মনের মাঝে তুমি: অল টাইম ব্লকবাস্টার
মনের মাঝে যে সুর বাজে
মনের মাঝে যে সুর বাজে তার নাম ‘ভালোবাসা।’ ভালোবাসা নিয়ে কবিতা-গল্প-উপন্যাস ইত্যাদি লিখেছেন লেখকেরা, আঁকিয়েরা এঁকেছেন ছবি, নির্মাতারা বানিয়েছেন ছবি। ছবি দেখে ভালোবাসতে শিখেছে কিনা কেউ সেটা হলপ করে বলা যেতেও পারে কারণ লোকে ছবি দেখতে ভালোবাসে। ভালোবাসার ছবি দেখতে সম্ভবত একটু বেশিই ভালোবাসে। ‘মনের মাঝে তুমি’ দেখতে ভালোবাসে এমন দর্শক এদেশে দারুণ মিলবে।
আয়েশী ভঙ্গিতে বলব নিজের দেখা আগাগোড়া ‘মনের মাঝে তুমি’-কে।
* শোরগোল বাঁধল যখন বেশ
‘মনের মাঝে তুমি’ মুক্তি পেল। তার আগের সময়টা আরো বর্ণিল ছিল। বর্ণিল বলতে এ ছবির ব্যাপক প্রচারণার কথা বলছি। চায়ের দোকানে, রাস্তায়, ভরা বাজারে, রেলস্টেশনে সবাই জানত এ সিনেমাটা আসতেছে। গানগুলো ততদিনে টিভিতে বারবার দেখানোর মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয় হয়েছে। সবগুলো গান একেবারে গ্রামের মজুর খাটা ছেলেটার মুখেও ছিল। এর পেছনে ছিল মাইকিং। রিকশায়, ভ্যানে ব্যাটারিচালিত মাইকে ‘হা ভাই, এসে গেছে ড্যাসিং রোমান্টিক রিয়াজ আর বিউটি কুইন পূর্ণিমার মনের মাঝে তুমি।’ মাইকিং-এর ফাঁকে কান ফাটানো শব্দে গানগুলো বাজাত।জোরেসোরে শোরগোল বেঁধে গেল ‘মনের মাঝে তুমি’ আসছে বলে।
*যুৎসই স্মার্ট রিমেক
মতিউর রহমান পানু খুবই সচেতন নির্মাতা।তাঁর কাজ সবসময় গোছালো ছিল। পরিকল্পনা না করে কখনো সিনেমা করতেন না। সে পরিকল্পনার মধ্যে বাণিজ্যিক চিন্তা যেমন থাকত পাশাপাশি দর্শক লুফে নেবে কোন কোন বৈশিষ্ট্য থেকে সেসবও ভাবতেন। সোজা কথায় মসলাদার ব্যাপারস্যাপার তার ভালো জানা ছিল। ‘মনের মাঝে তুমি’ তাঁর ড্রিম প্রজেক্ট ছিল। সাফল্যটা পাক্কা পেয়ে যান সাথে দর্শকের মনটা ফ্রি। তেলেগু ‘মানাসান্তে নুভে’-র রিমেক। উদয় কিরণ-রিমা জুটির অনবদ্য রোমান্টিক সিনেমা। গানগুলোও সে সিনেমা থেকে নেয়া। হিন্দি ‘জিনা সির্ফ মেরে লিয়ে’ একই সিনেমা। রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটির জনপ্রিয়তা যে সময়ে বেড়ে চলছিল ঠিক তখনই এ সিনেমা নতুন সূচনা করে।
* ভালোবাসার গল্পটা
