Select Page

রোমান্টিকতা ও টুইস্ট মিলে দুর্দান্ত ‘কাঠবিড়ালী’

রোমান্টিকতা ও টুইস্ট মিলে দুর্দান্ত ‘কাঠবিড়ালী’

কাঠবিড়ালী 
ধরন: রোম্যান্টিক সাসপেন্স ড্রামা
গল্প ও পরিচালনা: নিয়ামুল মুক্তা
চিত্রনাট্য: তাসনিমুল হাসান তাজ
প্রযোজনা: চিলেকোঠা ফিল্মস
অভিনয়: অর্চিতা স্পর্শিয়া (কাজল), আসাদুজ্জামান আবীর (হাসু), সাইদ জামান শাওন (আনিস), শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব (আসগর), শিল্পী সরকার অপু (কাজলের মা), হিন্দোল রায় (চেয়ারম্যান), একে আজাদ সেতু, তানজিনা রহমান তাসনিম প্রমুখ।
শুভমুক্তি: ১৭ জানুয়ারি

নামকরণ: এখানে “কাঠবিড়ালী” নামটি মূলত রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কাঠবিড়ালী যেমন বনে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে, মাঝেমধ্যে দেখতে পাওয়া গেলেও সহজে ধরা যায় না… ঠিক তেমনি এ ছবির গল্প স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়ে কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা শুরুতে ধরতে পারবেন না। সরাসরি কাঠবিড়ালীর রেফারেন্স না থাকলেও গল্পের বিষয়বস্তুর সাথে ঐ প্রাণির স্বভাবগত মিল থাকায় নামটি রাখা হয়েছে। নামটি সুন্দর তো বটেই, সেইসাথে পুরো গল্পের অর্থপূর্ণ ভাব প্রকাশ পাওয়ায় নির্মাতা কিংবা সিনেমাসংশ্লিষ্টদের বেশ বিচক্ষণতার পরিচয় পাওয়া গেছে।

কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ: গল্পের মূল ভাবনা নির্মাতা নিয়ামুল মুক্তার নিজেরই। এটি এমন একটি গল্প যা শুধুমাত্র গ্রাম্য জীবনে না, আজকালকার শহুরে জীবনেও এমনটা দেখা যায়। সময়ের ব্যস্ততায় আজ আমাদের মধ্যে থাকা আবেগ ধীরেধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে। যেকোনো দূর্ঘটনা হলে কিংবা প্রিয়জন হারিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলে আমরা এখন খুব কম সময়েই সেই দুঃখ ভুলে অন্য কাজে মনোনিবেশ করতে পারছি, অথচ আগে এমনটা হলে আমরা সেই শোক থেকে অনেকদিন বেরই হতে পারতাম না!

যেকোনো কিছুর অভাববোধ করলে কিংবা না থাকলে আগে আমরা সেটার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতাম, আর এখন আমরা সেই অভাব দূর করার বিকল্প পন্থা খুঁজি। বিকল্প খোঁজা মোটেও দোষের না, যদি সংসারের দৃঢ় বন্ধন বজায় থাকে। তবে যদি বিশ্বাস ভঙ্গ হয়ে যায়, আস্থা কিংবা ভরসা কমে যায়.. তবে সেই বিকল্প পদ্ধতি খোঁজা বাদ দিয়ে অভাবের সাথে আপোষ করে নেওয়াই শ্রেয়। ঠিক তেমনি নিজের জীবনে ভালোবাসা খুজেঁ বেড়াতে হলে আগে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, আমার জন্যে কোনটা গুরুত্বপূর্ণ, দৈহিক চাহিদা নাকি অন্তরের… এগুলোর উত্তর না পেয়ে প্রিয়জন বাছাই করলে পরবর্তীতে গিয়ে অভাবের সাথে আপোষ করে নিন, বিকল্প খোঁজা হবে তখন ভুল।

এরকম একটি গল্প নিয়েই “কাঠবিড়ালী”র চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন তাসনিমুল হাসান তাজ। সিনেমার একদম শুরুর সিনেই মূলত ছবির কেন্দ্রীয় সিকোয়েন্সটি দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই অনুরোধ করবো যারাই ছবিটি দেখতে যাবেন, দেরী না করে ঠিক সময়ের আগে যাবেন।

