মিসড কল মুভির যত ভুল
মিসড কল একটি মোটামুটি মানের রোমান্টিক থ্রিলার মুভি। সাফি উদ্দিন সাফি পরিচালিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন বাপ্পী, মুগ্ধতা, শুদ্ধতা, বাপ্পারাজ, মিশা সওদাগর প্রমুখ। মিশা সওদাগর এই ছবিতে হিজরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মিসড কল ছবিতে ছোট-বড় ১৫টি ভুল আমাদের চোখে পড়েছে। চলুন দেখে নিই।
১. সিনেমার শুরুতেই প্রোডাকশন হাউজ এ এইচ আই মুভিজ এর নাম ভুল করে “এ এইচ আই মুভিস” লেখা হয়েছে
২. বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে আয়োজিত ভ্রাম্যমাণ কনসার্টের গাড়ির ব্যানারে দুর্গত বানান ভুল করে “দূর্গত” লেখা হয়েছে
৩. মানলাম নায়ক বাপ্পী একজন বড় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সে এমন একটা সফটওয়্যার আবিষ্কার করেছে যার মাধ্যমে তার মোবাইলে কোন বন্ধু মিসড কল দিলে সে জিপিএসের মাধ্যমে তার বন্ধুর লোকেশন বের করে ফেলতে পারেন। জিপিএসে শুধু লোকেশন ইন্ডিকেট করলেও মানা যেত, তার মোবাইলে সেই বন্ধুর লাইভ ভিডিও পর্যন্ত চলে আসে। আমার কথা হলো বাপ্পী কি সারাদেশের সব জায়গায় ক্যামেরা সেট করে রেখেছে ? আইনস্টাইন বেঁচে থাকলে এই দৃশ্য দেখলে মনের আনন্দে আমার মরে যেতেন।
৪. বাপ্পী ও তার বন্ধুরা বিআরটিসি’র একটা দোতলা বাস বসে ছিলেন। বাপ্পী নামার সময় আরামে বাসের পেছনের গেট দিয়ে নেমে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে কেন এত ঘুরে সামনের গেট দিয়ে নামলেন তা নিয়ে নাসা’র বিজ্ঞানীরা এখনও গবেষণা করছেন
৫. নায়িকা আরশি’র বান্ধবীর বিয়েতে বর একাই একটা গাড়িতে করে আসলেন, তার পেছনে কয়েকজন বরপক্ষ হেঁটেই আসলেন !!! এমন লো বাজেটের বিয়ে থুক্কু বিয়ের শুটিং আমি জীবনেও খাইনি
৬. আরশি বাপ্পারাজের চেহারা দেখাঁ মাত্রই কারেন্ট চলে গেলে চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল। অথচ বিয়ে বাড়ির টিপলাইটগুলো ঠিকই জ্বলছিল। আজব দেশের আজব লোডশেডিং মাইরি
৭. বাপ্পী যখন ওর বোনকে বাঁচানোর জন্য গুন্ডাদের সাথে মারামারি করছিল, তখন ওর বোন কাজী অফিসের বিজ্ঞাপন দেওয়া একটা দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ করে দেখা গেল পিছনের দেয়ালের ডিজাইন অন্যরকম হয়ে গেছে, কোন লেখাটেখা নেই, আবার পরের শটেই সব আগের মত হয়ে গেল। দেয়ালটিতে ভূত ছিল নাকি দেয়ালটা গিরগিটি ছিল সেটা অবশ্য জানা যায়নি
৮. আগেই বলেছি বাপ্পী তার “মিসড কল সফটওয়্যার” দিয়ে সবার লোকেশন বের করতে পারে। তাহলে নায়িকার নাম্বার দিয়ে তাকে খুঁজে বের করতে পারল না কেন ? নায়িকাও তো ওকে অনেক মিসড কল দিয়েছিল। নায়িকা বলে কি আরশি মানুষ না
৯. বাপ্পীর হোন্ডা যখন মিশা সওদাগরের গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়, বাপ্পী উড়ে গিয়ে দূরে পড়ে যায়। অথচ পরের শটেই দেখা গেল মিশার গাড়ি থেকে বাপ্পীর হোন্ডা অনেক দূরে স্থির দাঁড়িয়ে আছে। ঐটা হোন্ডা ছিল না ঘোড়া?
১০. মারামারির সময় বাপ্পীর গাল কেটে রক্ত ঝরে। মারামারি শেষে বাপ্পী হাত দিয়ে গালের রক্ত মুছে ফেলে। অথচ গালে কাঁটার কোন চিহ্ন নেই, তাহলে রক্ত বের হলো কোথা থেকে ? (আমার গাল থেকে, কিছু রক্ত, চুইয়া চুইয়া পড়ে )
১১. সাইকো বাপ্পারাজ যার মুখ থেকেই “পাগল” শব্দটি শুনে, তাকেই মেরে ফেলে। অথচ “পাগলিনীর পাগলা লাগে না” গানে সে নিজেসহ সবাই একাধিকবার “পাগলী-পাগলা” বললেও সে কাউকেই মারল না, এমনকি খুশি হয়ে সবার সাথে নাচল। পাবনা মেন্টাল হাসপাতালেও এমন আজব পাগল নেই
১২. যেকোন হাসপাতালে চিকিৎসার সুবিধার স্বার্থে অপারেশনের রোগীকে সেখানকার এপ্রন বা ড্রেস পড়ানো হয়। অথচ নায়িকা পায়ে গুলি খেয়ে অপারেশন থিয়েটারে ভর্তি হলেও তাকে সেই জিন্সের প্যান্ট পড়া অবস্থাতেই অপারেশন করা হয় এবং অপারেশন শেষে ঐ প্যান্ট পড়িয়েই শুইয়ে রাখা হয়। ঐটা অপারেশনের থিয়েটার ছিল নাকি মঞ্চ-নাটকের সেটা জানা যায়নি
১৩. বাপ্পীকে হিজড়া বানানোর জন্য মিশা তাকে একটা টেবিলের পেছনে চেয়ারে বেঁধে রাখে। বাপ্পীর লাথি খেয়ে টেবিলটা সোজা সামনে পড়ে যায়। পরের শটেই দেখা গেল টেবিলটা দূরে সরে গিয়ে বামে পড়ে আছে। আসলে হিজড়া হওয়ার ভয়ে টেবিলটা আপনআপনি সরে গিয়েছিল বলে আমাদের অবিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে
১৪. বাপ্পীকে যে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল বাপ্পী রেগে গিয়ে দাঁড়াতেই সে চেয়ার ভেঙ্গে সাদা পাউডার বের হতে শুরু করল। চেয়ারটি কাঠ দিয়ে বানানো হয়েছিল না চক দিয়ে তা নিয়ে সরকারী ও বিরোধী দলের মধ্যে তুমুল মতবিরোধ আছে
১৫. যে জায়গায় বাপ্পী মিশা সওদাগরের হিজড়া বাহিনীর সাথে মারামারি করছিল সেখানে সব জায়গায় শক্ত মাটি ছিল। অথচ বাপ্পীর মার খেয়ে যখনই কোন হিজড়া উড়ে যাচ্ছিল পড়ার সময় অলৌকিকভাবে নরম বালুর উপর পড়ছিল।
(বুঝচি, সবই সরকারের চক্রান্ত, এর আগে বালুর ট্রাক দিয়া বাড়ির রাস্তা আটকায় দিচিলো, আর এহন হিজড়াগো ব্যাতা পাওয়া আটকাইতাচে : ডিপজল)