Select Page

ঈদুল আজহা ২০২০:  নাটক ও টেলিফিল্ম (লিংকসহ)

ঈদুল আজহা ২০২০:  নাটক ও টেলিফিল্ম (লিংকসহ)

এবারের ঈদ নাটকে একটি ভালো দিক হলো প্রচুর পরিমাণে ইউনিক কিংবা এক্সপেরিমেন্টাল কনসেপ্টে কাজ হয়েছে। তবে আলোর নিচে অন্ধকার হচ্ছে, বেশিরভাগ কাজে দেখা গেছে সে সুন্দর কনসেপ্টগুলোকে আকর্ষণীয় চিত্রনাট্যে রূপান্তর করা যায়নি। কিছু আবার মাঝে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে। নাটকের সংখ্যার দিকে তাকালে দেখা যায়, মধ্যবিত্তের জীবন সংগ্রাম কেন্দ্রিক কাজ বেশি। বেশ ভালো ভালো কাজ থাকলেও অনেকগুলোই একঘেয়েমি দোষে দুষ্ট। তবুও সব মিলিয়ে আশার দিক ৩-৪ ঈদের মধ্যে এবার ভালো কাজের সংখ্যা সবচাইতে বেশি। আজকের পর্বে তেমনি কিছু ভাল কাজ থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু নাটক টেলিফিল্ম নিয়ে বলব!

ইতি, মা
পরিচালনা: আশফাক নিপুণ
অভিনয়: ঈশিতা, নিশো, সরকার অপু

আমাদের সমাজের আর ৮-১০টা অভাবী সংসারের গল্প। সমস্যার শেষ না থাকলেও ভাই-বোনদের খুনসুটি কিংবা মায়ের প্রতি সন্তানদের ভালবাসার অন্ত নেই। বাবার মৃত্যুর পর একমাত্র কন্যার ছোটখাটো রোজগারে কোনরকম সংসার চলছে। তার ওপর বাবার করে যাওয়া ঋণের বোঝা। উপায়ান্তর না দেখে বেকার ছেলেটি কাজের আশায় শহরে পাড়ি জমায়, সেখানে গিয়েও তেমন সুবিধা হয়নি। তখন হুট করে তারা মায়ের এক অপূর্ণ স্বপ্নের কথা জানতে পারে৷ টানাটানির সংসারে তারা কি পারবে সে রীতিমতো দুঃসাধ্য স্বপ্ন পূরণ করতে? অদ্ভুত সুন্দর একটি গল্প নিয়ে আশফাক নিপুণ নির্মাণ করেছেন ইতি, মা। গুছানো চিত্রনাট্য ও অসাধারণ অভিনয়ের সমন্বয় কাজটিকে গত কয়েক ঈদ মিলিয়ে সেরা নাটক তকমা দিয়েছে।

ভিকটিম
পরিচালনা: আশফাক নিপুণ
অভিনয়: অপি করিম, নিশো

মান-সম্মানের ভয়ে অনেক দিন নিজে বয়ে বেড়ালেও ‘মিটু’ আন্দোলনের পর অনেক নারীই তাদের ব্যক্তি কিংবা কর্মজীবনে শ্লীলতাহানির কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করেছেন। সাবেক প্রেমিকা-বর্তমান স্ত্রী অপি ও একমাত্র সন্তান নিয়ে সুখী জীবন যাপন করা নিপাট ভদ্রলোক নিশোর বিপক্ষে তার অফিসের সাবেক সাবর্ডিনেট সাফা তেমনই অভিযোগ আনেন। অভিযোগ নিয়ে অফিসের তদন্তে কী ফলাফল আসবে, দীর্ঘদিনের পরিচিত মানুষটির বিপক্ষে এমন অভিযোগ নিয়ে স্ত্রীর মনেই বা কী খেলা করবে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় যুগে এমন স্পর্শকাতর ইস্যু তাদের ব্যাক্তি, দাম্পত্য ও সামাজিক জীবনে কেমন প্রভাব ফেলবে? এমনই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলিং গল্প নিয়ে নাটক ভিকটিম। ছোটপর্দায় অল্প বাজেটে এত জটিল স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ হয় না আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে। নিঃসন্দেহে বেশ শক্তিশালী কাজ হয়ে থাকলো ভিক্টিম।

