যে কারণে ভারতীয় সিনেমায় অভিনয় করেননি শবনম
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক বৈরিতা সত্ত্বেও সাংস্কৃতিক বিনিময় একদম প্রথম থেকেই চালু আছে। বিশেষ করে বলিউডের গান ও অভিনয়ে পাকিস্তানি তারকাদের কদর নতুন নয়। তবে শবনম মনে করতেন, অভিনেতাদের কিছুটা হলে দমিয়ে রাখা হতো।
সমসাময়িক অভিনেতাদের অনেকেই হিন্দি সিনেমার প্রস্তাব গ্রহণ করলেও আমলে নেননি স্বাধীনতার আগে ঢাকা থেকে করাচিতে থিতু হওয়া শবনম। পাকিস্তানে তুমুল জনপ্রিয়তার মাঝে হিন্দিতে গুরুত্বহীন চরিত্র নিয়ে তার আগ্রহ ছিল না। তার মতে, বলিউডে ডাকা হলেও পাকিস্তান শিল্পীদের অভিনীত সিনেমা মুক্তির পর চুক্তিবদ্ধ চিত্রনাট্যের সঙ্গে মিল থাকত না।
সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকার ঈদসংখ্যায় অভিনেত্রী ফ্লোরা সরকারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকার এ তথ্য দেন শবনম। সেখানে লেখা হয়, ‘কখনো ভারতীয় ছবির অফার ছিল কিনা জানতে চাইলে শবনম জানালেন, একটা ছবির অফার তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। কারণ জানতে চাইলে শবনম জানালেন, ভারতীয়রা অন্য দেশের অভিনয় শিল্পীদের দিয়ে অভিনয় করালেও সিনেমার গল্পে শেষ পর্যন্ত তাদের দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীর প্রাধান্য থাকে বেশি। কারণ এর আগে জেবা- মোহাম্মদ আলী ভারতীয় ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, শুটিংও হয়েছিল বিস্তর, কিন্তু সিনেমা রিলিজ পাওয়ার পর তারা দেখলেন, গল্পে তাদের প্রাধান্য নেই বললেই চলে।’
এদিকে আরেক বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান মুম্বাইয়ের একটি সিনেমায় দ্বিতীয় ভিলেনের চরিত্র অভিনয় করতে রাজি হননি বলে চিত্রালীর এক প্রতিবেদন থেকে জানানো হয়। সেখানে লেখা হয়, “শক্তিমান অভিনেতা এটি এম শামসুজ্জামান বোম্বের প্রমোদ চক্রবর্তীর ছবিতে অভিনয়ের আমন্তণ ফিরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি এটিএম শামসুজ্জামান যখন ‘অবিচার’ ছবির শুটিংয়ে বোম্বে গিয়েছিলেন প্রমোদ চক্রবর্তী তার নির্মীয়মাণ ‘শত্রু’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যে তাকে অফার দিয়েছিলেন। কিন্তু সে অফার গ্রহণ করতে পারেননি এটিএম। না সিডিউল সমস্যাজনিত কারণে ময়, জানা গেছে, চরিত্র পছন্দ হয়নি বলেই এটিএম প্রমোদ চক্রবর্তীর প্রস্তাবে রাজী হতে পারেননি। ছবিতে প্রমোদ চক্রবর্তী এটিএম-কে যে চরিরটিতে অভিনয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তা ছিল দ্বিতীয় খল চরিত্রের। প্রধান খল চরিত্রটিতে তিনি আগেই বোম্বের প্রেম চোপরাকে চুত্তিবদ্ধ করেছিলেন। এটিএমর নিকটজন সূত্রে জানা গেছে এটিএম আপত্তি তুলেছেন এখানেই। নিজের দেশে প্রধান খল চরিত্রের অভিনেতা বিদেশের ছবিতে দ্বিতীয় খল- অভিনেতা তিনি কিছুতে হতে পারেন না- প্রমোদ চক্রবর্তী তিনি একথাও জানিয়ে দিয়েছেন।” পরে অবশ্য এটিএম শামসুজ্জামান জানান, দেশের সিনেমা হলে তিনি হয়তো না করতেন না। কিন্তু বোম্বেতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি।
অবশ্য মিঠুন চক্রবর্তী ও রোজিনা অভিনীত ‘অবিচার’ ছিল যৌথ প্রযোজনার সিনেমা। যার প্রধান ভিলেন ছিলেন উৎপল দত্ত। পরিচালক হিসেবে সৈয়দ হাসান ইমাম ও শক্তি সামন্তের নাম থাকলেও যার শুটিং ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রামাণ্য পেয়েছেন ভারতীয়রা। মজার বিষয় হলো, প্রমোদ চক্রবর্তীর ‘শত্রু’ যৌথ প্রযোজনার সিনেমা হিসেবে বাংলাদেশে মুক্তির ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়ে। পরে ‘বিরোধ’ নামে মুক্তি পায়। এ ছবিতে শাবানা ছাড়া বাংলাদেশীদের উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা ছিল না।