আরো ভালোবাসবো তোমায় (প্লাস-মাইনাস)
মুভি রিভিউঃ আরো ভালোবাসবো তোমায়
প্লাস
০১- পরিমনি – অত্যন্ত সুন্দর একটি মেয়ে। মেকাপ সুন্দরী না। একেবারে খাঁটি সুন্দর চেহারা। চোখ, নাক, হাসি। অভিনয়টাও তার বেশ ভালো। প্রেমের ছবির জন্য পরিমনি নিঃসন্দেহে নির্ভরযোগ্য এক অভিনেত্রী। একটু মোটা। তবে সবমিলিয়ে এই সিনেমার সবচেয়ে বড় স্টার পরিমনি।
০২- চম্পার চরিত্র এবং অভিনয় – অত্যন্ত মজার একটা চরিত্র দেখলাম অনেকদিন পর। খুবই সাধারন কিন্তু উপভোগ্য। চরিত্রটিতে চম্পা অভিনয়ও করেছেন সেই রকম!
০৩- বরিশাইল্যা টেক্সি ড্রাইভার – ন্যাচারাল কমেডি যাকে বলে। ছোট্ট চরিত্রটি একটা দৃশ্যেই মাতিয়ে গেছে। কি যে মজার মজার কথা বললো সে। লাভড্ ইট।
০৪- এস এ হক অলিকের সহজ, সুন্দর নির্মানশৈলী – খুবই সহজ, সুন্দর ভাবে নির্মাতা তার কাজ করে গেছেন। তার কাজ খুব অসাধারন কিছু না, তবে অন্তত বিশ্রী রকম দৃষ্টিকটুও লাগেনি কোথাও। কম বাজেটে এর চেয়ে ভালো করা যেতো বলে আমি মনে করি না।
মাইনাস
০১- ফালতু গল্প, আরো ফালতু ক্লাইমেক্স, তার চেয়েও ফালতু সমাপ্তি – এরকম ফালতু গল্প বাংলা সিনেমায় কখনো দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। সিনেমার সুপারস্টার প্রেমে পড়েছে এক সাধারন মেয়ের। খুবই ভালো কথা। কিন্তু এই যুগে সে নাকি তার প্রেমিকার ছবিও কখনো দেখেনি। চল্লিশের বুড়ো শাকিব খান যে প্রেম দেখাইলো … মাই গড !! … ১২-১৩ বছরের কোন কিশোরও এমন লুতুপুতু টাইপ প্রেম করে বলে আমার মনে হয়না। আরো ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, শাকিব খান আবার শাকিব খানের চরিত্রেই অভিনয় করেছে। শাকিব খান যদি অন্য নামের কোন সুপারস্টার হয়ে পর্দায় আসতো তো সেটি এতোটা বিশ্রী হতোনা। বরং বিল্লু ছবিতে শাহ্ রুখ খান, শাহির খান নামের এক সুপারস্টার অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করেছে এবং সত্যিকথা বলতে এ ছবিটি আমার মতে শাহ্ রুখ খান অভিনীত অন্যতম চমৎকার একটি ছবি। শাকিব খান যদি এরকম কাল্পনিক নামের কোন সুপারস্টার চরিত্রে আসতো তো বিষয়টি অনেক বেশী গ্রহনযোগ্যতা পেতো। আর ক্লাইমেক্স এবং এনডিং এর বিষয়ে এক কথায় বলতে হয় ——- ” গু ” ।
০২- শাকিব খান – এতো বিরক্তিকর কোন নায়ককে আজ পর্যন্ত লাগেনি। শাকিবের কিছু ছবি আমি দেখেছি। কখনো তাকে এমন বিশ্রী লাগেনি। বরং ওসব ছবিতে শাকিবকে বেশ ভালো লেগেছিলো। সত্যিকথা বলতে এমন বিশ্রীরকম মেদবহুল এক মধ্যবয়স্ক লোককে লুতুপুতু টাইপ প্রেমের ছবিতে দেখলে গা জ্বলে বৈকি। তার মেকাপ, চুলের স্টাইল দেখলে মনে হয় অনন্ত জলিলের নায়িকার চরিত্রে তাকে ভালো মানাতো।
আর বেশী কিছু বললাম না। তার ভক্তকুলের অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে।
০৩- গান – প্রেমের ছবির জন্য গান অনেক বড় একটা বিষয়। সাম্প্রতিককালের অনেক সিনেমা্র গান শুনতে এবং দেখতে চমৎকার হচ্ছে। সে হিসেবে এ ছবির গান একেবারেই সাধারন মানের। দুটো গান শুনতে মোটামুটি মানের। ব্যাস্ …
এস এ হক অলিক, হাবীব জুটির কাছ থেকে আরো ভালো গান আশা করেছিলাম। বিশেষ করে পরিচালকের প্রথম ছবির সেই ”যায় দিন, যায় একাকী” কিংবা ” ভালবাসবো বাসবো বন্ধু ” তো এখনো মনে গেঁথে আছে।
সবমিলিয়ে, আরো ভালোবাসবো তোমায় খুবই সাধারন মানের একটি ছবি। কয়েকটি কমেডি দৃশ্য এবং চমৎকার এক পরিমনিকে দেখতে চাইলে দেখতে পারেন ছবিটি। কোন রকম এক্সপেক্টেশন না নিয়ে হলে একবার ঘুরে আসতে পারেন। ঢিশুম ঢিশুম টাইপ ছবিগুলোর মতো অতোটা বিরক্তিকর না এ ছবি।
আমার রেটিংঃ ১০ এ ৬
রমিজ, ২৯-০৮-১৫