নির্বাসন
পরিচালনা: ভিকি জাহেদ
অভিনয়: মেহজাবিন, নিশো

জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই প্রাণের গ্রাম ছেড়ে এই ইট-কাঠের খাঁচায় নির্বাসিত হয় অসংখ্য মানুষ। তেমনি এক দম্পতি অনেক স্বপ্ন নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে আশ্রয় নেয়। শহরে আসতেই একে একে এ যান্ত্রিক শহরের কুৎসিত দিকগুলো দেখতে থাকে। নিজেদের স্বভাব সুলভ সৌজন্যে আশ্রিত বাসার বাকি ফ্যামিলিগুলোকে আপন করে নিতে চাইলেও অসামাজিক মানুষগুলো আপন হয়ে উঠে না। কারও সহযোগিতা না পেয়ে এই শহরের নিষ্ঠুরতায় সুখী দম্পতির করুণ পরিনতি নিয়ে নাটক নির্বাসন। শেষটা কিছুটা সিনেম্যাটিক হলেও ট্রেজেডিধর্মী নাটকটি বেশ ভালো নির্মাণ।

বোধ
পরিচালনা: রাফাত মজুমদার রিংকু
অভিনয়: মোশাররফ করিম, আশিষ খন্দকার

জীবন ক্ষুদ্র হলেও মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মাধ্যমে। টাকা-পয়সা ক্ষমতার নেশা আমাদের এই সত্যকে ভুলিয়ে দেয়। অবিচার করার সময় লোকজন মনে মনে আমাদের নিয়ে কী ভাবছে তা একবারও ভাবি না। তেমনিভাবে সত্যি কী সেটা না বুঝে অন্যায়ের পাহাড় গড়ে তোলে এক চেয়ারম্যান। অথচ তার ভেতরেও একটি সত্তা থাকে। সেই সত্তা যদি মৃত্যুর পূর্বে একবার জাগ্রত হবার সুযোগ পেত তবে কি সে তাকে এত অভিশাপ নিতে দিত? তা নিয়েই গল্প বোধ। ইউনিক এ গল্প দুই প্রধান অভিনয়শিল্পী মোশাররফ করিম ও আশীষ খন্দকারের অভিনয়ে আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। যদিও এত অসাধারণ গল্প ভাবনা আরেকটু ভালো চিত্রনাট্যের দাবি রাখে তবুও নবীন পরিচালক রিংকুর এ নাটকটি অনেক চমকপ্রদ।

জানবে না কোনদিন
পরিচালনা: মিজানুর রহমান আরিয়ান
অভিনয়: অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিন

ভালোবাসতে হয় বেশি প্রকাশ করতে হয় কম। করোনায় আমরা নানা অমানবিকতার কথা প্রতিনিয়ত চারপাশে দেখেছি পেপার পত্রিকায় পড়েছি। ছোঁয়াচে রোগটা যেন মানুষকে বড্ড স্বার্থপর করে দেয়। কিন্তু তার মাঝেও নিখাদ ভালোবাসা আছে। করোনাকালীন সময়ে দুই দম্পতির ভালোবাসার গল্প জানবে না কোনদিন৷ রোমান্টিকতার সাথে বাস্তবতার সংমিশ্রণে গুছানো একটি কাজ।

স্বপ্নভঙ্গ
পরিচালনা: প্রয়াত আশফাক
অভিনয়: জয়া আহসান, নেভিল

জয়া-নেভিল দম্পতি বিয়ের পর নতুন বাসায় উঠে। কিছুদিন পর দুজনে গাড়ি করে ঘুরতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। তার পরেই জয়ার বাসায় নিয়মিত অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটতে থাকে। সেটি কি দুর্ঘটনার জন্য জয়ার মানসিক অসুস্থতা নাকি সত্যিই সেখানে অন্য কিছু আছে? ধীরে ধীরে রহস্যের জাল ঘণীভূত হতে থাকে। একেবারে শেষে এসে দুর্দান্ত এক টুইস্টের মাধ্যমে পুরো গল্প সমাপ্ত হয়। আগ্রহ জাগানিয়া গল্প, জয়ার সাবলীল অভিনয় ও শেষের টুইস্টটি কারণে থ্রিলারপ্রেমীদের কাছে নাটকটি বেশ উপভোগ্য মনে হবে। এই টুইস্টের কনসেপ্ট নিয়ে অনেক খ্যাতনামা সিনেমা হয়েছে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে ৪০ মিনিটের নাটকের গল্পে সেটি ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।

দেখা যাবে আরটিভি প্লাস অ্যাপে।

যে শহরে টাকা উড়ে
পরিচালনা: সঞ্জয় সমাদ্দার
অভিনয়: মোশাররফ, ফারিন

ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি ঢাকায় টাকা উড়ে। পরিশ্রম ও সততা থাকলে সে টাকাকে ধরে ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়। তেমনি এক ধনাঢ্য ব্যক্তি আনোয়ার। কিন্তু টাকা দিয়ে কি ভালোবাসা ধরতে পারা যায়? একটা সময় এসে তিনি বুঝতে পারেন তিনি তার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে ভুল হাতটি ধরেছেন। নিজের জীবন নিয়ে সিনেমা বানাতে চাওয়া আনোয়ারের জীবন রূপ নেয় মেলোড্রামাতে। তখন তার পরিচয় হয় কোন এক নিশিকন্যার। এতে কি তার জীবনের গল্পে কোন টুইস্ট আসবে? জানতে হলে দেখতে হবে যে শহরে টাকা উড়ে! এই নাটকের স্ক্রিপ্ট মাঝে ঝুলে গেলেও একা টেনে নিয়েছেন মোশাররফ করিম তার অভিনয় দিয়ে। জীবনঘনিষ্ঠ সংলাপগুলোও বেশ ভাল ছিল।

