Select Page

‘পাঠান’ পেছাতে ‘আর্জি’, সিদ্ধান্তে ‘অনড়’ অনন্য মামুন

‘পাঠান’ পেছাতে ‘আর্জি’, সিদ্ধান্তে ‘অনড়’ অনন্য মামুন

দেশের প্রেক্ষাগৃহে হিন্দি সিনেমা ‘পাঠান’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৫ মে। ঈদুল ফিতরের মাত্র দুই সপ্তাহ পর এমন পদক্ষেপ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নির্মাতারা। কিন্তু সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন আমদানিকারক অ্যাকশন-কাট এন্টারটেইনমেন্টের কর্মকর্তা অনন্য মামুন। খবর বাংলা ট্রিবিউন ও প্রথম আলো।

এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে আটটি সিনেমা, যা দেশের হলগুলোতে চলমান। নির্মাতাদের মতে, ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া আটটি ছবি দর্শকের দারুণ সাড়া পাচ্ছে। এমন অবস্থায় বাইরের ছবি মুক্তি দেওয়া উচিত হবে না।

আজ রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন ‘লোকাল’ নির্মাতা সাইফ চন্দন, ‘পাপ’র পরিচালক সৈকত নাসির, ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’র নির্মাতা তপু খান, ‘কিল হিম’র নির্মাতা মো. ইকবাল, ‘প্রেম প্রীতির বন্ধন’র পরিচালক সোলায়মান আলী লেবু ও ‘আদম’ নির্মাতা আবু তাওহীদ হিরণ। এছাড়া আগে থেকেই হিন্দি ছবির বিরোধিতা করে আসা চিত্রনাট্যকার-নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুও উপস্থিত ছিলেন।

শুরুতে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাইফ চন্দন। এরপর একে একে অন্য নির্মাতারা নিজেদের ভাবনা বিনিময় করেন। তাদের সম্মিলিত মত, ‘পাঠান’র মুক্তিতে তাদের আপত্তি নেই। তবে আরও কিছু দিন (দুই সপ্তাহ) যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

নির্মাতা সৈকত নাসির বলেন, “প্রত্যেকটা সিনেমাই বেশ ভালো যাচ্ছে। আমি কখনোই সিনেমা আমদানির বিপক্ষে না। কিন্তু এই মুহূর্তে মুক্তি দেওয়া ঠিক হবে না। একটি ছবি যদি তিন-চার সপ্তাহ না চালানো হয়, তাহলে একজন প্রযোজক কোনোভাবেই তার লগ্নি ওঠাতে পারবেন না। এজন্য আমাদের সিনেমার স্বার্থে আরও দুইটা সপ্তাহ সময় দিন। এরপর ‘পাঠান’ মুক্তি দিন।’’

তপু খান বলেছেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে সংস্কৃতি আদান-প্রদান হবে, এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সেটা কারও ক্ষতি না করে। আমরাও চাই দেশে বাইরের ছবি আসুক, তাহলে আমাদের শিল্প-জ্ঞান চর্চার পরিধি বাড়বে। এই ঈদে বাংলা সিনেমার প্রতি মানুষের আগ্রহ ফিরে এসেছে, মানুষ হলে যাচ্ছে। এজন্য আমরা চাই, সুবিধাজনক সময় আমাদের দেওয়া হোক। আমাদের প্রযোজকরা যাতে তাদের লগ্নি তুলে আনতে পারেন।’

মো. ইকবালের বক্তব্য, ‘ভালো ছবি আসলে একটা প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এটা আমরাও চাই। হলগুলো বাঁচুক। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। যেহেতু ঈদে আটটি বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছে এবং ভালো যাচ্ছে, এজন্য আমি আমদানিকারকদের অনুরোধ করবো দুইটা সপ্তাহ পিছিয়ে দিন। পরবর্তী ভালো তারিখ আমরা ব্যবস্থা করে দেবো। কিন্তু এই মুহূর্তে দুইটা সপ্তাহ পেছানো উচিত। এতদিন আপনারা অপেক্ষা করেছেন, আর দুইটা সপ্তাহ অপেক্ষা করলে কিছুই হবে না।’

এদিক অনন্য মামুন সাফ সাফ জানিয়ে দিলেন, ৫ মে ‘পাঠান’ আসছে। কোনোভাবেই ছবির মুক্তির তারিখ পেছাবেন না তিনি।

“সরকারের পক্ষ থেকে ‘পাঠান’ মুক্তি নিয়ে একটা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। ঈদের সপ্তাহ চলে গেছে। পরের সপ্তাহও যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কেমনে কী! আমাদের এটা কি ছবি না? সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স সবই দিয়েছি। এই ছবির জন্য সরকারকে সাত লাখ টাকার মতো ভ্যাট দিয়েছি। ঈদের আর সব ছবি মিলে তো সাত লাখ টাকা ভ্যাট দিতে পারেনি। আমি তো সিনেমা এনেছি ফ্রিজে রাখার জন্য না। রিলিজ দেওয়ার জন্য এনেছি।”

আরো বলেন, “সরকারি সব নিয়ম মেনেই আমরা ছবিটি এনেছি। ‘পাঠান’ মুক্তি পেছাবে, এসব প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে কোনো লাভ নেই। সরকারি নিয়ম আছে, নিয়মের বাইরে গিয়ে তো আমরা কিছু করছি না। গায়ের জোরেও কিছু করছি না। তা ছাড়া আমরা ছবি রিলিজই করব মাত্র ২২ প্রেক্ষাগৃহে। আমরা বেশি হলে রিলিজ দেবও না। বাকি দেড় শ হলে দেশের ছবিগুলো চলবে, সমস্যা নাই তো। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের যেখান থেকে ঈদের ছবিগুলো নেমে যাচ্ছে, সেখানেই ‘পাঠান’ মুক্তি দেব। হলমালিকেরাও সিদ্ধান্ত নেবেন, তাঁদের তো জোর করে বলা যাবে না, এই ছবি চালাতেই হবে, এই ছবি চালান। আমরা শুধু বড় হলগুলোতে ঢুকব। ছোট ছোট হলগুলো দেশীয় ছবি চালানোর জন্য ছেড়ে দিয়েছি।”

ছোট ছোট প্রেক্ষাগৃহগুলো কি ‘পাঠান’ প্রদর্শনের উপযোগী? ‘উপযোগী না, তারপরও আমরা তো উপযোগী করে নিতে পারতাম। যেহেতু দেশীয় ছবি আছে, সেগুলোর কথা ভেবে ছেড়ে দিয়েছি। দ্বিতীয় সপ্তাহে হয়তো আমাদের প্রেক্ষাগৃহ ৫০টি হবে বা ৭০টি হবে। আমরাও সেভাবেই চাচ্ছি’ বললেন অনন্য মামুন।


মন্তব্য করুন