শুরুর পর থেকে ছবিটি খুবই সাদাসিধে গড়ন ধরে সামনের দিকে এগোয়, নিপাট গ্রাম্য প্রেমের গল্প। সেখানে প্রেমিক আছে, প্রেমিকা আছে, প্রেমিকাকে একতরফা ভালোবাসে এমন এক রোমিও আছে, প্রেমিকের সর্বদা উপকার করে এমন এক বন্ধু আছে, ভালোবাসার মাঝে সংসারের অভাব অনটনও আছে। ছবির ট্রেইলারেও এগুলোই দেখা যায়। এসময় গল্প খুবই ধীরগতিতে সামনে আগায়, তাই মনে হচ্ছিল আজ গতানুগতিক কিছুই হয়তো দেখতে হচ্ছে…

কিন্তু বিরতির ঠিক আগে আসে একখানা টুইস্ট, অনেকক্ষণ ধীরগতিতে চলতে থাকা গল্প হঠাৎ করেই এক্সলেটরে চাপ দিলো! এরপর এক মাঝারি বেগে গল্পের গতিবিধি পরিবর্তন হয়ে গেলো, সেইসাথে চরিত্রগুলোও রঙ বদলালো… রোম্যান্টিক গল্পের মধ্যে ধীরে ধীরে রহস্য প্রবেশ করলো। মাঝেমধ্যে উঁকি দিলো একাধিক দারুণ টুইস্ট! ১১৫ মিনিটের ছোট্ট জার্নিতে গল্পটি এমন এক জায়গায় গিয়ে শেষ হবে যা আপনাকে চমকে দিবে, তৃপ্তি দিবে, যুক্তিবিজ্ঞানেও সন্তুষ্ট করবে।

ছবিতে মন ভালো করে দেওয়ার মতো এবং দারুণ চিন্তাধারা সমৃদ্ধ কিছু সংলাপ খুজেঁ পাওয়া যায়, একটি সংলাপ আমার এতোটাই ভালো লেগেছে যেটিকে কিছুটা মডিফাই করে রিভিউর হেডলাইনে দিয়েছি। অর্থপূর্ণ সংলাপ ছাড়াও ছবিতে বেশ কিছু ডাবল মিনিং জোকস ও সিকোয়েন্স আছে যা আপনাকে হাসাবে, নস্টালজিক করবে।

এ অংশ পাবে ১০০-তে ৮০।

পরিচালনা: “কাঠবিড়ালী” নিয়ামুল মুক্তার প্রথম বড়পর্দার কাজ। এর আগে তিনি জনপ্রিয় নির্মাতা রেদোয়ান রনি’র সহকারী হিসেবে কাজ করলেও কখনো মিডিয়ায় কাজ করেননি, সরাসরি সিনেমা নির্মাণে এসেছেন। এটা একদিক থেকে যেমন ভালো দিক, তেমনি বেশ সাংঘাতিক ব্যাপারও বটে। সাংঘাতিক কারণ তিনি যদি দর্শককে সন্তুষ্ট করতে না পারতেন তাহলে তার মিডিয়ায় পথচলা এখানেই শেষ হয়ে যেতো, দ্বিতীয় সুযোগ তিনি আর হয়তো পেতেন না। ভালো দিক, কারণ ছোটপর্দা থেকে উঠে আসা বেশিরভাগ নির্মাতার বিরুদ্ধে দর্শকদের যে কমন অভিযোগ থাকে, এই নির্মাতা তার কাজে সেই অভিযোগ তোলার বিন্দুমাত্র সুযোগ দেননি। দেখলেই বোঝা যায় “কাঠবিড়ালী” তৈরি করতে খুব একটা বাজেট লাগেনি; লেগেছে শ্রম, সাধনা, সততা, আন্তরিকতা। এতো কম এরেঞ্জমেন্টের মধ্যেই তিনি আমাদের এমন কিছু দেখিয়েছেন যা আমাদের চারপাশে ঘটে কিন্তু দেখতে পাই না। নির্মাতা হিসেবে নিয়ামুল মুক্তা তাই “কাঠবিড়ালী” তে সফল।

অভিনয়: ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আছে চারটি; কাজল, হাসু, আনিস, আসগর। তথাকথিত জনপ্রিয় কিংবা শক্তিশালী অভিনয়সমৃদ্ধ মুখ এছবিতে না থাকা সত্ত্বেও যারা রয়েছেন তাদের মাপা অভিনয় আপনাকে কখনোই ভালো অভিনেতার অভাববোধ করতে দিবে না।

তবে যদি ভালোদের মধ্যেই তুলনামূলক খুব ভালো বের করি, তবে আমার কাছে হাসু চরিত্রে থাকা আসাদুজ্জামান আবিরের অভিনয় সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে। মূল চরিত্রগুলোর মধ্যে একমাত্র তার চরিত্রটি একমাত্রিক, সহজ-সরল গ্রাম্য যুবকের। এরকম সাধা-সিধা গতানুগতিক চরিত্রেও তিনি যে পারফরমেন্স দেখিয়েছেন, তা যেনো হাসুকে আমাদের কাছে জীবন্ত করে তুলেছে। মনে হচ্ছিল পর্দায় দেখানো হাসু প্রকৃতপক্ষে আমি!

