হাইতিতে বিপত্তি! ভিসা জটিলতায় নতুন ভূমিকায় পরিচালক-প্রযোজক
প্রথমবারের মতো ক্যারিবীয় দ্বীপ হাইতিতে হলো বাংলাদেশি সিনেমার শুটিং। আর সেই ছবি ‘নীল মুকুট’ নিয়ে ভীষণ বিপত্তিতে পড়েন পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন ও প্রযোজক সারা আফরীন। শেষমেষ তারাই সামলেছেন কারিগরি দিন। সম্প্রতি নিজেরাই খবরটি জানালেন।
‘নীল মুকুট’ ছবির দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ মিনিট, যার মধ্যে ৬৫ মিনিটই শুটিং হয়েছে অর্ধেক পৃথিবী দূরের দেশ হাইতিতে। আর সেই শুটিং করতে গিয়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে ক্রুদের কেউ ভিসা না পাওয়ায় তৈরি হয়েছিল এক জটিল পরিস্থিতি।
পরিচালক কামারের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশ থেকে হাইতি যেতে হলে আপনাকে নিউইয়র্ক হয়ে যেতে হবে, সেইক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকাটা জরুরি। আমার আর সারার সেই ভিসা থাকলেও বাকি ক্রুদের কারো মার্কিন ভিসা ছিলো না। এর মধ্যে আবার যাদের নিয়ে শুটিং তাঁরা সব অনেক আগেই পৌঁছে গেছে হাইতি। আমি যদিও খুব ছোট ইউনিটে কাজ করে অভ্যস্ত, তবু একদম কোন ক্রু ছাড়া হাইতির মতো এতদূর দেশে গিয়ে শ্যুটিং করার সাহস করাটাই একটা বিরাট যুদ্ধ ছিল।’
সেই যুদ্ধ নিয়ে সারা বললেন, ‘প্রায় দুই-বছরের অনুমতি জটিলতা কাটিয়ে যখন হাইটিতে শুটিংয়ের সব ঠিক হলো, শেষ মুহূর্তে হলো এই ভিসা জটিলতা। এর আগে কখনো আমাকে ইকুইপমেন্ট নিয়ে সরাসরি প্রোডাকশনে কাজ করতে হয় নাই। কিন্তু হাইতিতে যেহেতু আর কোন উপায় ছিলো না, হয় আমাদেরকেই শুটিং করতে হবে নয়তো শুটিং বাতিল করতে হবে – এইরকম একটা পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিলাম যা করার আমরাই করবো।’
এরপর প্রায় মাসখানেক লাইভ সাউন্ড রেকর্ডিং শিখলেন সারা, আর কামার তো সেই ‘শুনতে কি পাও!’ থেকে নিজেই ক্যামেরা চালান – মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহকের একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কারও আছে তার ঝুলিতে। তারপর প্রস্তুতি নিয়ে কয়েকটা পেলিক্যান স্যুটকেস ভর্তি শ্যুটিং গিয়ার নিয়ে দুইজন রওনা দিলেন মার্কিন যুকরাষ্ট্র, তারপর সেইখান থেকে আবার হাইতি। এবারে নির্মিত হয় ডকু-ফিকশন ‘নীল মুকুট’।
আগেই কামার জানিয়েছিলেন, প্লেনে একটা কান্নাকে অনুসরণ করতে গিয়েই একরকম অপরিকল্পিত সন্তান ‘নীল মুকুট’-এর জন্ম হয়েছে। কোন উৎসবে পাঠানোর আগে দেশে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েও করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর ২৭ মার্চ ছবিটির মুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
অবশেষে আগস্টে নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে আসছে ‘নীল মুকুট’।