Select Page

‘রানা প্লাজা’ নিষিদ্ধ

‘রানা প্লাজা’ নিষিদ্ধ

rana plaza

বহুল আলোচিত ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন অযোগ্য বলে বাতিল ঘোষণা করেছে সরকার। সেন্সর আপিল কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিকালে সরকারি তথ্য বিবরণীতে একথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, শামীমা আক্তার প্রযোজিত ‘রানা প্লাজা’ পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর আপিল কমিটি জনসমক্ষে প্রদর্শনের উপযোগী নয় বলে বিবেচিত হওয়ায় চলচ্চিত্র সেন্সরশিপ আইন-১৯৬৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে চলচ্চিত্রটি সেন্সর সনদবিহীন ঘোষণা করা হয়েছে।

সেন্সর সনদপত্রবিহীন ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটি দেশের কোথাও প্রদর্শিত হলে ছবি বাজেয়াপ্তসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিবরণীতে জানানো হয়।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক, যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

ধসের ১৭ দিনের মাথায় ১০ মে বিকালে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে রেশমা আক্তারকে জীবিত উদ্ধার করা হলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

ওই বছরই রানা প্লাজা ধস ও রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেন পরিচালক নজরুল ইসলাম খান

এতে পোশাক শ্রমিক ‘রেশমা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী পরী মনি। তার বিপরীতে ‘টিটু’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা সাইমন সাদিক

বিভিন্ন দৃশ্যের কারণে এ চলচ্চিত্রের ছাড়পত্র দীর্ঘদিন আটকে থাকলেও শেষ পর্যন্ত গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রকে সনদপত্র দেয়।

সে অনুযায়ী ৪ সেপ্টেম্বর ৫০টির বেশি হলে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেয় প্রযোজক সংস্থা।

তবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলামের করা একটি রিট আবেদনে ‘রানা প্লাজা’র মুক্তি আটকে যায়।

তার অভিযোগ ছিল, এই সিনেমায় ‘ভীতিকর চিত্র’ দেখানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘আইনের লঙ্ঘন’।

ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে হাই কোর্ট গত ২৪ অগাস্ট এ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী ও সম্প্রচারে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই সঙ্গে সেন্সর বোর্ডের দেওয়া সনদের কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল দেওয়া হয়।

প্রযোজক শামীমা আক্তার ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ গত ৬ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেয়।

এতে ‘রানা প্লাজা’র মুক্তির পথ খোলে; ১১ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে নতুন করে প্রচারও শুরু হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পর্যালোচনায় ‘রানা প্লাজা’ মুক্তিতে বাধা কাটলেও সেন্সর আপিল কমিটিতে আবেদন হওয়ায় গত ৩ নভেম্বর এই চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনে স্থগিতাদেশ দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়।

ওইদিন এক আদেশে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আপিল আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন সারা দেশে স্থগিত থাকবে।

সবশেষে এবার নিষিদ্ধ ঘোষিত হলো আলোচিত সিনেমাটি।


মন্তব্য করুন