিত্বপূর্ণ অভিনয় দিয়ে কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। ‘পদ্মপাতার জল’-এও অনেকটা তেমনই চরিত্রে ছিলেন। ‘মেকআপ, আবার বসন্ত’ তাঁর প্রধান চরিত্রের অনবদ্য পারফরম্যান্সে ভরা। তিনিই প্রধান আকর্ষণ ছবিগুলোতে। ‘মৃধা বনাম মৃধা’ সর্বশেষ ছবি এখন পর্যন্ত এবং দর্শক প্রশংসিত ছবি। তিনি মৃধার চরিত্রে একজন অভিমানী বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং দর্শককে স্পর্শ করেছে তাঁর অভিনয়। নেতিবাচক চরিত্রেও তিনি অসাধারণ ‘কত যে আপন’ ছবিতে পুরোদস্তুর কমার্শিয়াল ভিলেন যার সংলাপ ছিল ‘এটা কোনো ব্যাপারই না’। ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছবির নেতিবাচক ভূমিকা কমেডিতে ভরা এবং ব্যতিক্রমী অভিনয় ছিল। ‘দেশা দ্য লিডার’ উল্লেখযোগ্য। ‘রান আউট’ ছবিতে তিনি ওয়ান ম্যান শো-এর মতো অভিনয় করে গেছেন নেতিবাচক চরিত্রে। ‘সুপার হিরো’ ছবিটিও খুব উল্লেখযোগ্য নেতিবাচকের জন্য।
তারিক আনাম খান-কে চলচ্চিত্রে প্রয়োজনটা এ সময়ে অনেক বেশি। তাঁকে দিয়ে নিত্যনতুন এক্সপেরিমেন্ট করানো যাবে দরকার শক্তিশালী গল্প ও ভালো মানের নির্মাতা। তবেই তারিক আনামের কাছ থেকে আরো কিছু রেয়ার পারফরম্যান্স পাওয়া সম্ভব।