Select Page

মেজবাউর রহমান সুমনের স্মরণীয় দশ নাটক

মেজবাউর রহমান সুমনের স্মরণীয়  দশ নাটক

ছবি : ডেইলি স্টার

বাংলা নাটকে চিরাচরিত ধারা থেকে বেরিয়ে ভিন্ন ভিন্ন গল্পের বুননে যারা দর্শকদের মুগ্ধ করতেন,তিনি তাদের মধ্যে একজন। প্রথম নাটক ‘আমি অরুপার কাছে যাচ্ছি’ দিয়েই তিনি পরিচয় দিয়েছিলেন মেধা,মননের।

এরপর থেকে বানানো শুরু করে একের পর এক প্রশংসিত আলোচিত নাটক। নাটক নির্মানের বাইরে তিনি অনেক বিজ্ঞাপন চিত্র ও বানিয়েছেন,এখনো বানাচ্ছেন। গত বছর উনার নির্মিত সেনাবাহিনীর উপর বিজ্ঞাপনচিত্রটি বেশ সাড়া ফেলেছে,অনন্ত জলিলেই সেই জনপ্রিয় সংলাপ ‘অসম্ভব কে সম্ভব করাই অনন্ত জলিলের কাজ’,সেই জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনটির নির্মাতা তিনিই। নির্মাতার পাশাপাশি তিনি ব্যান্ড দলের সদস্য তিনি,ব্যান্ডের নাম ‘মেঘদল’। সর্বশেষ নাটক বানিয়েছেন ‘সুপারম্যান’,তাও অর্ধযুগ আগে।

সিনেমা বানাবেন বলে অনেকদিন ধরেই নাটক বানাচ্ছেন না,বেশ ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে বানাচ্ছেন নিজের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’,চঞ্চল চৌধুরী,শরিফুল রাজকে নিয়ে গভীর সমুদ্রের মাঝে গিয়ে সিনেমার শূটিং করে এসেছেন। সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী বছর। বছর দুয়েক আগে ‘অস্থির সময়ে স্বস্তির গল্প’ এর সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। মেধাবী এবং অতি পছন্দের এই জনপ্রিয় নির্মাতার জন্য শুভকামনা রইলো।

সুমনের নির্মিত উল্লেখযোগ্য কিছু নাটক-

১. তারপর ও আঙুরলতা নন্দকে ভালোবাসে (২০০৯): দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসানের ক্যারিয়ারে মেজবাউর রহমান সুমন নামটি বেশ উল্লেখযোগ্য। নাট্যঙ্গনে জয়া আহসানের সবচেয়ে আলোচিত কাজ ‘তারপরও আঙুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’। ‘আঙুরলতা’ নামক একজন পতিতার গল্প উঠে এসেছিল এই টেলিফিল্মে।বিমল করের উপন্যাস অনুপ্রেরণায় তিনি এটি নির্মাণ করেছিলেন,প্রচারের পর থেকেই নাটকটি প্রশংসায় ভাসতে থাকে। জয়ার সহশিল্পী হিসেবে প্রথমবারের মত অভিনয় করেন নির্মাতা অনিমেষ আইচ। দর্শক জরিপে প্রথমবারের মত মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন এই নাটক দিয়েই।

২. ফেরার কোন পথ নেই, থাকে না কোন কালে (২০১০): মেজবাউর রহমান সুমন- জয়া আহসান- অনিমেষ আইচ এই ত্রয়ীকে আবার একসাথে দেখা গিয়েছিল এই ‘ফেরার কোনো পথ নেই,থাকে না কোনো কালে’ টেলিফিল্মে। দেশজুড়ে এক সময় সিরিজ বোমা হামলা সংঘটিত হয়, সেই দলের ই এক সক্রিয় সদস্য অনিমেষকে অজান্তে ভালোবেসে ফেলেন জয়া, পরবর্তীতে নানা ঘটনা পেরিয়ে জয়াই এগিয়ে আসেন দু:সময়ের কান্ডারি। এটিও জয়া আহসানের অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে বিবেচিত।

