মান্নার কৃতাঞ্জলির ‘জ্যাম’ : মহরতে কে কী বললেন
সোমবার ঢাকা ক্লাবে মান্নার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্র প্রযোজিত ‘জ্যাম’ সিনেমার মহরত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রযোজক শেলী মান্না, পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, ‘শেলী মান্না তার প্রযোজনায় যেই ছবিটি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন সেই ছবিটির নাম ‘জ্যাম’। এই শব্দটি আমাদের অনেক কষ্ট দেয়। তবে আমি আমার জীবনে কোনোদিন জ্যামে পড়িনি। কারণ জ্যামটা মাথায় রেখেই আমি ঘর থেকে বের হই। আহমেদ জামান চৌধুরী গল্প লিখেছেন, পান্থ শাহরিয়ার ছবিটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন, শেলী মান্না প্রযোজনা করছেন। তাদের সবাইকে আমি চিনি। সবাইকে একটা কথা মনে রাখতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ, পারিবারিক, রাজনৈতিক জীবন পুরোটাই আমরা জ্যামের মধ্যে আবদ্ধ।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মান্না অনেক জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। কিন্তু মধ্যগগন থেকে তিনি ঝরে পড়েছেন। আজকের দিনে তাঁর মতো অভিনেতার দরকার ছিল। সিনেমা হতে পারে মানুষের জীবন গঠনের অন্যতম হাতিয়ার। “জ্যাম” যেন তেমনই একটি ছবি হয়, সেই কামনা থাকল।’
সুচন্দা বলেন, ‘মান্না জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন। অনেক দিন পর তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আবার ছবি তৈরি হচ্ছে৷ এই ক্রান্তিকালে এমন উদ্যোগ খুব প্রশংসনীয়। এই ছবি আর মান্নার পরিবারের জন্য আমার অনেক শুভকামনা।’
পূর্ণিমা বলেন, ‘চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকার কারণ ভালো গল্প পাচ্ছিলাম না। এছাড়া আমার সন্তান ছোট ছিল। এখন মনে হচ্ছে আমি চলচ্চিত্রের জন্য সময় দিতে পারবো। চলচ্চিত্রের জন্য ফিট হওয়ার দরকার ছিল। এখন সব কিছু পারফেক্ট মনে হয়েছে বলেই ফিরেছি। এখন তো চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ কম। কারণ ভালো গল্পের ছবি কম মেলে। আমি চলচ্চিত্রে নিয়মিত হবো কি-না সেটাও নির্ভর করছে সময়ের ওপর। যদি ভালো গল্পের ছবি পাই। ভালো নির্মাতার ছবি পাই। তাহলে নিয়মিত হবো।’
কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, ‘আজকে এই রকম একটি দিনে আপনাদের সঙ্গে দেখা হওয়াটা আমার জন্য কিছুটা আনন্দের আবার অনেকটাই ব্যথার। কারণ মান্না ভাই অনেক বড় একটা জায়গা জুড়ে আছেন আমাদের জীবনে এবং সবসময় থাকবেন। মান্না ভাই একজন সত্যিকারের তারকা ও অনেক বড়মাপের মানুষ। কিন্তু তিনি আজ নেই, এই জন্য ব্যথাটাই আজকে বেশি।’
মান্নার স্ত্রীকে নিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, ‘শেলী (মান্নার স্ত্রী) আপাকে আমি আমার দিদি ভাবি। আমি একজন পজেটিভ মনের মানুষ। আমরা সবাই ভিশন নিয়ে বাঁচি। স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাই। শেলী আপার মধ্যে দেখেছি মনের অনেক জোর তার। অনেক বড় উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তার পাশের মানুষরা তার পাশেই থাকবেন। আমার ছোঁয়া দিয়ে তার স্বপ্নের সঙ্গে কিছুটাও যদি সামিল হতে পারি। সেই প্রচেষ্টা থাকবে।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি মনে করি আমি দুই দেশেরই। কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রী কাদের ভাইয়ের পাশে বসে ছিলাম। উনি আমাদের দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। এটা যেন আরও সুদৃঢ় হয়। আমি চাইবো আমাদের আসা যাওয়া নিয়ে এতো সমস্যা, এগুলো যেন না থাকে। বাংলাদেশে আমরা অনেকেই অনেক কাজ করেছি। এখান থেকেও অনেকে কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন। আমাদের যাওয়া আাসার এই সমস্যা দূর হলে আমরা এক হয়ে যেতে পারি। ‘জ্যাম’ সিনেমার অনুষ্ঠান থেকে একটা একটা বার্তা দিতে চাইবো। আমরা যেন মনের জ্যাম দূর করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে শেলী মান্না বলেন, ‘আমাদের এই অনুষ্ঠানে যাঁরা এসেছেন, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ৷ আর বাংলাদেশ সরকারের দুজন মন্ত্রী এসে আমাদের এই অনুষ্ঠান আরও আলোকিত করেছেন। সুচন্দার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রী এখানে এসে আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, আমাদের জন্য তা পরম পাওয়া। আশা করছি “জ্যাম” ছবিটি দর্শকদের পছন্দ হবে।’
মহরতে আরও ছিলেন সোহানূর রহমান সোহান, খালেদা আক্তার কল্পনা, ফেরদৌস প্রমুখ।
দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকা মান্নার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘কৃতাঞ্জলি চলচ্চিত্র’ চালু করছেন মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ সিনেমা ছিল ‘পিতা মাতার আমানত’।