স্বার্থপর
পরিচালনা: মিজানুর রহমান আরিয়ান
অভিনয়: অপূর্ব, মেহজাবিন

ভালোবাসায় পূর্ণ সুন্দর সংসার অপূর্ব-মেহজাবিন দম্পতির, একমাত্র সন্তান সে সংসারকে আরো আলোকিত করেছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে কী চমৎকার বোঝা পড়ায় চরম সুখে দিন কাটছিল। তখনই বাধ সাধে এক দুর্ঘটনা। কী সেই দুর্ঘটনা যার জন্য এত সুন্দর সাজানো বাগান ছেড়ে একজনকে চলে যেতে হয়? একজন মানুষ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যা করে চলে গেছে। কিন্তু মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে আফসোসের একটি যে টপিক আপনি শুনতে চাচ্ছেন না সেটা সবচেয়ে বেশিবার শুনতে হয়। তার পরিবার পড়ে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে! এমনিতেই প্রিয়জনকে হারানোর শোক, তার ওপর মানুষের এত প্রশ্ন জীবনকে অসহনীয় করে তোলে। একজনের আত্মহত্যায় পুরো পরিবারকে যে বিড়ম্বনায় ফেলে না নিয়ে নাটক স্বার্থপর। গুছানো চিত্রনাট্যের কারণে পুরো নাটকটি বেশ উপভোগ্য।

ফ্রোজেন কার
পরিচালনা: মারুফ হোসেন সজীব
অভিনয়: আজাদ আবুল কালাম, মাজনুন মিজান

‘শহর আমাকে বিদায় দিবে ভাবিনি। আমার তো এখনো অনেক কাজ বাকি। আমার ছেলে-মেয়েরা এখনো অনেক ছোট। ওদের মানুষ করতে হবে। আমার পরিবারকে কে দেখবে?’ মৃত্যুকে গ্রহণ করার জন্য আমরা কখনো প্রস্তুত থাকি না। একজন মৃত মানুষ কে যদি কথা বলার সুযোগ দেয়া হত সে কী বলত? একজন মৃত মানুষের আফসোসের গল্প নিয়ে নাটকটি নির্মিত হয়েছে। তথাকথিত বড় কোন স্টার না থাকলেও নাটকটি গল্প, জীবনধর্মী সংলাপ ও অভিনয়ের কারণে ভালো লেগেছে।

শূন্য পাতার চিঠি
পরিচালনা: সাইদুর রহমান রাসেল
অভিনয়: অ্যালেন শুভ্র, মিষ্টি

মা হারানো অন্ধ মেয়ে। মামা-মামীর সংসারে আশ্রিত। তার প্রবাসী বাবা পুরো পরিবারের ভরণপোষণ করলেও সেখানে তাকে নানা বঞ্চনার শিকার হতে হয়। প্রতিদিন সে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে তার বাবার চিঠি আসবে। কিন্তু অনেকদিন আসছে না। মেয়েটির আগ্রহ দেখে তাকে খুশি করতে ডাকপিয়ন একের পর এক শূন্য পাতার চিঠি তাকে পড়ে শোনায়৷ কিন্তু তার বাবার চিঠি আসছে না কেন? মেয়েটি যখন সত্যি জানতে পারবে সে কি পারবে ডাকপিয়নের এই মিথ্যা ক্ষমা করতে? ডাকপিয়নের অন্ধ অসহায় মেয়েটির প্রতি এটি ভালবাসা নাকি মিথ্যা করুণা? গ্রামীণ পরিবেশে আমাদের ভাঁড়ামোপূর্ণ কাজ হয় বেশি। সে তুলনায় বেশ সুন্দর একটি গল্প, পরিমিত অভিনয়, তার সাথে সুন্দর চিত্রগ্রহণ ও আবহ সংগীত পুরো গ্রামীণ সিনেমার ফিল দেয়। শেষটা কিছুটা অতিমাত্রায় সিনেম্যাটিক হলেও তা নাটকের সৌন্দর্য কে একটুও ম্লান করে নি।