গল্পটা একটা মিউজিক্যাল ঘড়ি থেকে।ঘড়িটা বেণুকে উপকার দিয়েছিল আনু। মানে রিয়াজকে দিয়েছিল পূর্ণিমা ছোটবেলাসূত্রে।তাদের হেসেখেলে বেড়ানো সময়টাতে ছেদ আসে পূর্ণিমার বাবার কারণে। তারা শপথ করেছিল তাদের নির্ধারিত জায়গায় তারা নিয়মিত আসবে। বড়বেলায় এসে পূর্ণিমা জায়গাটিতে এলেও তাকে পায় না কিন্তু রিয়াজ দেখে সেখানে ফুলের গোছা রাখা। নিজেদের জীবনে ব্যস্ততা থাকলেও একটা ফাংশনে রিয়াজকে চিনতে পারে পূর্ণিমা। তারপর রিয়াজকে পরিচয় লুকিয়ে ভালোবাসতে চায়। রিয়াজের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে যায় পূর্ণিমা। সেখানে ভালোবাসার অনেক দৃশ্য আছে যা মুগ্ধ করে। পূর্ণিমার বাবার কারণে আবারও বিচ্ছেদের সুর আসলে রিয়াজের বোনের বিয়েতে শেষটা বেদনার দিকে যেতে থাকে। রিয়াজ ছুরিতে আহত হয়। হাসপাতালে মিরাকলের ভেতর দিয়ে রিয়াজ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরে। অতঃপর হ্যাপি এন্ডিং।
* রোমান্সের সাতকাহন
ছবির ছোট ছোট দৃশ্যগুলো বড় বড় ইমেজ হয়ে দর্শককে বেঁধে ফেলে মন থেকে। চলুন দেখি –
১. ‘চুপি চুপি কিছু কথা’ গানের আগে পূর্ণিমার হাত চেপে ধরে রিয়াজ কারণ তাকে ‘ছোলার ডাল’ বলেছিল যেটা তাকে রাগানোর জন্য বাড়ির সবাই বলে। হাত না ছাড়লে পূর্ণিমা বলে-‘যদি হাত না ছাড়ো তবে সারাজীবনের জন্য এই হাত ধরে রাখতে হবে।’ পূর্ণিমা কথাটা মন থেকে বলেছিল।
২. ঐ গানের মাঝে শঙ্করকে যখন শাস্তি দিচ্ছিল ঠাকুরমা পূর্ণিমা রিয়াজের দিকে তাকিয়ে থাকে।ঐ এক্সপ্রেশনে রোমান্সের দাবি শতভাগ।
৩. রিয়াজ তার বোন রেখার জন্যে পূর্ণিমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। রেখা পূর্ণিমার লেখার ভক্ত। পূর্ণিমা ততদিনে জেনে গেছে রিয়াজই তার কৈশোর প্রেম। রিয়াজের ঘরে গেলে পানি খাওয়ার নাম করে রেখাকে বাইরে পাঠায়। তারপর পূর্ণিমা বিছানায় রাখা রিয়াজের শার্টটি নিয়ে নিজের গায়ে জড়িয়ে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে নেয় সে চিন্টুর (রিয়াজের) শরীরের গন্ধ মেখে নিচ্ছে পরম ভালোবাসায়। শার্টটি পরে বিছানায় উঠে নাচতে থাকে। এর মধ্যে রেখা পানি নিয়ে আসে। দ্বিতীয়বার আবার কফির নাম করে রেখাকে বাইরে পাঠায়। তারপর রিয়াজকে ছোটবেলায় উপহার দেয়া মিউজিক্যাল ঘড়িটা দেখে আনন্দে চোখের জল ফেলে পূর্ণিমা।
৪. ‘চুপি চুপি কিছু কথা’ গানটা চলার মাঝখানেই একটা সময় দেখা যাচ্ছে রিয়াজের মা, বাবা, ভাই, বোন, দাদী সবাই যে যেই ভাবে ছিল সেভাবেই স্থির দাঁড়িয়ে আছে। কেউ খাওয়ার ভঙ্গিতে, কেউ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তো আছেই, কেউ হাঁটার ভঙ্গিতে,কেউবা সেলাই করছিল ঠিক সেভাবেই আটকে আছে। আর ঠিক ঐ সময় রিয়াজ পূর্ণিমা স্থির থাকা সবার সামনে ঘরের মেঝেতে নাচছে। আর গানটির মধ্যেই ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে টাইটেল ট্র্যাক ‘প্রেমী ও প্রেমী’ গানের সুর। পুরো সিকোয়েন্সটি কিছুক্ষণের কিন্তু সেই কিছুক্ষণই ছিল গানের স্পেশালিটির জায়গার একটি।
