মান্না ও তার পাঁচ সিনেমা
ব্যক্তিগতভাবে উনি আমার বিশেষ পছন্দের না, তবে আশির দশকে নতুন মুখের সন্ধানের সেরা আবিষ্কার ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় নায়ক মান্না। শুরুতেই একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা না পেলেও বেশ কয়েক বছর পর ‘কাশেম মালার প্রেম’-এ চম্পার বিপরীতে একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে পান।
মূলত কাজী হায়াতের সঙ্গে জুটি বাঁধাটাই উনার ক্যারিয়ারের মাইলফলক। অভিনয় জীবনে অসংখ্য ছবিতে তিনি অভিনয় করেন, তবে কিছু ছবি নির্বাচনে ভুল করেন। অশ্লীলতার জোয়ার তিনি নিজের গায়েও লাগান, যদিও পরে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে উনি সোচ্চার ছিলেন।
অসংখ্য ছবির এই ব্যবসাসফল নায়ক প্রযোজক হিসেবেও সফল ছিলেন। প্রযোজক হয়ে মৌসুমী ও শাবনূরকে উনিই প্রথম একফ্রেমে আনেন। অকাল প্রয়াণ না হলে আরো ছবি দর্শকদের উপহার দিতেন। একবার জাতীয় পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পান। আজ এই জনপ্রিয় নায়কের জন্মবার্ষিকীকে শ্রদ্ধা রইল।
উনার অসংখ্য ছবির মধ্যে তুলনামূলক সেরা পাঁচটি ছবি নিয়ে আলোচনা করা হল—
১. আম্মাজান (১৯৯৯) : মান্নার জীবনের সেরা ছবি কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’। ছবিটিতে তিনি একজন মাতৃভক্ত ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবিটি দারুন ব্যবসাসফল হয়।আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে ‘আম্মাজান’ গানটি এখনো জনপ্রিয়। উনার অভিনয় দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। ছবিটি সেরা চিত্রনাট্যকারের জাতীয় পুরস্কার পায়।
২. দাঙ্গা (১৯৯১) : কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ছবিতে একজন মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেন। অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে বেশ মানিয়ে যান। এমনকি বয়সে বড় সুচরিতার সাথেও মানিয়ে যান। ছবিটি আর্ন্তজাতিক ভাবে পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি জাতীয় পুরস্কারও লাভ করে।
৩. উত্তরের খেপ (২০০০) : শাহজাহান চৌধুরী পরিচালিত ‘উত্তরের খেপ’ চলচ্চিত্রে একজন মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটিতে উনার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। চম্পা জাতীয় পুরস্কার পেলেও মান্না পুরস্কৃত হন না।
৪. বীর সৈনিক (২০০৩) : দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘বীর সৈনিক’ চলচ্চিত্রে দ্বৈত ভূমিকায় অভিনয় করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা বাবা, অন্যজন হতাশগ্রস্ত বেকার সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন মান্না।
৫. লুটতরাজ (১৯৯৭) : মান্না প্রযোজিত প্রথম সিনেমা ‘লুটতরাজ’ পরিচালনা করেন কাজী হায়াৎ। উনি প্রথমবারের মতো ঐ সময়ের জনপ্রিয় দুই নায়িকা দিতি, মৌসুমীকে একসাথে অভিনয় করান। গান জনপ্রিয় হওয়া ছাড়াও ছবিটি ব্যবসাসফল হয়।