সত্তর ভাগ শুটিং হয়েও ভেস্তে গেল ‘মায়া দ্য লাভ’
প্রথম লট ঢাকায় ও দ্বিতীয় লটের শুটিং হয়েছিল চট্টগ্রামে। ৭০ শতাংশ শুটিং হওয়া ‘মায়া দ্য লাভ’ সিনেমার শেষ ক্লাইমেক্স ও কিছু প্যাঁচওয়ার্ক নিয়ে তৈরি হয়েছে বিপত্তি। চার তারকার শিডিউল না মেলায় সিনেমাটি বন্ধের ঘোষণা এলো নির্মাতা তরফে।
২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শুটিং শুরু হওয়া ‘মায়া দ্য লাভ’ পরিচালনা করছেন জসিম উদ্দিন জাকির, প্রযোজনায় আলিনুর আশিক। প্রধান চারটি চরিত্রে আছেন আনিসুর রহমান মিলন, সাইমন সাদিক, জিয়াউল রোশান ও শবনম বুবলি।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সাইমনের শিডিউল মিললে মেলে না বুবলির। আবার তারা রাজি হলেও রোশান থাকেন অন্য ছবির শুটিংয়ে। একটা পর্যায়ে সাইমন, বুবলি ও রোশানকেও একসঙ্গে পেলেন পরিচালক, কিন্তু আমেরিকা থেকে আসছেন না আনিসুর রহমান মিলন।
এরই মধ্যে গত মাসে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হয়েছেন প্রযোজক আশিক। সব মিলিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে ভেস্তে গেল ‘মায়া- দ্য লাভ’।
‘ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি’ উল্লেখ করে পরিচালক জসিম বলেন, ‘ছবির ৭০ শতাংশ শুটিং শেষ। সামান্য কিছু দৃশ্য ও গান বাকি। এরই মধ্যে বুবলি ম্যাডামের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তিনি কিছু পারিশ্রমিক চাইলেন। প্রযোজককে জানালাম সেটা। এখন প্রযোজক শুটিং না করলে টাকা কেন দেবেন? আমাদের চুক্তি অনুযায়ী কোনো শিল্পীর পারিশ্রমিক তো বাকি রাখিনি আমরা।’
আরো বলেন, ‘আমি আনিসুর রহমান মিলন ভাইয়ের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। তাকে এটাও বলেছিলাম, আমেরিকা থেকে আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়াটাও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বহন করবে। তিনি শুনে খুশি হলেও পরে আর সাড়া দেননি। এখন ছবি শেষ করতে গেলে তার অংশে পরিবর্তন আনতে হবে। সেটা করে কি আমি তৃপ্তি পাব!’
এদিকে প্রযোজক আলিনুর আশিক বলেন, ‘আমি অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছবিটি শুরু করেছিলাম। সব শিল্পী ও কলাকুশলীকে অগ্রিম পারিশ্রমিক দিয়েছিলাম। কারো কোনো আবদার ফেলিনি। অথচ শিডিউল দিতে সবাই গড়িমসি করেছেন। আমি মনের ক্ষোভে দেশ ছেড়েছি। পরিচালক জসিম ভাইয়ের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। তিনি যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারলেন না। শুনেছি আনিসুর রহমান মিলন ভাই আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাকে ছাড়া ছবির শেষ দৃশ্যের শুটিং করা সম্ভব হবে না। শেষ পর্যন্ত একটি কথা বলতে চাই, আমাদের দেশে এখন আর কোনো পেশাদার শিল্পী নেই। যে কারণে প্রযোজকরা একে একে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে। আমার ইচ্ছা ছিল বছরে অন্তত পাঁচটি ছবি নির্মাণ করব। সেই আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হলাম। বছরে পাঁচটি করে ছবি হারাল কারা? শিল্পী-কলাকুশলীরাই তো! আমার কোনো ক্ষতি হয়নি, ক্ষতি হয়েছে তাঁদের। আমি আরেকটি ছবির নাম নিবন্ধনও করেছিলাম। এসব অপেশাদারির কারণে সেটিও আর নির্মাণ করব না।’
তবে শুটিং সম্পন্ন করে দেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক সাইমন সাদিক। তিনি নিজে থেকেও কয়েকবার পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
সাইমন বলেন, ‘অনেক ভালো একটি গল্প। জসিম ভাই খুব ভালো নির্মাতা। যতটুকু শুটিং করেছি সেই ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে দারুণ একটি ছবি হতে যাচ্ছে। আমি জসিম ভাইকে বলেছি, যখন আমার দরকার পড়বে তখনই শিডিউল দেব। ভালো করেই বুঝতে পারছি তিনি ছবিটি নিয়ে কী মুসিবতে আছেন।’
আরেক অভিনেতা জিয়াউল রোশান বলেন, ‘জসিম ভাই সবার শিডিউল জোগাড় করলে আমার শিডিউল দিতে বাধা নেই। আমিও চাই ছবিটি শেষ হোক, দর্শক দেখুক হলে।’
তবে শবনম বুবলি ও আনিসুর রহমান মিলনের কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেনি সংবাদমাধ্যমটি।