৫. ঐ গানেই পূর্ণিমা চায়ের কাপ হাতে রিয়াজের কাছে যায়। চা খাওয়া হলে বাকি যে চাটুকু থাকে সেটা আড়ালে গিয়ে খেয়ে নেয় পূর্ণিমা। লুকিয়ে সে দৃশ্য দেখে ফেলে রিয়াজের বোন। রেখা বুঝে যায় এই মেয়েই সে যে তার দাদাকে খুঁজছে। গানের পরের অন্তরায় রেখা চুল ঠিক করে দিচ্ছিল পূর্ণিমার। পূর্ণিমার সেদিকে মন নেই। সে তখন আয়না হাতে পেছনে সোফায় বসে থাকা রিয়াজকে আয়নায় যতটুকু দেখা যায় ততটুকুই দেখছে। ঐ সময় পূর্ণিমার মুখের ভঙ্গি ছিল অপূর্ব।যেন সে পৃথিবীটা জয় করে ফেলেছে। রেখা দেখছিল ভালোবাসার এই অপূর্ব খেয়ালিপনা। কী যে রোমান্টিক সে দৃশ্য! ততক্ষণে বেজে যাচ্ছিল-‘কেন তোমার এত যে অন্য অন্য মন/জেগে থাকি রাতে একা লাগে যে শূন্য এ ভুবন।প্রেমি..
https://www.youtube.com/watch?v=rX4EFqTqEmE
* লজিক, ইমোশন, সাসপেন্স
রোমান্টিক ছবিতে লজিক্যাল বিষয়ও আনা যায়। অন্তত স্পেশালিটি থাকে কোনো না কোনো যার ভেতর থেকে সিনেমাটি অন্যমাত্রা পায়। উদাহরণটা আলফা বাংলা টিভির ফাংশনে পাওয়া যায়। ভালোবাসায় ছেলে না মেয়ে কে বেশি দায়িত্বশীল এ নিয়ে মুক্ত কথা হচ্ছিল। একটা ছেলে স্টেজে মেয়েদের নিয়ে কড়া মত দেয়াতে পূর্ণিমা রেগে যায়। পূর্ণিমা স্টেজে বলছে-‘মেয়েরা একবার যাকে ভালোবাসে তাকে সারাজীবন ভালোবেসে যায়। তোমরা ছেলেরা তা পারো না। আমরা মেয়েরা যেভাবে ছেলেদের বিশ্বাস করি ছেলেরা কি পারে সে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে! একটা মেয়ে যখন কাউকে ভালোবাসে তাকে পাক বা না পাক সারাজীবন তার জন্য অপেক্ষা করে, তাকে ভালোবেসে যায়। ছেলেরা কি পারে! আছে কি ছেলেদের সেই অনুভূতি..নেই..নেই।’ করতালি দেয় সবাই। এ লজিক মেয়েদের দর্শনে ঠিক। তাছাড়া ভালোবাসার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলতায় ছেলেমেয়ের কী ভূমিকা থাকা উচিত সেটার একটা মেসেজও দিয়ে দেয় পূর্ণিমার কথাগুলো।
