১৯৮৪: জীবনের গল্প বলা সিনেমাগুলো
ভাত দে: এ ছবি যখন আমি প্রথম দেখি, তখন পরিচালক আমজাদ হোসেন সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না।
আশির দশকে যদিও নয়নমণি, সুন্দরী, কসাই, গোলাপী এখন ট্রেনে, ভাত দে ছবিগুলো দেখি। কিন্তু পরিচালকের সঙ্গে পরিচয় ছিল না।
তখন ছবি দেখতাম অ্যাডভেঞ্চার মনোভাব নিয়ে। পরিচালক কে? কাহিনীকার কে? তা নিয়ে ভাবতাম না। তবে ছবির কাহিনী নিয়ে ভাবতাম।
আমজাদ হোসেন সম্পর্কে জানতে পারি হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক ‘অয়োময়’ যখন প্রচার হয়। এ নাটকে তিনি সোলায়মান চরিত্রে অভিনয় করে। সোলায়মান মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যায়। তার স্ত্রী ছিল মদিনা (তারানা হালিম)। তখন সোলায়মান চরিত্রে রূপদানকারী আমজাদ হোসেনকে নিয়ে সিনে পত্রিকাগুলো প্রচ্ছদ কাহিনী করতে থাকে। সে কাহিনী পড়ে পড়ে জানতে পারি আমজাদ হোসেন সম্পর্কে।
যাকে ঈদের নাটকে জব্বার আলী হিসেবে জানতাম। সেই আমজাদ হোসেন যে সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের রত্ন তা আগে জানতাম না। এরপর আমজাদ হোসেনের উপন্যাস পড়তে থাকি একটার পর একটা। আর মুগ্ধ হতে থাকি।
কাহিনী সংক্ষেপ: আনোয়ার হোসেন গায়ক। গাঁয়ে গাঁয়ে গান গেয়ে বেড়ান। গান গেয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালান। কিন্তু সংসার চলে না। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আনোয়ারা আর মেয়ে আঁখি আলমগীর। কিশোরী বয়স।
আনোয়ার হোসেন ঘর সংসারের প্রতি উদাসহীন। গান গাওয়ার জন্য যখন অন্য গ্রামে বা গঞ্জে যান। সহজে আর আসেন না। অথচ ঘরে স্ত্রী- কন্যার জন্য খাবারের সুব্যবস্থা থাকে না। দিনের পর দিন স্ত্রী কন্যা ঘরে উপবাস থাকে।
এমনি একবার আনোয়ার হোসেন গান গাইতে চলে যান গঞ্জে। দিনের পর দিন আসে না। ঘরে এক মুঠো চাল নেই যে রান্না করে মা ও মেয়ে খাবে। ক্ষুধায় অতিষ্ঠ হয়ে আনোয়ারা গ্রামের এক ঘরে ভাত চুরি করে। ভাত চুরি করতে গিয়ে গৃহস্থের হাতে ধরা পড়ে। আনোয়ারাকে ভাত চুরির দায়ে মারধর করা হয়।
আনোয়ার হোসেন আসে। বাজারখরচ নিয়ে আসে। সবাই মিলে গরমগরম ভাত খায়। অনেকদিন পর আবার ঘরে আনন্দ ফিরে আসে।
কয়েকদিন পর আনোয়ার হোসেন গান গাইতে গঞ্জে যায়। আবারো ঘরে চাল নাই, ডাল নাই। ক্ষুধার জ্বালায় আনোয়ারা অতিষ্ঠ।
আনোয়ারা গাঙে গোছল করতে যায়। সেই গাঙের পাড়ে এক সওদাগরের নৌকা। সওদাগর নৌকায় বসে থালা ভর্তি ভাত খেতে থাকে।
এই দৃশ্য দেখে আনোয়ারার ক্ষুধায় পেটে দোজখের আগুন জ্বলে উঠে। সওদাগর বুঝতে পারে আনোয়ারার ভাতের প্রয়োজন। সওদাগর আনোয়ারাকে এক সানকি ভর্তি ভাত- তরকারি দিলো। তারপর… সেই সওদাগরের সঙ্গে আনোয়ারা পালিয়ে যায়।
আনোয়ারা শুধু তিনবেলা দু-মুঠো ভাত খেতে পর পুরুষের সঙ্গে চলে যায়। ভাতের কষ্টের কাছে পরাজিত হয় স্বামী সংসার। আদরের কন্যা।