৩. নুসরাত,সঙ্গে একটি গল্প (২০০৭): নুসরাত ও তাঁর এক মেয়ে,মহাবিপদে পড়ে হন্যি হয়ে শুধু একটু আশ্রয় খুঁজে,কিন্তু সে পায় না। এই খোঁজে সঙ্গী হিসেবে আছেন একজন সি এন জি ড্রাইভার। এই নিয়েই মেজবাউর রহমান সুমনের নাটক ‘নুসরাত,সঙ্গে একটি গল্প’। নাম ভূমিকায় অপি করিমের অন্যতম সেরা অভিনয়,অর্জন করে নিয়েছিলেন সমালোচক বিভাগে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। এই নাটকে অপি করিমের সহশিল্পী ছিলেন আনিসুর রহমান মিলন।

৪. তারপর পারুলের দিন (২০০৮): সংসার ও বাস্তবিক দায়িত্বে বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে হয়নি পারুলের, অবশেষে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। মেয়ে হয়েও নিজের বিয়ের প্রস্তুতি নিজেই নিচ্ছে,সঙ্গে নানা স্বপ্ন বুনতে থাকে। এই গল্প নিয়েই মেজবাউর রহমান সুমনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘তারপর পারুলের দিন’, নাম ভূমিকায় যথারীতি মেধার পরিচয় দিয়েছেন জয়া আহসান।

৫. আমি অরুপার কাছে যাচ্ছি (২০০৫): মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম নাটক এটি, বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা বেকার শফির জীবনে প্রেমিকা অরুপার কাছে শান্তি খুঁজে পায়। দুইজনেই ঠিক করে বিয়ে করবেন, সেই উদ্দ্যেশ্যেই শফি বেরুলেন, কিন্তু ঘটনা পরিক্রমায় আর যাওয়া হয় না, ঐদিকে অরুপা অপেক্ষা করছে। এই নিয়ে নাটক ‘আমি অরুপার কাছে যাচ্ছি’। অভিনয় করেছিলেন শোয়েব ও কুসুম শিকদার।

৬. শহরতলীর আলো (২০০৭): চার্লি চ্যাপলিনের ‘সিটি লাইটস’ অনুপ্রেরণায় তিনি নির্মাণ করেন ‘শহরতলীর আলো’। মেজবাউর রহমান সুমন- জয়া আহসান জুটির আরেকটি সেরা কাজ, এই নাটকে প্রথমবারের মত অভিনয় করেন পার্থ বড়ুয়া।

৭. দখিনের জানালা খোলা, আলো আসে আলো যায় (২০০৬): একটি বাড়িতে আত্বহত্যা করে এক কবি,তার অনেকদিন পর এই বাড়িতে ভাড়া আসেন এক নব- দম্পতি। একাকী স্ত্রী খুঁজে পায় কিছু কবিতা, এরপর! এই গল্প নিয়েই মেজবাউর রহমান সুমন নির্মাণ করেন ‘দখিনের জানালা খোলা,আলো আসে আলো যায়’,এই নাটকের জন্য তিনি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন। অভিনেত্রী তানভীন সুইটির অন্যতম সেরা কাজ এটি।

৮. অরুপার জন্য (২০১০): মেজবাউর রহমান সুমনের ‘অরুপা’ সিরিজের আরেকটি নাটক ‘অরুপার জন্য’। ইন্তেখাব দিনারের সেরা অভিনয়, জয়া আহসানে বোন কান্তা মাসউদের প্রথম অভিনয় সঙ্গে দারুণ গল্পে বেশ মুগ্ধতার নাটক।

৯. কফি হাউজ (২০০৭): মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘কফি হাউজ’। মান্না দের বিখ্যাত গানের অনুপ্রেরণায় নাটকটি তিনি নির্মাণ করেন। অভিনয়ে ছিলেন জয়া আহসান, মিলন, সজল, তিশা ও অপূর্ব।

১০. ধূলোমেঘের জোৎস্না ভ্রমণ (২০০৯): জনপ্রিয় এক নায়িকার সাথে লাইব্রেরীতে এক সাধারণ যুবকের পরিচয়, এরপর শুরু হয় নানা ঘটনাপ্রবাহ। রওনক হাসানের রচনায় মেজবাউর রহমান সুমন নির্মান করেন ‘ধূলোমেঘের জোৎস্না ভ্রমণ’, অভিনয় করেছিলেন তারিন ও অপূর্ব।

এ ছাড়া বানিয়েছেন চান্দের গাড়ী, মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া, স্মিতা সাদা জামা এইসব-সহ আরো কয়েকটি নাটক।


Leave a reply