পূর্ণিমা কাঁদতে কাঁদতে বাইরে চলে আসে। তখন রিয়াজের বন্ধু শ্রুতি তাকে সান্ত্বনা দেয় এবং রিয়াজ যে তার ছোটবেলার খেলার সাথীকেই ভালোবাসে তা জানায়। পূর্ণিমা কাঁদতে কাঁদতেই ছোট্ট হাসি দেয় যা চমৎকার। শ্রুতি জানায় যে ঘড়িটা তাকে রিয়াজ দিয়েছিল সেটা রিয়াজ ফেরত নিয়েছে। কারণ সেটা তার প্রেমের চিহ্ন। পূর্ণিমা দৌড়ে আসে হলরুমে। ততক্ষণে রিয়াজ বলছে-‘আমার মতে ছেলেও না মেয়েও না। ভালোবাসার স্থায়িত্ব নির্ভর করে দুজনের বিশ্বাসের ওপরে।’ রিয়াজের এ কথাটা ছেলেদের শুধু নয় এটা ছেলেমেয়ে উভয়েরই দর্শন হতে পারে এবং এটাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। কারণ দুজনের বোঝাপড়ার উপরই নির্ভর করে সম্পর্কের স্থায়িত্ব। দুজনের বিশ্বাসেই ভালোবাসার শতফুল ফোটে। সুগন্ধ ছড়ায়। রিয়াজকে বলা হয় তার ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে পেলে সে কি করবে।রিয়াজ জানায় সে তার পরিচয় দেবে না তাকে লুকিয়ে ভালোবাসবে। ঐ কথা থেকেই পূর্ণিমা আইডিয়াটা পেয়ে যায়। ইমোশনের কড়া একটা পার্ট ছিল সমুদ্রসৈকতে রিয়াজ যখন সব শেষ করে দেয় পূর্ণিমার বাবার কারসাজিতে। পূর্ণিমা ভুল বুঝে চলে যায় আর শঙ্কর রিয়াজের কান্না দেখে বলে-‘কাঁদ বেণু কাঁদ। ঐ সমুদ্রের ঢেউ যেমন তীরের বুকে আছড়ে পড়ে কাঁদছে তেমন করে কাঁদ।’সংলাপটা ওজনদার। ইমোশনের জায়গাটা সিনেমার লাস্ট সিকোয়েন্সে টাচি ছিল। বলতে গেলে টাচি সিকোয়েন্স অনেক ছিল তবে লাস্ট সিকোয়েন্সটি স্পেশাল। শঙ্কর রিয়াজের জ্ঞান ফেরার পরে পূর্ণিমাকে চিৎকার করে ডাকতে যায়। ঐসময় তার কান্না অসাধারণ ছিল আর মুখের সংলাপটিও-‘আনু, আমার বেণু বেঁচে আছে।আমি সত্যি কথা বলছি।’ একসাথে বেড়ে ওঠা রিয়াজের জন্য ভালোবাসাটা গভীর। পূর্ণিমাও রিয়াজকে তার ছোটবেলার পরিচিত অভ্যাস থেকে আপন করে নেয়। সঙ্গে ছিল মিউজিক্যাল ঘড়িটা।এর আগে সাসপেন্সের উপাদান ছিল যেগুলো মিউজিক্যাল ঘড়ির সাথে সম্পর্কিত। ঘড়িটা বেজে উঠেছিল শপিং মল ও বারে। দুইবারই অল্পের জন্য দেখা হয়নি রিয়াজের সাথে।
* কমেডি রিলিফ
কমেডি ছিল ভরপুর। বিপ্লব প্রসাদ ও শঙ্কর এ দুজন ছিল কমেডির পার্ট। বিপ্লব প্রসাদ রেখার বিয়ের জন্য তার ছাত্রজীবনের বান্ধবীর সাথে কথা বলে। সেটা দেখে সন্দেহ তৈরি করে শঙ্কর অতঃপর তুমুল কান্ড। একবার বার থেকে বের হয়ে বিপ্লব প্রসাদ মাতাল অবস্থায় বাইক চালায় শঙ্কর বাইকে ওঠেনি তার আগেই। শঙ্কর রাস্তায় একজন লোককে লোকেশন বলতে গিয়ে নাকে দ্বন্দ্ব হয় তারপর নাকে ঘুষি। ঐ অবস্থায় বাসায় এলে ঠাকুরমার হাতে আবার ব্যথা পায়।সংলাপগুলো জোস-
– আপনার নাকে কি হয়েছে?
– মশায় কামড়েছে।
– মশার কামড়ে এতবড় ব্যান্ডেজ?
