Select Page

ভয়ংকর সুন্দর : পানি দে

ভয়ংকর সুন্দর : পানি দে

আপনারা অনেকেই হয়ত ‘ভাত দে’ ছবিটা দেখেছেন। বলতে গেলে প্রায় সবাই দেখেছেন। যেখানে দেখা যায় চরম বাস্তবতায় এক নারী (শাবানা) খাবার বা ভাতের জন্য কী পরিমাণ যুদ্ধ করে! মানুষের মুখের ভাত, মন্দিরের প্রসাদ, গাছের ফল ইত্যাদি চুরি করে খাওয়া শুরু করে।তার পূরুষ সঙ্গী (আলমগীর) এর সাথে শেষে তাদের পরিণতিটা কেমন হয় তা সবাই দেখেছেন। সে সম্পর্কে আর নাইবা বললাম।

‘ভয়ংকর সুন্দর’ তারই এ যুগীয় ভার্সন। এখানে দেখতে পাবেন এযুগ একজন বা দুজন মানুষ কতটা লড়াই করতে পারে? সেকালের লড়াইয়ের সাথে একালের লড়াইয়ের পার্থক্যটা কী? গ্রাম জীবন ও শহুরে জীবনের লড়াইয়ের পার্থক্যসহ উঠে এসেছে মিষ্টি প্রেমের গল্প। যা গভীর পানির মত ভয়ংকর আবার গ্লাসের টলটলে পানির মত সুন্দর। এসব নিয়েই ‘ভয়ংকর সুন্দর’ ।

মুভি রিভিউ : ভয়ংকর সুন্দর।

প্লট : অতি আদরে বেড়ে ওঠা ধনীর দুলালীর বাস্তবের চরম অভিজ্ঞতা।

কাস্টিং : কাস্টিং বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। ছোটখাট যেসব চরিত্র মাত্র ১ মিনিট কিংবা তারচেয়েও কম সময়ের উপস্থিতি সেসব চরিত্রেও অভিজ্ঞ অভিনয় শিল্পী ব্যাবহার করা হয়েছে। সবাই প্রফেশনালি কাজ করেছেন। তবে একটা বিষয়ে কিছুটা খটকা লাগছিল সেটা হল খায়রুল আলম সবুজ উপস্থিতি।

অভিনয় : কাস্টিং দেখলে আর আলাদা করে অভিনয় বুঝাতে হবে না। আমি ভারতীয় চলচ্চিত্র এড়িয়ে চলি তাই পরমব্রত আমার কাছে নতুন আর্টিস্ট। যদিও তার ‘ভুবন মাঝি’ দেখতে গিয়ে শুধু হলের পর্দা ছাড়া অন্য কিছুই দেখতে পাইনি। তবে এবার হল কিছুটা উন্নত করায় অনেক কিছু দেখতে পেয়েছি। পরমব্রত মুকু চরিত্রে ন্যাচারাল অভিনয় করেছে।

ভাবনা বয়সে পরিপক্ক হলেও মাথায় অপরিপক্ক একটি মেয়ের চরিত্রে, একে অটিজম বলব কিনা বুঝতে পারছি না। বেশ ভালই অভিনয় করেছেন। তার বকবক শব্দ খারাপ লাগেনি।

অন্য চরিত্রের তেমন উপস্থিতি ছিল না তবুও এমন ছোট চরিত্রের জন্য হাসান ইমাম, লুৎফর রহমান জর্জ, সমাপ্তি মাসুক, অ্যালেন শুভ্র, দিহান, ফারুক আহমেদের মত গুণী অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন।

ছবিটির বিভিন্ন সেকশনের কাজ দেখে বার বার একবছর আগের ‘আয়নাবাজি’র কথা মনে পড়ছিল। ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড আপনাকে বাধ্য করতে পারে ‘আয়নাবাজি’র কথা মনে করাতে। ছবিটির শুরুর অংশের কমেডিগুলো আসলেই অনেক সুন্দর নিরেট কমেডি যাকে বলে।

চিত্রগ্রহণ : এই বিভাগে খায়ের খন্দকার যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা দেখিয়েছেন। প্রতিটি শট নিয়েছেন অনেক যত্নশীলভাবে। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই নিয়েছেনে শটগুলো। সবাইকে বেশ অকর্ষণীয় লাগছিল। ভাবনাকেও অনেক বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে। এর আগে ‘আয়নাবাজি’কে রাশেদ জামান যে রকম আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরেছিলেন।

একটা বিষয় বেশ ভাল লেগেছে তা হল ভাবনার সাইকো হয়ে যাওয়া ও প্রতিশোধ পরায়নতা যা ‘ভাত দে’ থেকে অনেক আলাদা ।

আমার কাছে ছবিটির একটা বিষয় নজরে ধরেছে তা হল ছবিটির ভাষা দক্ষিণ ভারতীয় স্টাইলের। না, আমি ছবিটির কথ্য ভাষার কথা বলছি না বলছি স্টাইলের কথা। এখন পর্যন্ত যত দক্ষিন ভারতীয় মুভি দেখেছি তাতে দেখা যায় বিরতির আগ পর্যন্ত কমেডি চলে আবার বিরতি আগে আগে শুরু হয় মুল গল্প। এটারও তেমন। আমি ভারত অপছন্দ করি তাই হয়ত এমন মনে হয়েছে ।

হয়ত অনেকের কাছে এটাই বেশি আকর্ষণীয়। যে কারণে দেশে ঐসব মুভির দর্শক বেশি।

রেটিং এর ঝামেলায় জড়াতে চাইনা। তবে এটুকু বলতে পারি পুরো মুভিটি বেশ ভয়ংকর সুন্দর। যা কিছুটা সময় দর্শককে মাতিয়ে রাখে হাত তালি দিয়ে আবার অনেকটা সময় গভীর স্তব্ধতা ঘিরে রাখে ।


Leave a reply