সালতামামি ১৯৮৮: স্বাক্ষর, অমর, ভেজা চোখ ও নীতিবানের সাফল্যের বছর
এ বছর মুক্তি পায় ৫২টির মতো সিনেমা। যদি বিচিত্রার ৯ ডিসেম্বর সংখ্যার সালতামামিতে উল্লেখ করা হয়, যৌথ প্রযোজনার একটি ছবি কম উল্লেখ করা হয়েছে। তাই মূল সালতামামিতে দেয়া ৫১ এর স্থলে ৫২টি লেখা হলো। তবে এ সংখ্যাও নির্দিষ্ট নয়। কেন না প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যদি রিলিজ কো-অর্ডিনেশন কমিটির দেয়া শিডিউল মাফিক ছবি মুক্তির কোনো হেরফের না হয় তাহলে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছবি মুক্তির পরিমাণ হবে ৬১টি।’
কোলাজ: অমর ও ভেজা চোখ
অবশ্য এ সংখ্যাকেও তুলনামূলকভাবে কম বলা হয়। প্রতি বছর গড়ে যেখানে ৮০টি ছবি মুক্তি পায় সে ক্ষেত্রে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা নীচে। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আন্দোলনের জন্যে এ বছর তিন মাস বলতে গেলে একটিও নতুন ছবি মুক্তি পায়নি!
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৫২টি ছবি মুক্তি পায় পেয়েছে। এর মধ্যে রঙিন ছবির সংখ্যা ৩৮টি, আংশিক রঙিন ১টি ও সাদা-কালো ১৩টি।
স্বাক্ষর ছবিতে শাবানা ও রাজ্জাক
১৯৮৮ সালের ১১ মাসে নায়িকাদের মধ্যে অঞ্জুর সর্বাধিক ৯টি ছবি, নায়কদের মধ্যে ইলিয়াস কাঞ্চনের ৯টি ও চরিত্রাভিনেতাদের মধ্যে সর্বাধিক ১৪টি ছবি মুক্তি পেয়েছে জাম্বুর।
এ ছাড়া শাবানা ৮টি, ববিতা ১টি, সুচরিতা ৬টি, রানী ৫টি, চম্পা ৩টি, দিতি ৪টি, অঞ্জনা ৫টি, জুলিয়া ১টি, সুবর্ণা মুস্তাফা ১টি, সুনেত্রা ৫টি, নীপা মোনালিয়া ৬টি, ফারজানা ববি ৩টি, অলিভিয়া ১টি, কবিতা ১টি, পাপড়ি ১টি, টিনা ৪টি, সুচিত্রা ১টি, জিনাত ১টি, নিশাত ৩টি, নন্দিনী ২টি, দিলারা ৩টি, অরুণা বিশ্বাস ১টি, পুনম ১টি ও দোয়েল ১টি ছবির নায়িকা। নায়কদের মধ্যে রাজ্জাক ৭টি, আলমগীর ৫টি, সোহেল রানা ৬টি, ওয়াসিম ৭টি, বুলবুল আহমেদ ২টি, ফারুক ৪টি, জাভেদ ১টি, জসিম ৭টি, জাফর ইকবাল ৬টি, মাহমুদ কলি ২টি, সোহেল চৌধুরী ৩টি, রুবেল ১টি, বাপ্পারাজ ২টি, সাত্তার ১টি, আলীরাজ ২টি, আফজাল ১টি, সুব্রত ১টি, জসিম মোহাম্মদ ১টি ও মিঠন ৩ ছবিতে অভিনয় করেছেন।
নীতিবান ছবির দৃশ্য
১৯৮৮ সালের যৌথ প্রযোজনার ৫টি ছবি মুক্তি পেয়েছে- বলবান, দুনিয়া, বাপের বেটা, সর্পরাণী ও বিরোধ। এর মধ্যে বক্তব্যপ্রধান ও সুনির্মিত হলো ‘বিরোধ’। তবে শাবানা ও রাজেশ খান্না অভিনীত ব্যবসায়িকভাবে সাফল্য পায়নি। এছাড়া এসব ছবিতে বিদেশী তারকা নাদিম, মোহাম্মদ আলী, নীলো, প্রেম চোপরা, অনুপ কুমার ও সবিতার মতো বেশ কিছু খ্যাত-অখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রীকে এদেশের পর্দার দেখা গেছে। অপর দিকে স্থানীয় ছবির সুবাদে এদেশের পর্দায় উদ্ভাসিত হতে দেখা গেছে শবনম, আলপনা গোস্বামী ও দেবশ্রীকে।
পরিচালকদের মধ্যে একমাত্র স্বপন সাহারই ৩টি ছবি মুক্তি পেয়েছে— কর্তব্য, যাদুমহল ও শক্তিশালী। ২টি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে হাফিজ উদ্দিনের অবদান ও পথে হলো দেখা এবং জহিরুল হকের কুসুমপুরের কদম আলী ও মরণপণ।
অমর ছবির দৃশ্য
এ বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি হচ্ছে স্বাক্ষর, অমর, ভেজা চোখ ও নীতিবান। বিচিত্রায় বলা হচ্ছে, এই চার ছবির প্রথম ছবিটি বিদেশী লোকেশনে চিত্রায়িত এবং পরের ছবিটি সাদাকালোয় নির্মিত। কিন্তু এর মধ্যে শিবলী সাদিকের ‘ভেজাচোখ’ ভারত ও ‘নীতিবান’ থাইল্যান্ডের লোকেশনে নির্মিত। এছাড়া ‘অমর’ সাদা-কালো কিনা আমরা এখন নিশ্চিত নই। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ বছর সাদা-কালো ছবি নির্মাণের প্রবণতা একেবারে কমে এসেছে।