লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান: ওয়েব সিরিজে ফারুকীর চমৎকার শুরু
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লম্বা সময় পর কাজ নিয়ে হাজির হলেন। নতুন ধরনের কাজ। ইদানিং যে ঘরানা নিয়ে কথা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি সেই ওয়েব সিরিজই বানালেন তিনি। নাম ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’। ট্রেলার দেখে কোনো কাজ অনুমান করে নেওয়া দায়, কিছু ক্ষেত্রে ভুল তো বটেই। কিন্তু ফারুকী ট্রেলারে যে চমক দেখিয়েছেন তা পুরো গল্পে কন্টিনিউ করার চেষ্টা সুস্পষ্ট।
ছবিয়াল প্রডাকশনে এবং জি ফাইভ অরিজিনালের নিবেদনে ৮ পর্বের ওয়েব সিরিজটি ৯ জুলাই রিলিজ পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে। গল্পের কথা যদি বলতে হয় তবে এই গল্পটা বেশ কিছু জায়গায় সাসপেন্স তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। জি ফাইভে এর জনরা দেওয়া ক্রাইম। সেই হিসেবে ভালোই। ঢাকাই জীবনের চড়াই-উতরাই, নারীবাদ, পারভারসন, রাজনীতি, কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তাহীনতার বেশ কিছু অংশ নিয়ে গল্প যথেষ্ট দারুণভাবে মিশে গেছে। জনজীবনের ব্যস্ততার চাপে সময় ব্যয় করে দেখার মতো গল্প সাজিয়েছেন ফারুকী। কিন্তু সামারি করলে খুব বেশি আকর্ষণীয় নয়; সাদামাটা একটা গল্প যেন।
গল্প সাজিয়েছেন ফারুকী, পরিচালনাও তার। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নিঃসন্দেহে বাংলাদেশে অগ্রগণ্য নির্মাতাদের একজন। তার কাজকে সবসময়ে ভালো বলা না গেলেও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ সেই হিসেব ধরে আগালেও ফারুকীর ইতোপূর্বের সব কাজের চেয়ে ভালো বলা চলে। সিনেমাটোগ্রাফি, লাইটিং, ফ্রেমিং, সেট থেকে শুরু করে এডিট, সাউন্ড সবকিছুতেই তিনি টিম থেকে সেরাটি বের করে আনতে পেরেছেন। ফারুকী ক্যামেরার ভিতর দিয়ে সবসময় এমন একটা ভাইব ধরে রাখতে চান যেখানে ক্যারেক্টারের চোখে নয়, দর্শকের চোখ যেন দৃশ্যের সামনের জনকে দেখতে পায়। এই ছবিতেও সেটা চোখে পড়েছে।
রাতের শহরে সাবিলার অস্থিরতা, ক্লান্তি শেষে বাসায় ফিরে বাবার খোঁজ নেওয়া, বাংলাদেশের সরকারি অফিসগুলোয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সাধারণ মানুষের জীবনের টানাপোড়েন, সংস্কৃতি জগতের মিথস্ক্রিয়া, বাংলাদেশের আরও অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রেরও কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য এই সবকিছুরই দারুণ একটা প্রেজেন্টেশন ফারুকী হাজির করতে পেরেছেন। সবচেয়ে দারুণ লেগেছে প্রতিটি পর্বের নামগুলোই তিনি দিয়েছেন বিখ্যাত সিনেমার নামে। আর এই অবধি হওয়া বাংলাদেশি