আনোয়ারা হোসেন অন্ধ হয়ে যায়। আঁখি আলমগীর বড় হয়ে শাবানা হয়। ‘ভাত দে’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রূপদানকারী শাবানা জরি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। জরির কিশোরী চরিত্রে অভিনয় করেন আঁখি আলমগীর। আঁখি আলমগীর এবং শাবানা জরি চরিত্রে দারুণভাবে নিজেদের প্রতিভা ঢেলে দিয়েছেন।
ভীষণ অভাব আর দারিদ্র্যের মাঝে বড় হয় শাবানা। আনোয়ার হোসেন মারা যাওয়ার পর শাবানা আরো অসহায় হয়ে পড়ে। আনোয়ার হোসেনের এক শিষ্য আলমগীর আসে। শাবানার অবস্থা দেখে তার পাশে দাঁড়ায়।
সমাজপতিরা পাপ-পুণ্যের বিচার করতে জানে কিন্তু অসহায়দের সাহায্য করতে জানে না। শাবানা যখন ঘরে ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করে তখন সমাজপতিরা এক মুঠো ভাত দিতে আসে না। যখন ছেঁড়া শাড়ি পরে ঘরে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে থাকে, তখন কেউ একটি শাড়ি দিতে আসে না। যখন আলমগীর পাশে দাঁড়ালো তখন পাপ-পুণ্যের হিসাব করতে সমাজপতি-রা নেমে পড়লো। আলমগীর শাবানাকে বিয়ে করে সমাজের মুখবন্ধ করে দিল।
শাবানার বিয়ে দেখতে গোপনে আনোয়ারা আসলো। আনোয়ারাকে সেই সওদাগর ক’দিন পরই তাড়িয়ে দেয়। লজ্জা আসেনি স্বামী ঘরে। কন্যার কাছে। কাহিনী এখানেই শেষ নয়, কাহিনী আরো আছে। তবে এই পর্যন্ত-ই আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।
গল্পে অসাধারণ শিক্ষা আছে। অভাব-অনটন থাকবে। যদি স্বামী আনোয়ার হোসেন সংসারের প্রতি মনোযোগী হতেন। যদি স্ত্রীর প্রতি দায়িত্বশীল হতেন। তাহলে স্ত্রী ক্ষুধার জ্বালায় পর পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যেত না।
গল্পে দেখা গেছে ক্ষুধার্ত আনোয়ারাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। যা দেওয়ার উচিৎ স্বামীকে। তিনি গান নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন এবং সংসারের প্রতি উদাসহীন ছিলেন। তাই সংসারে এতো বড় বিপর্যয় হয়।
অভাবে দিনে আমরা যারা স্বামী। স্ত্রীর প্রয়োজনীয় চাহিদা যদি মিটাতে না পারি। তাহলে ভালোবাসা দিয়ে, সময় দিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে সান্ত্বনা দিন। তাতে স্ত্রী বা সন্তান অভাবে বিপথগামী হবে না।
আনোয়ারা যখন ক্ষুধার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে। কন্যার ভাত খাওয়ার চাওয়া পূরণ করতে ভাত চুরি করে।
তখন সবাই আনোয়ারার বিচার করতে মগ্ন ছিল। চুরি করার কারণ নির্ণয় করে- সেই কারণ দূর করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। যদি আসতো তাহলে আনোয়ারা পর পুরুষের সাথে পালিয়ে যেত না। সমাজে কোনো অপরাধ হলে। সমাজে কাজ সেই অপরাধের মূল কারণ নির্ণয় করে। কারণের দাফন করা।
আসুন আমরা আমাদের নিকটতম প্রতিবেশীর চুলার খবর রাখি। চুলায় যদি বিড়াল শুয়ে থাকে। সেই বিড়াল সবাই মিলে তাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। তাহলে সমাজে অপরাধ কমে যাবে।