– আমার এক বন্ধু মশাটাকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মেরেছে।
যীশুর বিয়ের সময় একটা দারুণ কমেডি ছিল এরকম-
যীশু : বিয়ে নিয়ে টেনশন হচ্ছে।
পূর্ণিমা : প্রথমবার তো তাই টেনশন হচ্ছে।পরেরবার ঠিক হয়ে যাবে।
আরো ছিল কমেডি।
* গানে গানে
গানগুলো ক্লাসিক সব। শৈশব থেকে যৌবন প্রেমের অধ্যায় পর্যন্ত গানগুলো সাজানো ছিল। শৈশবের ভালো লাগাকে ক্লাসিক করেছে ‘আকাশে বাতাসে’ গানটি। শৈশব প্রেমের বিচ্ছেদে ‘প্রাণ কাঁদে হায় আজ জানাতে বিদায়’ অনন্য গান। ‘আকাশছোঁয়া স্বপ্ন আশা’ বন্ধুর সাথে রোমান্সের আলাদা নতুন প্রেজেন্টেশন। বসন্তের অনুষ্ঠানে কারো গান না জানার কারণে রিয়াজকে নিয়ে মজা করে তার বন্ধু শ্রুতি। সেখানে গাওয়া ‘জীবনে কত ঋতু আসে যায়’ বসন্তের চমৎকার গান। ‘মনের মাঝে তুমি’ স্যাড ভার্সনের এবং রোমান্টিক ভার্সনের দুটি গানই জবরদস্ত। কুমার শানু, উদিত নারায়ণ, সাধনা সারগম এ তিনজনের কণ্ঠের জাদুতে গানগুলো অলওভার শ্রুতিমধুর।
https://www.youtube.com/watch?v=n407E1vfRlU
* অভিনয়
অভিনয়ে সব আর্টিস্টই স্বাভাবিক সেরাটা দিয়েছে। অবশ্যই সবার আগে রিয়াজ-পূর্ণিমা থাকবে লাইমলাইটে। তাদের জুটি আদর্শ রোমান্টিক অভিনয়টা তুলে ধরেছে। যীশুর অভিনয় প্রাণ্জল ছিল। সাপোর্টিং রোলে যীশু আর শ্রুতি নামের মেয়েটি দুজনই সাপোর্ট করেছে রিয়াজ-পূর্ণিমাকে। যীশু সবসময় সাহস দিয়েছে পূর্ণিমাকে। রিয়াজকে সে ফিরে পাবে এ মনোবল দিয়েছে। অন্যদিকে শ্রুতিও রিয়াজের জন্য সানন্দা পত্রিকায় প্রকাশিত পূর্ণিমার লেখা ‘মনের মাঝে তুমি’ সিরিয়ালের খবরটা জানায়। অথচ রিয়াজ কোনোদিনও ঐ সিরিয়ালের খবর রাখেনি। শ্রুতিকে রিয়াজ মিউজিক্যাল ঘড়িটা উপহার দিয়েছিল মাতালের ঘোরে কিন্তু পরে ফেরত নেয়। ঘড়িটা দেবার সময় শ্রুতিও বেশ রোমান্টিক মুডে থাকে কারণে সে মনে করে রিয়াজ তাকে পছন্দ করে। তাছাড়া শুরুর দিকে দুজনের খুনসুটিগুলো দারুণ ছিল। তার রোলটি আকর্ষণীয় ছিল। রিয়াজের বাবার চরিত্রে বিপ্লব প্রসাদ, ভাই শঙ্কর, পূর্ণিমার বাবার চরিত্রে দুলাল লাহিড়ী সবাই অসাধারণ পারফর্ম করেছে। বাকি চরিত্রগুলোও তাদের মতো সেরাটা দিয়েছে।
* পুনশ্চ
‘মনের মাঝে তুমি’ টোটাল প্যাকেজ রোমান্টিক ড্রামা। স্মার্ট রিমেক। দিন গত হয়, সময় পাল্টায়, রুচি বা সিলেকশন টেস্ট পাল্টায় দর্শকের কিন্তু যে ছবিগুলো ভালোবাসার জায়গাটা দখল করে তার মধ্যে ‘মনের মাঝে তুমি’ অন্যতম। সব ভালোবাসার জুটি টিকে যাক চিরতরে। সবাই ভালোবাসা পায় না, যারা পায় বা পেয়েছে, যারা জুটি গড়েছে তারা অমর হোক। ভালোবাসার ছবির জনপ্রিয়তায় এ ছবি হয়ে থাকবে অলটাইম ব্লকবাস্টার।