সব ওয়েব সিরিজকে ফারুকী যে জায়গায় বিশেষত ছাপিয়ে যেতে পেরেছেন তা হলো প্রত্যেক পর্বকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারা। ৮টি অ্যাপিসোড একে অন্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও প্রতিটি অ্যাপিসোডকে আপনি যদি আলাদাভাবে রাখেন তাহলে তাদের প্রত্যেকেরই পূর্ণাঙ্গ স্টোরিটেলিং বিদ্যমান। এটা ওয়েব সিরিজ হিসেবে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। ফারুকী সেটা করতে গিয়ে একেকটা অ্যাপিসোডের ডিউরেশন রেখেছেন একেক রকম। ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং বটে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে কিছুটা স্লো করে দেয় কাজ।
সিনেমাটোগ্রাফি করিয়েছেন বিদেশি সিনেমাটোগ্রাফারকে দিয়ে। সিনেমাটোগ্রাফি ছিল দারুণ। ড্রোন শটে নিয়ন বাতির ঢাকা শহর, গাছের ফাঁক দিয়ে নিচের দৃশ্য দেখানো, ডিম করে টেক নেওয়া, শুরুর দৃশ্যেই সাবিলা আর তার বাবার শটে প্যান করা এসব দারুণ ছিল। ক্যামেরার সাহায্যেই আলোছায়ার একটা নিখুঁত হিসাব মিলাতে পারছিলেন সিনেমাটোগ্রাফার। এমনটা ফারুকীর ‘ডুব’ সিনেমায়ও আমরা দেখেছিলাম। নাচের প্র্যাকটিসের সময়ে তাল না মেলাটা ঢাকতে ফ্রেমের সামনে ঝাপসা করে এ প্রান্তের প্র্যাকটিসের দৃশ্য আনাটা দারুণ ম্যাচুরিটির পরিচয়। আর বেশ কিছু হ্যান্ডমেড শটে ক্যামেরার দোদুল্যমানতা ছিল। সেটা গল্পের নায়িকা সাবিলার জীবনের দোদুল্যমানতা বুঝাতে বরাবর যেন। অনেক বেশি ক্লোজ শট নেই, অনেক বেশি লং শটও নেই। আবার স্টিল সিনেমাটোগ্রাফিরও তেমন উপস্থিতি নেই। একটা ভারসাম্য দেখা গেছে সিনেমাটোগ্রাফিতে।
লাইটিং আর সাউন্ড প্রশংসার দাবীদার। লাইটিংয়ে হোয়াইট ব্যালান্স দর্শককে গল্পে দীর্ঘক্ষণ থাকতে সাহায্য করবে। রাতের দৃশ্যেও নেই আলোর অনেক বেশি ঝলকানি। এমনকি গভীর রাতে অন্ধকারটা অন্ধকারের মধ্যেই রেখে দেওয়া হয়েছে। আর ন্যাচারাল যে লাইটটা যখন যেভাবে কাজে লাগানো যায় লাগানো হয়েছে। কালারটোনের জন্য রাশেদুজ্জামান সোহাগ বাহবা পেতে পারেন। নেই অতিমাত্রায় স্যাচুরেশন, নেই কনট্রাস্ট বাড়ানো-কমানো। সবকিছুতেই একটা ন্যাচারাল ব্যাপার চোখে পড়েছে। বাসে চড়ার সময় সাবিলার চেহারায় একবার ছায়া এসে আবার সরে যাওয়া, সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের লাইটিং থেকে শুরু করে এন্ডিং পার্টে সাবিলা আর লরার সাক্ষাৎ আর তার পূর্বে সাবিলার পাশে তার বাবার ঘুমানোর দৃশ্য, সবখানেই লাইটিংটা যথাযথ।