কাজল চরিত্রে অর্চিতা স্পর্শিয়া এবং আনিস চরিত্রে সাইদ জামান শাওন, দুজনের চরিত্রই বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল, অন্তত আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে। তাদের চরিত্রগুলো গল্পে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়েছে তাই ব্যালেন্স ধরে রাখাও বেশ কঠিন ছিল। শাওনের চরিত্রটি শুরুতে ততটা স্পেস না পেলেও পরবর্তীতে গিয়ে এটিই গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে এবং মূল চালিকা হিসেবে কাজ করেছে, তার অভিনয়ও বেশ ভালো লেগেছে। আর কাজল চরিত্রে স্পর্শিয়ার অভিনয় আমার দেখা এখন অব্দি বড়পর্দায় তার সেরা পারফরমেন্স! তার মধ্যে আমি জয়া আহসানের ছায়া খুঁজে পাই, যদিও এরকম ভবিষ্যৎবাণী করা বড্ড বোকামি। আশা করবো ভবিষ্যতে স্পর্শিয়া কাজল চরিত্রকে ছাড়িয়ে যাবেন।

আসগর চরিত্রে বলিষ্ঠ কন্ঠ নিয়ে শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব বেশ ভালো পারফরমেন্স দিয়েছেন। শুরুতে গতানুগতিক লাগলেও শেষের দিকে এসে সুবিচার না পাওয়ায় এচরিত্রটি দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নিবে। এছাড়া গ্রামের চেয়ারম্যানের চরিত্রে হিন্দোল রায় এবং কাজলের মায়ের চরিত্রে শিল্পী সরকার অপু মোটামুটি ভালো অভিনয় করেছেন।

অভিনয়ের ক্ষেত্রে সবার একটা কমন সমস্যা চোখে পড়েছে। সেটা হলো নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষার অভাব। সবাই কেমন যেনো কথ্য এবং অশুদ্ধ ভাষা মিশিয়ে কথা বললো। এই দোষ সংলাপ রচয়িতার ঘাড়ের ওপর বেশি পড়ে, তবে অভিনেতাদেরও একটু সতর্ক থাকা উচিত।

এ অংশ পাবে ৮০।

কারিগরি: “কাঠবিড়ালী”র কারিগরি দিক গল্প কিংবা অভিনয়ের দিকের তুলনায় কিছুটা দূর্বল। সিনেমাটোগ্রাফির কাজ করেছেন আদিত্য মনির। কোথাও কোথাও তার ক্যামেরার কাজ বেশ ভালো, আবার কোথাও ঘোলাটে। কিছু সিকোয়েন্স আছে যেগুলো খুব ভালো ফ্রেমিং করেছেন; যেমন; কালভার্টের ওপর দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সিকোয়েন্স, কিংবা পাটক্ষেতের সিকোয়েন্স। সম্পাদনার কাজ করেছেন রাশেদুজ্জামান সোহাগ। তিনি কিছু সিনের রিপিটেশন করেছেন, যার কতগুলো দরকারি মনে হয়েছে আর বাকিগুলো কেন করা হলো তা বুঝে আসেনি।

ইমন চৌধুরীর করা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক তেমন একটা ভালো লাগেনি, “কাঠবিড়ালী”কে দূর্বল করার পেছনে তার মিলেমিশে একাকার করতে না পারা বিজিএম এর যথেষ্ট অবদান আছে, যদিও তিনি এছবিতে ভালো দুইখানা গান উপহার দিয়েছেন। এছাড়া লিটন কর এছবির জন্য কয়েকখানা নান্দনিক পোস্টার ডিজাইন করেছেন তাই তার নাম আলাদাভাবে বলতে হয়। স্পর্শিয়া, শাওন সহ কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কড়া মেকআপ এবং একদম নতুন শাড়ী, লুঙ্গিতে দেখা গেছে, এক্ষেত্রে সিচ্যুয়েশনের সাথে ব্যালেন্স ধরে রাখা উচিত ছিল।

