সালমান শাহ-সামিরার প্রেম ও পরিণয় নিয়ে সিনেমা, বাধ সাধলেন নীলা চৌধুরী
সম্প্রতি ছটকু আহমেদের সঙ্গে সামিরার ছবি প্রকাশের পর অনেকেই ফেসবুকে ক্ষোভ করেন …
চট্টগ্রামের একটি ফ্যাশন শোতে ১৯৯০ সালের ১২ জুলাই সালমান শাহ ও সামিরার পরিচয়। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা ও প্রেম। ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন সালমান-সামিরা। তাদের সেই প্রেমকাহিনি নিয়ে সিনেমা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন নির্মাতা ছটকু আহমেদ। নাম ‘স্বপ্নের রাজকুমার’। সেই জানতে পেরে আপত্তি করেন সালমান ভক্তরা, যারা আজো সামিরাকে এ গল্পের ভিলেনই মনে করেন। তবে তাতে চূড়ান্ত সিলমোহর দিলেন এ নায়কের নীলা চৌধুরী। তার আপত্তিতে ভেস্তে গেল সিনেমার কাজ।
ছটকু আহমেদ জানিয়েছেন, সালমান-সামিরার প্রেমকাহিনি পর্দায় তুলে ধরার পরিকল্পনা ছিল নায়কের প্রথম সিনেমার নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের। সামিরার কাছে তাদের প্রেমকাহিনি শুনে সাজিয়েছিলেন গল্প। গত বছর সোহানের মৃত্যুর পর সেই গল্পে প্রাণ দিতে চেয়েছেন ছটকু আহমেদ। নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রি-প্রোডাকশন। শিল্পী নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে অডিশনের মাধ্যমে। কিন্তু নীলা চৌধুরী আপত্তি জানালে তা বন্ধ হয়ে যায়।
ছটকু আহমেদ বলেন, ‘২০২০ সালে সোহান সিনেমাটির উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই সময় আমি আর সোহান সামিরার সঙ্গে কথা বলে সিনেমার গল্প সাজিয়েছিলাম। তাঁদের প্রেমকাহিনি অনেক সিনেম্যাটিক। সামিরার মুখে সেই গল্প শুনে আমাদের ভালো লেগেছিল। এ বছর সালমানের জন্মদিনের আগে আমার গল্পটির কথা মনে পড়ে। সালমান ও সোহানের স্মরণে সিনেমাটি তৈরির উদ্যোগ নিই। সামিরার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে সম্মতি দেয়। খবর পেয়ে কয়েকদিন আগে নীলা চৌধুরী লন্ডন থেকে ফোন করে আমাকে জানান, সালমানকে নিয়ে কোনো সিনেমা বানানো যাবে না। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া আছে তাঁদের। নীলা চৌধুরীর এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সিনেমাটির কাজ স্থগিত করেছি।’
‘স্বপ্নের রাজকুমার’ সিনেমাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কষ্ট পেয়েছেন নির্মাতা। ছটকু আহমেদ বলেন, ‘এটি সালমানের বায়োপিক নয়; দুই তরুণ-তরুণীর প্রেমকাহিনি। এই গল্পে নীলা চৌধুরীর তেমন ভূমিকা নেই। এরপরেও কেন তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। গল্পটি সামিরার। তাই সামিরার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সামিরার সঙ্গে আমার ছবি দেখার পর সালমানের বেশ কয়েকজন ভক্ত গালাগাল করেছে। সব মিলিয়ে এখন আর সিনেমাটি নিয়ে ভাবতে চাইছি না।’
ছটকু আহমেদ ও সামিরা হক
ছটকু আহমেদ আরও বলেন, ‘এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়াতে চাই না। এই গল্পটা আটকে থাকলে তাঁদের কী উপকার হবে, সেটা বুঝতে পারছি না। ২৮ বছর ধরে হত্যা-আত্মহত্যা নিয়ে যে চিৎকার করা হচ্ছে, তাতেই-বা সালমানের কী লাভ হলো? এই সময়ের মধ্যে তো সালমানের নামে কোনো একটা ইনস্টিটিউট হয়নি, তাকে নিয়ে কোনো বই বের হয়নি। তাঁদের মুখে একটাই গল্প—হত্যা, নাকি আত্মহত্যা?’
আপাতত কাজ বন্ধ হয়ে গেলেও ভবিষ্যতে সিনেমাটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে করতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ছটকু আহমেদ।
উল্লেখ্য যে, সালমানের মৃত্যুর পর অনেক বছর লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন সামিরা। এর মাঝে দুই দফা বিয়েতেও পিড়িতে বসেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ নায়কের মৃত্যুবার্ষিকী এলে সামিরার মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে চটকদার খবর প্রকাশ করে আসছে কিছু সংবাদমাধ্যম। অথচ সেইসব ঘটনার সত্য বা মিথ্যা নির্ণয়ের উপায় এখন নেই। যে সালমানকে নিয়ে এত কথা, তিনি কোনো ধরনের উত্তর দেয়ার উর্ধ্বে। তেমন এক সময় সামিরার সঙ্গে দেখা করেন নির্মাতা ছটকু আহমেদ।