সমাজে কিছু ধনবান ব্যক্তি আছে। যারা সাহায্যের নামে মূলত দখল করে। ব্যবহার করে। তারপর ছুড়ে ফেলে দেয়। এরা সুযোগ সন্ধানী। এরা অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে থাকে। যেমন আনোয়ারাকে ভাতের লোভ দেখিয়ে সাথে করে নিয়ে যায়। আমরা যদি ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে এইসব তথাকথিত দানবীররা সাতসমুদ্র তের নদী পার হয়ে দানের নামে শোষণ করতে পারবে না।
চলচ্চিত্র হওয়া চাই তো এমন হওয়া চাই।
তালাক : রাজ্জাক একজন পল্লি চিকিৎসক। পঙ্গু। তাই ঘোড়ায় চড়ে চলাফেরা করে।
গ্রামের তরুণ-তরুণী ববিতা ও প্রবীর মিত্রের মাঝে প্রেম। ববিতার পেছনে এক প্রতাপশালী ব্যক্তি লেগেছে। একদিন প্রেমিক জুটি রাতের বেলা প্রেমালাপ করে ফেরার সময় ববিতাকে ঘেরাও করে। ববিতা রাজ্জাকের কাছে সাহার্য্য চায়। নিজ ঘরে ববিতাকে আশ্রয় দেয় রাজ্জাক।
রাজ্জাক ব্যাচেলার। এই সুযোগ নেয় দুষ্কৃতকারীরা। তারা মুহূর্তে রটিয়ে দেয় রাজ্জাকের ঘরে রাতে ছিল ববিতা। এ রটনা প্রবীর মিত্র বিশ্বাস করে।
প্রবীর মিত্রও বিশ্বাস করে রাজ্জাকের সাথে ববিতার কিছু একটা হয়েছে। রাজ্জাক ববিতাকে বিয়ে করে, স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে গ্রামে রটে যাওয়া অপবাদ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু গ্রামের দুষ্কৃতকারীরা চায় না ববিতা ভালো থাকুক। রাজ্জাকের কানে ববিতার পূর্বপ্রেম নিয়ে এটাসেটা বলতে থাকে।
রাজ্জাক একদিন ববিতার সাথে প্রবীর মিত্রকে দেখে ভুল বুঝে রাগের মাথায় তালাক দেয়। এই তালাক কেন্দ্র করে শুরু হয় ভুল ব্যাখ্যার ফতোয়া। দুষ্কৃতিকারী প্রধান ছলেবলে সমাজকে প্রভাবিত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। গ্রামীণ সমাজের কুসংস্কার ও সামাজিক সমস্যা নিয়ে একটি শিক্ষামুলুক চলচ্চিত্র।
অগ্নিপরীক্ষা : সুচরিতা গরীব ঘরের মেয়ে। সহজসরল শান্ত স্বভাবের। ধনীর দুলাল আলমগীরের সঙ্গে পরিচয় এবং প্রেম। আলমগীর সুচরিতাকে বিয়ে করতে চাইলে, আলমগীরের মা রাজি নয়। তবে বাবা রাজি।
অবশেষে আলমগীর সুচরিতার বিয়ে হয়। শাশুড়ি নানাভাবে, নানাছলে যন্ত্রণা দিতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সুচরিতা বাপের বাড়ি চলে যায়। আলমগীরকে আরেকটি বিয়ে করায় মা। ধনীর দুলারী ববিতাকে। নগদ টাকাসহ অনেক যৌতুক পায়।
কিন্তু একি! খাল কেটে কুমির আনা হলো। ববিতা টাকার গরমে, শিক্ষার গরমে শাশুড়ির ওপর নির্যাতন শুরু করে। ববিতা
নির্যাতনে নির্যাতনে শাশুড়ি আগের পুত্রবধূ সুচরিতার ভালোমানুষী উপলব্ধি করে। তখন জানা যায়, ববিতা আলমগীরের স্ত্রী নয়। আলমগীরের বন্ধু জসিমের স্ত্রী। আলমগীর তার মাকে সোজা পথে আনার জন্য বাবা ও বন্ধুর সঙ্গে মিলে এই নকল বিয়ের নাটক করে।
জালিম : জসিম মদ্যপ, বহুগামী, ধনী পুরুষ। প্রতিদিন মাতাল হয়ে নারী নিয়ে ঘরে এসে ফূর্তি করে। একরাতে মদ্যপ হয়ে নারী নিয়ে আসলে ঘরে। স্ত্রী রোজী প্রতিবাদ করলে জসিম তাকে তালাক দেয়। শিশুপুত্র ওয়াসিমকে নিয়ে জসিমের ব্যবসায়ী বন্ধু আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। আনোয়ার হোসেন তালাকপ্রাপ্তা রোজীকে বিয়ে করে।