সাউন্ডের জন্য রিপন নাথ ক্রেডিট পাবেন। এমনিতেই এখানে ডাবিং অনেক বেশি নেই। তার ওপরে সব সংলাপই যথাযথভাবে ডেলিভারি দেওয়ায় সাউন্ডে একটা মনোরম আউটপুট পাওয়া গেছে। কেবল একটা সিনে ঘরের ভেতরে ঝিঁঝির শব্দ পাওয়া গেলেও ঘরের বাইরে সেটা শোনা না যাওয়াটা খাপছাড়া ছিল। মিউজিকও অসাধারণ। পাভেল অরিন এই জায়গায় ক্রেডিট পাবেন। ফারুকীর লিরিক্সে পাভেল অরিনের কম্পোজিশনে মাশা ইসলামের কণ্ঠে ‘পরজীবী শহরের গান’ এই ওয়েব সিরিজকে একটা দারুণ সূচনা দেয়। রবীন্দ্রসংগীতগুলোও ভালো।
‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ তাসনিয়া ফারিণের ক্যারিয়ারে অনন্য সংযোজন। ফারিণ তার নিজের যোগ্যতায় এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠতে পেরেছেন। আমি জানি না তিনি নুসরাত ইমরোজ তিশা দ্বারা প্রভাবিত কি-না। বেশিরভাগ সময়েই তার অঙ্গভঙ্গি, হাঁটাচলা, ডায়ালগ ডেলিভারি, এক্সপ্রেশন সবকিছুতেই যেন তিশার একটা অবয়ব পাওয়া যাচ্ছিল। ফারিণ বিন্দুমাত্রও ছাড় দেননি ক্যামেরায় তার আকর্ষণ ধরে রাখতে। হ্যারাসমেন্টের সময়ে খায়রুল আলমের তাকানোয় তার মাঝে যে দ্বিধাবোধ সেটা হাতের নাড়াচাড়া দিয়ে বোঝানোটা অদ্ভুত সুন্দর।নাচের সময়ে সব চিন্তা একপাশে ফেলে রেখে মনোযোগ দেওয়া, আবার প্রতিবাদী চরিত্রে কাউকে ছাড় না দেওয়া, সেই ফারিণ আবার কোমল হয়ে পড়া যখন তার বাসায় বাবাকে দেখার কেউ নেই জানতে পারেন, কিংবা লরাকে রেস্টুরেন্টে হ্যারাসমেন্টের কথা বলার সময়ে ফারিন; কোত্থাও এতটুকু খুঁত নেই। ভীষণ শক্তিশালী ফারিণ; সব দৃশ্যেই। তাকে দর্শক আরও বেশি বেশি দেখতে চাইবে পর্দায়, বলাই বাহুল্য।
মোস্তফা মনোয়ার একজন অসাধারণ অভিনেতা। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ মুভিতে তিনি একাই দর্শকদের টেনে রেখেছিলেন। কিন্তু এই ওয়েব সিরিজের গল্পের সাথে তিনি কোথাও একটা যেন বারবার খাপছাড়া হয়ে পড়ছিলেন। বেশকিছু জায়গায় এক্সপ্রেশন দিতে দেরি করছিলেন। সাবিলার কাছে মাফ চাওয়ার সময়ে ওভার এক্টিং করে ফেললেন শেষমেশ। তারপরও বড় অংশে মোস্তফা মনোয়ার আরিফ চরিত্রে সাবলীল থাকার চেষ্টা করেছেন।
আফজাল হোসেনের চরিত্রে বিশেষ কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল না। খায়রুল আলম চরিত্রে চ্যালেঞ্জ যেটুকু ছিল সেটাও পারসোনালিটি দিয়ে সহজেই কুলাতে পেরেছেন। পার্থ বড়ুয়া ও ইরেশ জাকের দুজনই যেন সমানতালে পাল্লা দিচ্ছিলেন একে অন্যের সঙ্গে। এবং যা ভাবার তাইই হলো। ইমতিয়াজ ও জহির চরিত্রে তারা দুজনেই অসাধারণ প্রফেশনালিজম দেখিয়ে গল্পকে তাদের দিকে টেনে নিয়ে গেছেন একপর্যায়ে।
হাসান মাসুদও মিঝু চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছেন। জাত অভিনেতার মতো। তার কোম্পানির মিটিংয়ের ওই দৃশ্য বেশ শক্তিশালী ছিল। এর বড় ক্রেডিট তিনি পাবেনই। দৃশ্যটাও যে বেশ কিছুদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খাবে বোঝাই যায়।
