শাকিবের সালমান লুক, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া
সালমান শাহকে দেখেই চলচ্চিত্রে আগ্রহ জন্মে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অমর নায়ককে আইডল মেনে চলেছেন শাকিব খান। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সালমানের প্রতি মুগ্ধতা জানিয়েছেন বিভিন্নভাবে। সালমানের চুলের কাটিং, ক্যাপ, পোশাক-পরিচ্ছদ, চলাফেরা, বাচনভঙ্গি-সবই নতুনদের জন্য অনুকরণীয় বলে মনে করেন তিনি। এবার শাকিব নিজেই তাই করে দেখালেন।
ব্যাংককে ‘মেন্টাল’ ছবির শুটিং করছেন শাকিব। ১৩ অক্টোবর সেখান থেকে একটি ছবি পোস্ট করেন ফেসবুকে।
‘প্রেম পিয়াসী‘র সালমানের একটি ছবির সঙ্গে শাকিবের এ ছবিটি হুবহু মিলে যায়। হেয়ার কাটিং, কানের দুল, তাকানোর স্টাইল-সবই সালমানের মতো। সালমান চুলে রং করেননি। কিন্তু শাকিব চুল রাঙাতে ভুলেননি। এ ছাড়া শাকিবকে অনেকবাই বলিউডের সালমান খানকে অনুকরণ করতে দেখা গেছে।
শাকিব বলেন, ‘সালমান শাহ আইকন। মাঝেমধ্যে তার অনুকরণ করাটা দোষের কিছু নয়। তবে এই লুকটা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই তাঁর সঙ্গে মিলে গেছে। পরে দুটি ছবি দেখে নিজেই বিস্মিত হয়েছি। অবশ্য ভেতরে ভেতরে এক ধরনের ভালো লাগাও কাজ করেছে।’
এ দিকে ‘মেন্টাল’ টিম বলছে, এটা পূর্ব পরিকল্পিত নয়। সালমান শাহর হেয়ার স্টাইলের সঙ্গে শাকিব খানের হেয়ার স্টাইল কাকতালীয়ভাবে কিছুটা মিলে গেছে।
সালমান ও শাকিব দু’জনের ভক্তরাই বিষয়টি উপভোগ করছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে চলছে তর্ক বিতর্কের ঝড়। যথারীতি শুরু হয়েছে তুলনামূলক আলোচনা। আসুন তেমন কটি মন্তব্য শোনা যাক—
শুভ্র আলম লিখেছেন, ‘হুম সালমান শাহ’ই বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বকালের সেরা স্টাইলিশ এবং স্মার্ট নায়ক।এটা দেখার পরও যদি কোনো শাকিব ভক্ত সালমানের সাথে শাকিবকে তুলনা করেন এবং সালমানের থেকে শাকিব অমুক,তমুক বলেন তবে তাকে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। হ্যা শাকিব বর্তমানের জনপ্রিয় নায়ক। কিন্তু সালমান সর্বকালের সেরা নায়ক। শাকিব কখনোই সালমানের ধারে কাছে নেই!!! শাকিব ভক্তরা প্লিজ আর কখনো অযথা তর্ক করবেন না। সালমান শাহ একজনই এটা মনে রাখবেন প্লিজ!’
শুভ্র আলমকে উদ্দেশ্য করে খান কামাল লিখেছেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন সালমানের ধারে-কাছে যাবার যোগ্যতা শাকিবের নেই। শাকিব বতমানে জনপ্রিয় তা ঠিক কিন্তু তাও বুঝতে হবে সালমানের সময়ে বাংলাদেশে ১২০০ সিনেমা হল চালু ছিলো আর সাকিবের আমলে মাত্র ৩০০ হল চালু আছে। যা খুব তাড়াতাড়ি ২০০-তে আসবে। যেভাবে হল বন্ধ হচ্ছে মনে হয় না সিনেমা টিকতে পারবে। যদি ভালো মেধাবী নায়ক থাকতো তাহলে এভাবে সিনেমা হল বন্ধ হতো না।’
প্রজন্ম শানু লিখেন, ‘মেন্টাল দেখি পাগল করে ছাড়বে। অসাধারন লুকে কিং খান।’
অপু নামের একজন লিখেন, ‘পোস্ট না করে পারলাম না। আমার লেখা পড়ে অনেকেই বলবেন যে আমি শাকিবের ফ্যান। কিন্তু ভাই বিশ্বাস করেন শাকিব খানের ফ্যান না আমি এটা গ্যারান্টি দিতে পারি। শাহরুখ খান বর্তমানের কিং খান (সারা বিশ্বে)। কিন্তু অমিতাভ এক সময় হিট হিরো ছিল। কোন শোতে শাহরুখসহ অনেকেই অমিতাভকে পায় হাত দিয়ে সালাম করে বা দাড়িয়ে সম্মান করে। যেমন আমাদের দেশের নায়করাজ রাজ্জাক। তার সাথে কি সালমান শাহর কোন তুলনা হয়? এখানে কে বড় কে ছোট সেটা ভেবে বলা সম্ভব?
আসি শাকিব আর সালমান শাহ এর কথায়। বর্তমানে শাকিবের ফ্যান বহুত তা আর বলার বাকি রাখে না। আবার সালমান শাহকে আমার বাবা- মাও খুব পছন্দ করে। এটা যুগের সাথে পরিবর্তন হয়। এক সময় অন্য নায়ক আসবে সে হিট হবে। সে বলবে সে শাকিব খানকে আর আইডল মানে। তার মানে কি শাকিব তার থেকে বড় হয়ে গেল?
ঘরের ছোট ভাই বড় ভাইকে সম্মান করে। কিন্তু সম্পত্তি কিন্তু সমানই পায়। বরং ছোট ছেলে বেশি পায়। আমার কথা হল যে যেই যুগের ছিল সে সেই সময় কাপাইছে এটা তুলনা করা সম্ভব না।
আর চুলের স্টাইল যে সে সালমান শাহ এরটা নকল করছে তা কিভাবে বুঝলেন? এটা তো হলিউডের য্যাকি চ্যানকেও আমি এই স্টাইলে দেখছি।
স্টাইল কোনদিন ইউনিক হয় না এটা মনে রাখতে হবে যদি সেটা উনিক হয় তাহলে সেটা তার প্রতিভা। ক্লাসের ফার্স্টবয়ও অনেক সময় তার থেকে খারাপ ছাত্রের লেখা কপি করে। এতে কি সে ছোট হয়ে যায়?
বি দ্র.-আমি কারো পক্ষ নিচ্ছি না । সালমান সাহকে বাংলা সবাই স্যালিউট দেয়। এক সময় শাকিবকেও দিবে। তার পরে আর ভাল হিরো আসবে আরো প্রতিবাভান একটা নির্দিষ্ট সময় পর সেও স্যালিউট পাবে। এটাই নিয়ম। সুতরাং এরকম তুলনা করে যারা পোস্ট করে তাদের বোঝা উচিত সালমান শাহ শাকিব খানের কম্পিটিটর না । কিংবা শাকিব সালমান শাহর কম্পিটিটর না। যে যার জায়গায় কিং।’
আলোক হাসান লিখেছেন, ‘ঢালিউডের দুই নক্ষত্র…! নায়ক শাকিব খান ও নায়ক সালমান শাহ। একজন ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন এবং অন্যজন এখনো ইতিহাস সৃষ্টি করে যাচ্ছেন..!!!’
বাংলা ছবির মান, কোয়ালিটি, অভিনয়, কেমেরা ম্যান, সহ ইন্ড্রাজট্রিকে আরো উন্নত করতে হবে