‘নীল মুকুট’ মুক্তিতে কোনো বাধা নেই
বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে কামার আহমাদ সাইমনের নতুন ছবি ‘নীল মুকুট’। কয়েকদিন আগেই কামার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোনো উৎসবে দেখানোর আগে দেশেই মুক্তি দেবেন ‘নীল মুকুট’! আজকে তাই সেন্সর ছাড়পত্র হাতে পেয়ে দারুণ খুশি কামার। জানালেন, “সাম্প্রতিক যেহেতু কয়েকটা ছবি সেন্সর বোর্ডে আটকে গিয়েছিলো, তাই স্বাভাবিক কারণেই একটু চিন্তিত ছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডকে নীল মুকুট আনকাট ছাড় দেওয়ার জন্য।”
কামারের প্রথম ছবি ‘শুনতে কি পাও!’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারসহ, প্যারিসের সিনেমা দ্যু রিলে গ্রাপি ও মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণশঙ্খসহ দশটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়েছিলো, দেখানো হয়েছিলো প্রায় অর্ধ-শতাধিক উৎসবে।
তারপর থেকেই ‘শিকলবাহা’ ও ‘অন্যদিন’র প্রযোজনা নিয়ে প্রযোজক সারা আফরীনের সাথে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামার। আলোচনায় ছিলো শিকলবাহা, যার চিত্রনাট্যের জন্য ইতিমধ্যেই বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পেয়েছেন সম্মানজনক ডব্লিউসিএফ, ‘অন্যদিন’র চিত্রনাট্যের জন্য সম্মানিত হয়েছেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম মঞ্চ লোকার্নোর পিয়াতজা গ্রান্দায়, পেয়েছেন ওপেন ডোর্সের শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার, আর্তে ইন্টান্যশনাল প্রাইজ। কানের লা এতেলিয়ার থেকে প্রযোজক সারাসহ কামার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ‘অন্যদিন’র জন্য, যেখানে উৎসব কর্তৃপক্ষের নিমন্ত্রণ ছাড়া নিজে থেকে কোন নির্মাতা আবেদনই করতে পারেন না। সেই বিচারে ‘নীল মুকুট’ একেবারেই আলোচনার বাইরে নতুন ছবি।
এই প্রসঙ্গে কামার জানান, ‘প্লেনে যাচ্ছিলাম, ‘শিকলবাহা’ বা ‘অন্যদিন…’–এর কোনো একটা কাজে ইউরোপযাত্রায়ই ছিলাম। প্লেনের একটা কান্না আমাকে খুব ভাবিয়েছিল…প্লেনের লম্বা সময়টা কাটিয়েছি কয়েকটা সিকোয়েন্স লিখে। তারপরই শুটিং, ‘অন্যদিন…’ বা ‘শিকলবাহা’র ফাঁকে ফাঁকেই… কিন্তু সম্পাদনার টেবিলে গিয়ে হলো ফুটেজের সাথে প্রথম দেখাতেই প্রেম! তারপর বছরজুড়ে অন্য দুই কাজের ফাঁকে ফাঁকে সেই ছবির সঙ্গে সহবাস এবং অপরিকল্পিত ছবির জন্ম… নাম যার নীল মুকুট।”
উৎসবের আগেই দেশে মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে কামার বলেন, ‘উৎসবে বা উৎসবের বাইরে নানান আয়োজনে বিদেশে আমার ছবিতো নিয়মিতই দেখাচ্ছে… প্যারিসের শতবর্ষী লুক্সার থিয়েটার থেকে জর্জ পম্পিদ্যু সেন্টারে এমনকি কয়েককদিন আগেও দেখানো হলো ফ্রাঙ্কফুর্টে জার্মানীর ফিল্ম মিউজিয়ামে। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, ‘মাটির ময়না’র পর তারেক মাসুদের ‘অন্তর্যাত্রা’, ‘নরসুন্দর’ বা ‘রানওয়ে’ কোনটাই বিদেশী উৎসবে তেমন একটা যায়নি। কারণ তাঁর কাছে ছবিটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, উৎসবটা না। আমি মনে করি নির্মাতার জন্য উৎসব অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, কিন্তু উৎসবের জন্যই ছবি না। এই আলোচনা তোলাটা আমাদের সময়ে জরুরী মনে করেছি, তাই ঠিক করেছি উৎসব ছাড়াই দেশে মুক্তি দিবো একটা ছবি। যেহেতু ‘নীল মুকুট’, ‘অন্যদিন…’ আর ‘শিকলবাহা’র মধ্যে ‘নীল মুকুট’–এর সব কাজ শেষ, তাই আগেই ঠিক করেছিলাম, কোনো উৎসবের আগে দেশেই মুক্তি দেব ‘নীল মুকুট’!