এ অংশ পাবে ৫০।

বিনোদন ও সামাজিক বার্তা: মাস ক্লাস দুই ধরনের অডিয়েন্সকে সন্তুষ্ট করবে, উপমহাদেশে এধরনের ছবি খুব কম নির্মিত হয়। “কাঠবিড়ালী” দুই ধরনের অডিয়েন্সকেই মোটামুটি সন্তুষ্ট করতে পারবে।

ছবিতে মোট তিনটি গান রয়েছে এবং তিনটি গানই মধুর মতো মিষ্টি।

“নয়া গাঙের পাড়ে গো বৃক্ষ,
বৃক্ষের চিরল চিরল পাতা,
কে তুমি সুন্দর ও কন্যা,
তোমার মুখে নাই কেন কথা…”

সেলিম আল দীনের এতো সুন্দর কথাসমৃদ্ধ গানটির সুর দিয়েছেন ইউসুফ হাসান অর্ক, গেয়েছেন শফি মন্ডল।আল-আমিন হাসান নির্ঝরের লেখা “আমার হৃদয়ের পাথাল ঢেউ” গানটি গেয়েছেন ফকির সাহেব, এগানটি ইউটিউবে এখনো আসেনি। গানটি আমার ব্যাপক ভালো লেগেছে। এছাড়া “তোমারে দেখিবো আমি” গানটি কবি নয়ানচাঁদ ঘোষের ‘চন্দ্রাবতী পালা’ হতে নেয়া হয়েছে। ইমন চৌধুরী ও কণার গাওয়া এই গানটিও মন্দ লাগেনি। গানগুলো যদি আরো আগে অবমুক্ত করা হতো তবে বেশি দর্শকপ্রিয়তা পেতো।

ছবিতে বেশ কিছু ডাবল মিনিং সিন আছে যেগুলো সম্পর্কে আগেই বলেছি, এগুলো বেশ বিনোদন দিবে। প্রথমার্ধে থাকা রোম্যান্স যেমন রোম্যান্টিক ফিল দিবে, তেমনি দ্বিতৗয়ার্ধে থাকা সাসপেন্স মনে উত্তেজনা জাগাবে।

গ্রাম্য সমাজে পরকিয়া এবং পরিবারের মধ্যে খুনের পরিমাণ কেন বাড়ছে, “কাঠবিড়ালী” এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছে। এক্ষেত্রে পরিবারের সবার উচিত সংসারের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া, ধৈর্য্য ধরা। আপন মানুষের দূর্বলতাকে নিজের দূর্বলতা মনে করা, তার সুখ-দুঃখ, বিপদে আপদে পাশে থাকা। আর দৈহিক ভালোবাসাকে সাইডে রেখে মনের ভালোবাসাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া, এতে করে পরিবারের মধ্যকার বন্ধন দৃঢ় থাকবে। “কাঠবিড়ালী” এ ধরনের সামাজিক বার্তা ই বহন করে।

এ অংশ পাবে ৮০।

ব্যক্তিগত: নিয়মিত সব ছবির ফার্স্ট ডে ফাস্ট শো দেখা হলেও এবার অসুস্থতার কারণে কয়েকদিন পরে দেখলাম। শুরুতে এক্সপেক্টেশন কম থাকলেও পজেটিভ ওয়ার্ড অফ মাউথের কারণে আগ্রহ বাড়ে। পরিশেষে বলবো, “কাঠবিড়ালী” খুবই ভালো গল্পের একটি ছবি, যার শুরুটা সাদামাটা হলেও ধীরেধীরে শক্তপোক্ত হয়েছে। প্রথমার্ধ কিছুটা গতিশীল হলে এবং কারিগরি দিক আরো শক্তিশালী হলে এছবি সব ধরনের দর্শকদের জন্য এক দূর্দান্ত সিনেমা হতো। তবে যতটুকু পাওয়া গেছে তাও নেহায়েত কম না।

রেটিং: ৭.৫/১০

ছবিটি কেন দেখবেন: ছবিতে বেশকিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে তাই অন্তত পনেরো বছরের নিচে কারো এছবি না দেখাই ভালো। বাকি যারা আছেন তারা সবাই এ ছবি উপভোগ করতে পারবেন। সে আপনি যত বড়ই বাণিজ্যিক ছবির ফ্যান হোন, কিংবা আর্ট ফিল্মের ভক্ত হোন, স্পয়লার ফ্রি থাকতে পারলে “কাঠবিড়ালী” আপনার খুব খারাপ লাগবে না।


Leave a reply