ভারতীয় পরিচালক ‘মাসুদ রানা’ করলে সমস্যা কী?
জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ সম্প্রতি ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের অগ্রগতি জানালে ঢালিউডের তরুণ দর্শকদের মাঝে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তাদের আলোচনার প্রধান বিষয় কে এই আইকনিক চরিত্রে অভিনয় করছেন, আর কে-ই বা পরিচালনা করবেন।
আব্দুল আজিজের বরাতে কেউ কেউ বলছেন, সিনেমাটির হাল ধরতে পারেন কলকাতার চার পরিচালকের মধ্যে যে কেউ। তারা হলেন— রাজা চন্দ, বাবা যাদব, জয়দীপ মুখার্জী ও রাজ চক্রবর্তী। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসন্তুষ্টি জানিয়েছেন অনেকে।
তারা চান না দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার কপি-পেস্ট নির্মাতাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক মাসুদ রানার মতো অতি প্রতিক্ষীত চরিত্র। তার উপরে এ ধরনের চরিত্র নিয়ে কাজ করার যোগ্যতা চার পরিচালকের কারোই নেই বলে মনে করেন তারা।
তবে আপত্তির বড় বিষয় হলো— ‘মাসুদ রানা’ পুরোপুরি বাংলাদেশি চরিত্র, যার পালস বাইরের নির্মাতাদের ধরতে না পারা্ই কথা। বিশেষ করে ইতোপূর্বে কলকাতা বা মুম্বাইয়ের নির্মাতাদের সিনেমাতে বাংলাদেশকে নিয়ে বরাবরই ভুল ট্রিটমেন্ট দেখা গেছে। এমনকি বাংলাদেশের বাংলা ভাষা সম্পর্কেও তার অজ্ঞতা রয়েছে। সেখানে এখানকার সংস্কৃতি, ভাব-ভাষার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ কীভাবে হবে?
‘মাসুদ রানা’ যে সেই স্পাই নয়, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ‘আইকনিক চরিত্র’। সে বিবেচনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধারণ করার মতো বৈশিষ্ট বিদেশিদের সামর্থ্যের বাইরে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় চরিত্রের দিক থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র, আর পশ্চিমবঙ্গ ভারতের রাজ্য মাত্র। দেখা গেছে সেখানকার পরিচালকার রাষ্ট্র ব্যাপারটা সে অর্থে নিজেদের সিনেমায়ও তুলে ধরতে ব্যর্থ। নানা ধরনের গোয়েন্দা চরিত্র তাদের সিনেমায় দেখা গেলেও নিজেদের দেশকে ধারণ করে এমন গোয়েন্দা চরিত্র তৈরি করতে পারেনি। বাংলাদেশ কেন তাদের দায়িত্ব দেবে? তাই অনেকেই ভাবছেন— এ সিনেমার জন্য বাইরে নির্মাতা আমদানি করাও লজ্জার।
স্যোশাল মিডিয়ার আলোচনায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশি এত বড় কাজের সঙ্গে যুক্ত যাওয়ার মতো পরিচালক দেখা যাচ্ছে না, কারণ আগে এ মাপের নির্মাণ হয়নি। কিন্তু অমিতাভ রেজা ‘আয়নাবাজি’ বা দীপংকর দীপনের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ থ্রিলারের ভালো উদাহরণ। এছাড়া টিভিতে রয়েছেন শাফায়াত মনসুর রানা বা তানিম রহমান অংশুর মতো মেধাবী নির্মাতা। সেখান থেকেও বেছে নেওয়া যায় যোগ্যতার ভিত্তিতে।
জাজের সাম্প্রতিক ঘোষণায় জানা যায়, পাঁচ বছরের মধ্যে নির্মাণের জন্য মাসুদ রানা সিরিজের প্রথম তিন কিস্তির অনুমতি পেয়েছে প্রতিষ্ঠান। প্রথম সিনেমা ‘ধ্বংস পাহাড়’ শুটিং ফ্লোরে যাবে ২০১৯ সালের শুরুতে।