জসিম প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আনোয়ার হোসেনকে খুন করে। ওয়াসিম জসিমের পুত্র, শাবানা আনোয়ার হোসেনের কন্যা। শাবানা পড়ালেখা শেষ করে পুলিশ অফিসার হয়।
ওয়াসিম পড়ালেখা শেষ করে বেকার। শাবানার ক্লাসমেট জাভেদ শাবানাকে পছন্দ করতো। জাভেদ পড়ালেখা শেষ করে অনেকদিন বেকার থাকার পর জসিমের হয়ে জাল টাকা তৈরি করে।
এফ কবীর চৌধুরী পরিচালিত সামাজিক অ্যাকশন ছবি।
সকাল সন্ধ্যা : আজিম দম্পতি আর আনোয়ার হোসেন দম্পতি পারিবারিক বন্ধু। আজিম গরিব আর আনোয়ার হোসেন ধনী। আনোয়ার হোসেনের শিশু মেয়ে (শাবানা-র জন্মদিনে আজিম দম্পতিকে নিমন্ত্রণ করে। তাদের ভালো পোশাক নাই তাই কেউ যায় না।
ঘরে এক মুঠো চালও নাই। স্ত্রী সুচান্দা, শিশু পুত্রকন্যা (আলমগীর-জুলিয়া) উপবাস।
আজিম জন্মদিনে যায় এবং সুযোগ বুঝে কেক চুরি করে আনে পুত্রকন্যার জন্য। আনোয়ার হোসেন বুঝতে পেরে পিছে পিছে আসে দেখতে। বন্ধুর অবস্থা দেখে বন্ধুকে সহযোগিতা করতে চায় যাতে বন্ধুও নিজ পরিশ্রমে- মেধায় আনোয়ার হোসেনের মতো হয়।
দুই দম্পতি তাদের ছেলেমেয়ের বিয়ে ঠিক করে। তখনো তাদের ছেলেমেয়ে ছোট।
আজিম ধীরে ধীরে ধনী হয় আর আনোয়ার হোসেন হঠাৎ গরিব হয়ে যায়। আনোয়ার হোসেনের বিশ্বস্ত ম্যানেজার চক্রান্ত করে আনোয়ার হোসেনকে দেউলিয়া করে দেয়।
দুই দম্পতির ছেলেমেয়ে বড় হয়। আনোয়ার হোসেনের ছেলে-মেয়ে শাবানা-জসিম। জসিম হোটেলে কাজ করে সংসার চালায়। ছোটবোন শাবানাকে পড়ালেখা শিখায়।
আজিমের ছেলে-মেয়ে আলমগীর জুলিয়া। আজিমের স্ত্রী সুচন্দা ধনী হওয়ার পর চরিত্র বদল করে। অহংকারী ও লোভী হয়ে যায়। যার কারণে অতীতের বিয়ের কথাবার্তা অস্বীকার করে। কিন্তু আজিম তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। শাবানাকে পুত্রবধূ করে আনে। কিন্তু সুচন্দার মতো অহংকারী জুলিয়া স্বীকার করে না জসিমকে।
সুচন্দা যৌতুকের জন্য শাবানাকে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
‘সকাল- সন্ধ্যা’ একটি শিক্ষামুলুক সামাজিক ছবি। আজ যার সকাল কাল তার সন্ধ্যা হতে পারে এমনই মর্মকথার ছবি।
১৯৮৪ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত সব ছবি আমি দেখেছি। হাতে গোনা দু-একটি ছবি ছাড়া প্রতিটি ছবি নির্মল বিনোদন ও শিক্ষাম ছবি। সমাজ, পরিবারের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তৈরি কাহিনী। সিনেমার জন্য যদিও কাহিনীতে নাটকীয়তা বেশি তবুও এইসব কাহিনী বাস্তবতা ছুঁয়ে যেত।
যেমন; আমাদের সমাজে ‘জালিম’ ছবির জসিম আছে। আমাদের সমাজে ‘সকাল সন্ধ্যা’র সুচন্দা আছে। যে অতীত ভুলে অহংকারী হয়।
আমাদের সমাজে ‘ভাত দে’ ছবির সওদাগর আছে। আছে ‘তালাক’ ছবির চরিত্রগুলো।
সিনেমার মতো জীবন নয়, কিন্তু সিনেমা জীবনের মতো। আর সিনেমাকে জীবনের মতো করার দায়িত্ব পরিচালক, কাহিনীকারের।
এ দায়িত্ব যথাযথ পালন না করলেও অনেকটা করেছে আশি দশকের ছবির পরিচালকরা। কাহিনীকাররা। হতে পারে কাহিনী চুরি করা, হতে পারে অনুকরণ করা। তবুও জীবন খুঁজে পাওয়া যেত।