মারিয়া নূর লরা চরিত্রে বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ করেছেন। তার রোলটিই ছিল খুব বেশি কমপ্লেক্সে ভর্তি। দোটানার একটা এক্সপ্রেশন তার দিতে হতো। তিনি সেটা খাপে খাপে দিয়েছেন। আর করপোরেট ভঙ্গিমায় কথা বলাটা তাকে আরও আকর্ষণীয় বানিয়েছে।
চঞ্চল চৌধুরী এই গল্পে অপ্রাসঙ্গিক। ছোট্ট একটা দৃশ্যে তিনি আরও বেশি বিরক্তিকর ঠেকে গেছেন। তাকে এমন অপ্রয়োজনীয় ক্যারেক্টারে কাজ না করালেই পারতেন ফারুকী। ডিবি প্রধান চরিত্রটাকেও ফুটাতে পারেননি নির্মাতা। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সাবেরী আলম এবং মামুনুর রশীদ তিনজনই তাদের জায়গায় সাবলীল ছিলেন বেশ।
স্ক্রিনপ্লে উপভোগ্য ছিল বেশিরভাগ সময়েই। সুলতানাস ড্রিম নামটা ইন্টারেস্টিং। ছিল সাদামাটা ইনট্রো আর ক্রেডিট ডিজাইন। স্ক্রিনপ্লের সঙ্গে ক্যামেরার নাড়াচাড়ার বেশ দারুণ সমন্বয় হয়েছে। হ্যারাসমেন্টের দৃশ্য না দেখিয়ে শব্দ প্লে করাটাও প্রফেশনালিজমের পরিচয়। দৃশ্যের ওভারলেপিংও চমৎকার। লরার বেসিনের পানি ছেড়ে দিয়ে আবার সাবিলার মুখ ধোয়া, একজনের কলিংবেল টিপে অন্যজনের বাসায় প্রবেশ এসবই মনোজ্ঞ। আলো-আঁধারির খেলার একটা কন্টিনিউটি চোখে পড়বে। অবশ্য বেশ কয়েকটা চোখে পড়ার মতো ভুলও ছিল। তালা ভাঙার সময়ে তালা ভাঙতে নির্দেশ দিলেও হাতুড়ি আঘাত করে দরজায়। গোটা ওয়েব সিরিজে খায়রুল আলমের টাইটেল Alom লিখলেও ব্যবসার চুক্তিপত্রে তার মেয়ে লিখে Alam., নামের পদবীর তো সচরাচর বানান পরিবর্তন দেখা যায় না। খায়রুল আলমের কবিতা ‘গণকন্ঠ’য় প্রকাশিত হওয়াটাও খেয়াল করার মতো। তবে দর্শকমাত্রই এই গল্পের চূড়ান্ত পরিণতি বুঝে যাবেন খায়রুল আলমের দাফনে আরিফের উপস্থিতিকে ফোকাস করা দেখে। অনেকটা নিজেই নিজের স্পয়লার দিয়ে দেওয়ার মতো।
ফারুকীর বেশ কিছু খুঁত চোখে পড়ার মতো। দ্বিতীয় অ্যাপিসোডে খায়রুল আলমের সঙ্গে কথা শেষ হওয়ার পর আরিফ কথার একপর্যায়ে সাবিলাকে রিয়্যাক্ট করছে বললেও স্পষ্টই দেখা যায় সাবিলা রিয়্যাক্ট করেনি। এটা অবশ্যই স্ক্রিপ্টের দোষ। খায়রুল আলমকে বিত্তবান দেখানো হলেও তার বাসার কিচেনের দেয়ালে পেপার টাঙানো। লোহার টেপে মরিচা ধরা। ব্যাপারটা কেমন যেন! মিঝু দ্বারা সাবিলাকে আপোষ করতে বলা, আবার তার মাধ্যমেই বরখাস্তের চিঠি পাঠানো এটা অহেতুক দৃশ্য ছিল। এর মাধ্যমে মিঝুকেই বরখাস্তের নায়ক মনে করতে পারে দর্শক শেষের প্রেক্ষাপট বিচারে। আর পুরো ব্যাপারটায় প্রায় সাড়ে তিনমাসের ডিউরেশন দেখালেও এই দীর্ঘ সময়ে যার চিকিৎসাই আসল সমস্যা সেই সাবিলার বাবাকে একবারও স্ক্রিনে দেখানো হয়নি। আর মারা যাওয়ার আগের দৃশ্যে দেখানো হলো খায়রুল আলম তার ফোন গাড়িতে রেখে যাচ্ছেন। কোনো কারণ ছাড়া গাড়িতে রেখে ফোন রেখে যাবে কেন কেউ?
