রুবাইয়াত হোসেন: দ্বিতীয়বার কোনো নারী পরিচালক গ্রহণ করলেন জাতীয় পুরস্কার
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি পেরিয়েছে পাঁচ দশক। আর ১৯৭৫ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ দীর্ঘ সময়ে মাত্র দুজন নারী নির্মাতা পেয়েছেন সেরার পুরস্কার। অবশ্য এর অন্যতম কারণ হলো, ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে নারী নির্মাতার হিস্যা এক শতাংশেরও কম। হাতে গুনলে ১০ এর ঘরও পার হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দেয়া হয়েছে ২০২২ সালের চলচ্চিত্রের পুরস্কার। এতে শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন রুবাইয়াত হোসেন। নিজের তৃতীয় সিনেমা ‘শিমু’র জন্য এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। ৪৮ বছরের ইতিহাসে প্রতিবারই এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে কিন্তু একজন নারী হিসেবে তিনি দ্বিতীয়জন, যিনি এই পুরস্কার পাচ্ছেন।
শিমু আরো কয়েকটি বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী রিকিতা নন্দিনীর শিমু (যুগ্মভাবে), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সুজন মাহমুদ এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জার জন্য তানসিনা শাওন পুরস্কার পেয়েছে। অবশ্য রুবাইয়াতের ঝুলিতে আগে থেকেই জাতীয় পুরস্কার রয়েছে। ২০১৬ সালের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ সিনেমার জন্য পান শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতার পুরস্কার। শ্রেষ্ঠ রূপসজ্জা বিভাগেও পুরস্কার জেতে ছবিটি।
এর আগে ২০০৫ সালে এই ক্যাটাগরিতে পেয়েছিলেন আরেক নারী নির্মাতা কোহিনুর আক্তার সুচন্দা। ওই বছর তিনি ‘হাজার বছর ধরে’ চলচ্চিত্রের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। এছাড়া পেয়েছে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক, শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক ও শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশকের পুরস্কার। এর ১৭ বছরের বিরতি দিয়ে কোনো নারী পেলেন এই পুরস্কার।
২০০১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে নারগিস আক্তারের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মেঘলা আকাশ’ ছয়টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার পান। পরবর্তী সময়ে তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘যৈবতী কন্যার মন’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায়।
এছাড়া ২০০৩ সালের জাতীয় পুরস্কারে মৌসুমী পরিচালিত ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ তিনটি বিভাগে পুরস্কার পায়। এগুলো হলো শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী, সেরা গীতিকার ও সেরা গায়ক।
সামিয়া জামানের ‘রানী কুঠির বাকি ইতিহাস’ চলচ্চিত্রটিও জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। আর শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘উত্তরের সুর’ ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ চারটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। এ ছাড়া নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্ব সুন্দরী’ আটটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।
ঢাকার প্রথম নারী পরিচালক রেবেকা, তার ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে। তবে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নারী নির্মতা হলেন রোজী আফসারী। তার ‘আশা নিরাশা’ মুক্তি পায় ১৯৮৬ সালে।