সাইকো থ্রিলার নির্মাণে ভালো প্রচেষ্টা ‘লাইভ’
আমাদের বাণিজ্যিক ছবিতে সাইকোপ্যাথ থ্রিলারের কাজ যথেষ্ট আছে।
অনেকের ধারণা এ ধরনের কাজ হয়নি কিন্তু হয়েছে যথেষ্টই। উদাহরণে বলা যেতে পারে ‘বিশ্বপ্রেমিক’ ছবিতে হুমায়ুন ফরীদির লিজেন্ডারি চরিত্রটির কথা কিংবা মান্নার ‘আম্মাজান ; সোহেল চৌধুরী-র ‘প্রিয়শত্রু’, কাজী মারুফের ‘অন্যমানুষ’ কিংবা শাকিব খানের ‘খুনি শিকদার’-এর কথা। এ কাজগুলো ছিল দুর্দান্ত। এগুলোর পরে ডিজিটাল সময়ের ছবিতে একমাত্র তাসকিন রহমানের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ব্যতীত এ ধরনের চরিত্র আর নেই। এর মধ্যে নতুন আরেকটি সাইকোপ্যাথ থ্রিলার ছবি যোগ হলো ‘লাইভ’। পরিচালনায় শামীম আহমেদ রনী।
শামীম আহমেদ রনী বাণিজ্যিক ছবির ভাষা বোঝেন তবে তার প্রেজেন্টেশনে কিছু সীমাবদ্ধতা সব ছবিতেই দেখা গেছে। তার আগের ছবিগুলোর থেকে ‘লাইভ’ ভালো নির্মাণ ছিল।
ছবির গল্প সিম্পল। মাহী ও সাইমন সাদিক দম্পতির জীবনে হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া খুন এবং সে খুনের পেছনে নির্মম সত্যের একটা নাটকীয় উন্মোচন।
সাইকোপ্যাথ চরিত্রে সায়মন সাদিকের চরিত্রটি ছবির সেরা চরিত্র ছিল। তার জন্য নিঃসন্দেহে এটা ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য সংযোজন হয়ে থাকবে। চ্যালেঞ্জিং তো ছিলই এবং তার অভিনয় বেশ ভালো ছিল। লাউড অ্যাকটিং-এর জায়গাতে ক্ষেত্রবিশেষে দুর্বলতা লক্ষণীয় তবে তার চেষ্টাটা ছিল ভালো করার। মাহীর প্রথমদিকের এবং শেষেরদিকের চরিত্রায়ণের বৈচিত্র্য ছবির গুরুত্বপূর্ণ দিক। তার অভিনয়ও ভালো ছিল বিশেষ করে সিরিয়াস সময়ে। আদর আজাদের অল্প সময়ের উপস্থিতিও প্রমিজিং। তার অভিনয় ন্যাচারাল। শিবা সানুর জন্য নতুন ধরনের চরিত্র ছিল। তার বেশিরভাগ ছবির উপস্থিতি ছিল মূল খলনায়কের সহকারী যে শুধু চিৎকারসর্বস্ব অভিনয় করত, সেখান থেকে বেরিয়ে শান্ত একটি চরিত্র গোয়েন্দা কর্মকর্তার। এটাতে ভালো মানিয়ে নিয়েছে। সাবেরী আলম অল্প সময়ে চমৎকার।
ছবির প্রথমার্ধ্বের স্লো স্টোরি টেলিং কিছুটা ধৈর্যচ্যুতির কারণ হলেও দ্বিতীয়ার্ধ্বে মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং ছবির নামের সদ্ব্যবহার চলতে থাকে তবে সেটা কী ছিল দর্শক ছবি দেখে জেনে নেবে। প্রথমার্ধ্বে আরো কিছু মসলাদার উপকরণ যোগ করা যেত গল্পে। ক্লাইমেক্সটা পুরো ছবির সাথে তুলনা করলে ভিন্ন ছিল।
সাইকোপ্যাথ থ্রিলার ছবির নির্মাণ যেভাবে কমে গেছে সেই পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করলে ‘লাইভ’ ভালো প্রচেষ্টার ছবি হয়ে থাকবে।
রেটিং: ৬.৫/১০