Select Page

মুভি রিভিউ: চার সতীনের ঘর

মুভি রিভিউ: চার সতীনের ঘর

ছুটির অবসরে দেখে ফেললাম বাংলা মুভি ‘চার সতীনের ঘর’ হাজারো জমকালো মুভির মাঝে এই মুভি হয়তো কিছুই না। তবু দেশীয় মুভি বলে কথা। বিনোদন প্রিয় মানুষ হিসেবে আমার প্রধান বিনোদন ঘুরে বেড়ানো, বই পড়া আর মুভি দেখা। বাইরে কুত্তা-বিলাই বৃস্টি থাকায় মুভি দেখেই আজকের বিনোদন সম্পূর্ণ করা আর কি।

এবার আসা যাক মুভি বিষয়ে। যেহেতু টিভিতে দেখা তাই অনেক ধৈর্য্য নিয়ে দেখতে হয়েছে। বিজ্ঞাপনের দোষ দেই না আমি। দেশী-বিদেশী যেকোন টিভিতে সেটা মোটামুটি কম বেশি বিদ্যমান। মুভি দেখার মাঝে কয়েকবার সংবাদ আর শিরোনামের হ্যাপায় পরতে হয়েছে। দেশের দায়িত্ববান নাগরিক ( জানি না আমাদের নেতা-নেত্রীরা নিজেদেরকেও নাগরিক মনে করেন নাকি শুধুই নেতা মনে করেন) হিসেবে দেশের খবরা-খবর জানা সবার জরুরী, তবে একই জিনিস চৌদ্দবার নয়। আগে বিটিভিতে রাত আটটার সংবাদ দেখতাম আর সকালে রেডিওতে সংবাদ শুনতাম। তখনকার সময়ে বেশ ভাল ছিলাম, টেনশন কম ছিল অনেক।

কথায় আছে সস্তার তিন অবস্থা। টিভিতে বাংলা মুভি দেখতে নিয়ে বার বার বিষয়টা স্মরনীয় হয়ে ওঠে। মুভির প্রিন্ট মাশাল্লাহ। মনে হয় হলপ্রিন্ট দেখছি। হিন্দি সিনেমা দেখতে এই সমস্যায় খুব একটা পরতে হয় না।

মুভিতে গ্রাম বাংলার বেশ বড় একটি অসামঞ্জস্যতার চিত্র দারুণভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক নার্গিস আক্তার। গ্রামের প্রভাবশালী পয়সাওয়ালা খান সাহেব তার বংস রক্ষার জন্য একেরপর এক চারটি বিবি গ্রহণ করেছেন। ১ম বিবাহ তিনি ভালভাবেই করেছিলেন। কিন্তু সন্তান না হওয়ায় তাকে পরবর্তি স্টেপ নিতে হয়। বয়স যেহেতু ৫০ অতিক্রম করেছেন তাই তার সাথে যে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হওয়ার কথা না। তাই তিনি বেছে নিয়েছেন একদম গরীব ঘরের মেয়েদেরকে। গ্রামে বড় হওয়ায় এইসব বিষয় অনেকটা আমার নিজের চোখে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে বেশ। শুধু পয়সাওয়ালারা নন। বংস রক্ষার তাগিদে অনেক দিনমজুরও একের অধিক সাদী করিয়া থাকেন। চারটা ক্রস করেন না সুন্নত রক্ষার তাগিদে।

এখন চিকিৎসায় অনেক উন্নতি হলেও পুরুষশাসিত সমাজে এখনও অনেকে নারীকেই দোষীজ্ঞান করে বংস রক্ষাকল্পে দ্বিতীয় বিবাহকেই উপযুক্ত পদক্ষেপ হিসেবে নিয়ে থাকেন। এহেন বাস্তবতাকে চলচিত্রে রুপদানকারী পরিচালক অবশ্যই সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। বিবিদের উপর প্রভাব খাটানো খান মঞ্জিলের খান সাহেব চরিত্রে বাংলার একসময়কার এবং এখনও হ্যান্ডসাম আলমগীর দারুণ অভিনয় করেছেন। আর সতীনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে ববিতা, দিতি, ময়ুরী এবং শাবনুর। প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ চরিত্রে খুব ভালো অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে সতীনের সংসারে ছোট বউয়ের তেজ বেশী থাকে যা শাবনুরের অভিনয়ে বেশ সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। আর একজন পঞ্চাশোর্ধ পুরুষের ক্ষেত্রে বউদের সব রকম চাহিদা পুরণ করা বেশ কঠিনই বটে। তাই স্ত্রীদের কিছুটা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পরা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

চলচিত্রকে যদি সমাজের দর্পণ বলা হয় তাহলে এক্ষেত্রে এই মুভিটাকে একটা সফল উপস্থাপন বলা যেতে পারে।

যাই হোক দেশকে ভালবাসুন, দেশের মুভি দেখুন।।।

 


২ Comments

  1. robiulrana

    নার্গিস আক্তার এর সব কাজই অসাধারণ। চার সতীনের ঘর এ সবার অভিনয় বিশেষ করে শাবনূর ছিল একেবারেই প্রাণবন্ত। এর পর এইডস নিয়ে ‘মেঘের কোলে রোদ’ ছবিটাও অত্যন্ত সুন্দর। বেশিরভাগ পুরুষ পরিচালকের হাতই পাকা নয় নার্গিস আক্তারের মত।

    • আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী

      মেঘের কোলে রোদ দেখা হয়নি। দেখার ইচ্ছে রইল।
      আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Leave a reply