হল পরিদর্শন – জোনাকি সিনেমা
ভালোবাসার রঙ সিনেমা সম্পর্কে কোন বাড়তি আকর্ষন ছিল না, আগ্রহ ছিল একটাই – ডিজিটালে নির্মিত সিনেমা ডিজিটাল প্রজেকশনে কিরকম লাগে সেটা দেখা। এ কারণেই বাসার কাছেই বলাকা সিনেমা হল থাকা সত্ত্বেও নয়াপল্টনে জোনাকী সিনেমা হলে দুপুর তিনটার শো-তে দেখতে গেলাম ভালোবাসার রঙ।
ভরভরন্ত অবস্থা। টিকেট কাউন্টারে লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছে লোকে, কিন্তু টিকেট কাউন্টার বন্ধ। বাহিরে তিন চারটে লোক টিকেট বিক্রি করছে। পঞ্চাশ টাকার ডিসি টিকেটের দাম ৮০ টাকা। শলাপরামর্শ করে দরদাম করে এক পয়সাও কমানো গেল না। তিনটায় শো শুরু হবে, সুতরাং টিকেট কেটে তৃতীয় তলায় চলে এলাম।
এখানেও লম্বা লাইন। দর্শকরা সবাই টিকেট হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। ভেতরে সম্ভবত শো চলছে। বুঝলাম না, জুমার নামাজের আগে শো শুরু হয় না সাধারণত, আজকের ঘটনা কি? দাড়িয়ে কথা বলতে বলতে আধাঘন্টা পার। তারপর শো শেষ হল, দর্শকরা বের হতে লাগল। আমরা দেয়ালের সাথে সেঁটে দাড়ালাম। তারপর হলের দরজা খুলে দেয়া হল।
হুড়মুড় করে সব দর্শক একসাথে ঢুকে পড়ল হলের ভেতরে। টিকিট চেক করার কেউ নাই, সিট দেখিয়ে দেয়ার তো নয়ই। যে যেখানে পেরেছে বসে পড়ল। আমরা টিকেট কেটেছি উপরের সারিতে বসে দেখবো বলে, কিন্তু ঢুকতে দেরী করার কারনে বসতে হল ডিসির একদম সামনের সারির একদম ডান কোনায়। 🙁
বসতে না বসতেই জাতীয় পতাকা প্রদর্শন, সাথে সংগীত। দাড়িয়ে দেখলাম সব মিলিয়ে বোধহয় পনেরোজনও দাড়ায় নি। অদ্ভুত ব্যাপার। তারপর সিনেমা শুরু হয়ে গেল। দারুন প্রিন্ট। মন জুরায়ে গেল।
মাঝের ব্রেকে বের হতে গিয়ে দেখি করিডোরে সোফা চেয়ার বসে গেছে। সেখানেও লোকজন। এত দর্শক! এদের সাথে সিনেমা দেখার মজাও অন্যরকম। নায়ক বাপ্পী যে কোন অ্যাকশনে দৌড় দেয়া মাত্র দর্শক হোওওওও করে চিৎকার করে উঠে। এই চিৎকার করল অপ্রয়োজনীয় আইটেম সং এর সময়ও।
সিনেমার শেষে শ্যুটিং এর সময়কার নানা ভুলভ্রান্তির দৃশ্য চলছিল, পাশে ক্রেডিট টাইটেল। সিনেমার প্রদর্শকরা হলের পর্দাই শুধু বন্ধ করে দেয় নি, প্রজেক্টরও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে মজার একটা বিষয় মিস হয়ে গেছে।
যখন বের হচ্ছি, তখনও প্রচুর দর্শক। টিকেটের চেয়ে বেশী হবে বোঝাই যাচ্ছে। টিকেট চেকারদের দেখা গেল তারা মহিলা দর্শকদের স্পেশাল গুরুত্ব দিয়ে ঢুকিয়ে দিচ্ছে – কোন বকশিশ নিচ্ছে কিনা বুঝলাম না।
চমৎকার অভিজ্ঞতা। শুক্রবার দুপুরে আরেকবার সিনেমা দেখতে আসার আগে দুবার ভাবতে হবে।