ফুটপ্রিন্টের হিসাব মিলানো অফিসারটার প্রতিটা এক্সপ্রেশনই বাজে ছিল। বাজে ছিল তার সংলাপ। ফারুকী এ ব্যাপারে হোমওয়ার্ক করেননি সম্ভবত। এমনকি মারার সময়ে আরিফের বাম হাতে গ্লাভস দেখা গেলেও ডান হাতে ছিল না। সেই হাত দিয়ে আরিফ আবার পেনড্রাইভ টাচ করে, মরদেহে হাত দেয়, দেহ সরায়। তাহলে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট তো আরও আগেই পাওয়ার কথা। তা না করে অতদূর অবধি গল্পকে নিতে ফারুকী দেখালেন ডিবি অফিসারের আন্দাজে ঢিল ছোঁড়াকে। আবার ডিবি প্রধান ডার্ক দৃশ্যকে বৈধতা দিতে খায়রুল আলমের রাজনৈতিক পরিচয়কে সামনে আনতে চাওয়ার যে স্টান্টবাজি তা যথেষ্ট আপত্তিকর। যেন ডিবি প্রধান অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা!
সাবিলাকে সিগারেট, স্লিভলেস ব্লাউজ এসবের জন্য নাস্তিক অপবাদ দিয়ে কাবু করতে চাওয়ার প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের একটা রাজনৈতিক ইস্যুকে সামনে এনেছেন যা প্রশংসনীয় কিন্তু তিনি যে এক্সট্রিমিস্ট ইসলামি নেতাকে প্রেস ক্লাব এ প্রগতিশীলতা বিরোধী বক্তব্য দিতে দেখালেন বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এক্সট্রিমিস্ট ইসলামিস্টরা ওই স্পেস আদৌ পান?
এই ভুলগুলোকে দর্শক মনে রাখার সম্ভাবনা কম। কেননা ফারুকী দারুণ এক স্টোরিটেলিং সাজিয়েছেন এখানে। ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ এমন এক ওয়েব সিরিজ যেখানে জনরার ওভারলেপিং ঘটানো গেছে। সামাজিক এক গল্প থেকে যা হয়ে উঠে থ্রিলার। সাবিলার টাচি সব সংলাপ, তার ইমোশন, খায়রুল আলমের ব্যক্তিত্ব, অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফি, ভাবগম্ভীর সংলাপ, রিমান্ডে এক নারীর বাবার জন্য আকুতি, শেষ অ্যাপিসোডে খালি পায়েই বাবাকে সব জায়গায় খুঁজতে বের হওয়া, ‘‘ভালো থাকার জন্য ভুলে যাওয়ার চেয়ে ভালো চিকিৎসা নেই’’ ডায়লগ কিংবা এন্ডিংয়ে লরা আর সাবিলার কান্না এই ওয়েব সিরিজকে দর্শকের ভীষণ কাছে নিয়ে যাবে। আর এর বাইরে শহরের মধ্যবিত্ত সমাজের কথ্য ভাষা নিয়ে ফারুকীর নিয়মিত এক্সপেরিমেন্ট যোগ করে বলাই যায়, ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ এই অবধি হওয়া সেরা বাংলাদেশি ওয়েব সিরিজ।