আমার অপরাধ কী?
পরিভালনা: মাবরুর রশীদ বান্নাহ
অভিনয়: মারজুক রাসেল, অ্যালেন শুভ্র

সব অপরাধে কি মামলা হয়, শাস্তি হয়? একেবারে নিপাট ভদ্রলোকটিও এক জীবনে ছোটবড় অনেক অপরাধ করেছে যেগুলোর কোন বিচার হয়নি। তেমনি এক ধনাঢ্য ব্যক্তিকে একটি ঘরে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু তার অপরাধটা কী? সেটা জানার আকাঙ্ক্ষা পুরো নাটকে আপনাকে থ্রিলারের ফিল দিবে। বেশ ভিন্নভাবে গল্প বলায় নাটকটি ভালো লেগেছে। মারজুক রাসেল ও অ্যালেন শুভ্র দুজনের অভিনয় ও ছিল বেশ পরিমিত।

কেন?
পরিচালনা: মাহমুদুর রহমান হিমি
অভিনয়: তৌসিফ, মেহজাবিন, নিশো, ঈশেতা

আশির দশকের প্রেমের গল্প। আর ৮-১০টা প্রেমের গল্পের মত এই গল্পেও নায়ক নায়িকার পিছু নেয়। এক সময় মেয়েরও তাকে ভালো লাগতে শুরু করে৷ কিন্তু তখনই বাধ সাধে মেয়ের পরিবার। তাকে নিয়ে শহর ছেড়ে দূরে চলে যায়। ঘটনাক্রমে দুজনের পুনরায় দেখা হয়। তারপরও দেখা যায় তাদের মিলন হয় না। কেন হয় না? প্রচারের পূর্বে সবচেয়ে আলোচিত এ টেলিফিল্মটি বেশ উপভোগ্য রোমান্টিকধর্মী কাজ। একেবারে ছোট বয়সী চরিত্রে মেহজাবিন বেশ ভালো করেছেন। সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফির কারণে নাটকটি দেখতে আরো ভালো লাগে। কিন্তু নাটকের শেষটি অনেকেরই বোধগম্য হলো না।

শহর ছেড়ে পরাণপুর
পরিচালনা: মিজানুর রহমান আরিয়ান
অভিনয়: তিশা, ইয়াশ, তাসনিয়া ফারিন

অসম প্রেম ও তার পরিণতি নিয়ে গল্প। রোমান্টিক নাটক হলেও গতানুগতিক ন্যাকামি নেই, নেই লুতুপুতু সংলাপের আধিক্য! গুছানো চিত্রনাট্য ও বাস্তবিক অভিনয়ে তবুও দেখতে বেশ ভালো লাগে। শেষটা অতিমাত্রায় সিনেম্যাটিক না হলে হয়তো এটি এই ঈদের সেরা রোমান্টিক নাটক হতে পারত।

শেষ কথা
পরিচালনা: এ কে পরাগ
অভিনয়: তাসকিন, তানজিন তিশা

এক ম্যাজিশিয়ান ও এক মডেল আমন্ত্রিত হন একই অনুষ্ঠানে। সেখানে ম্যাজিক দেখানোর জন্য সাহায্যকারী হিসেবে ম্যাজিশিয়ান তার অপরিচিত সেই মডেলকে বেছে নেন। সেখানে ঘটে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। দ্রুত সেই ঘটনা ভাইরাল হয়ে যায়। ট্রলের শিকার হন সেই মডেল। এভাবে গল্পের শুরু। শুরুটাই বেশ আগ্রহ জাগানিয়া কাহিনীও ভিন্নধর্মী। তবে শেষটা কিছুটা ফোর্সড মনে হলো। তবুও গল্প ও ভালো মেকিংয়ের কারণে নাটকটি বেশ উপভোগ্য লেগেছে। তাসকিনের স্ক্রিপ্ট চয়েজের প্রশংসা করতেই হয়।

ব্যাঞ্জনবর্ণ
পরিচালনা: মাবরুর রশীদ বান্নাহ
অভিনয়: শায়লা সাবি, মোশাররফ করিম

প্রকৃত আদর-স্নেহ-ভালোবাসা কোন বর্ণ, ধর্ম, পরিচয় দিয়ে হয় না৷ আমরা মানুষ তাতে কারণ খুঁজে নিজেদের হীনমন্যতার পরিচয় দেই। সমাজের নিম্নবর্ণের মানুষের প্রতি মোশাররফের ভালোবাসা ও তাতে সৃষ্টি হওয়া বিপত্তির গল্প নিয়ে নাটক ব্যাঞ্জনবর্ণ। স্ক্রিপ্ট মোটামুটি প্রেডিক্টেবল হলেও দেখতে ভালো লাগে।

Why!
পরিচালনা: কাজল আরেফিন অমি
অভিনয়: সাবিলা নূর, তৌসিফ

একই বাসায় থাকার সুবাদে সাবিলা-তৌসিফের এক সময় কঠিন প্রণয় ছিল। পারিবারিক জটিলতা, ইগো কিংবা নায়কের সাহসের অভাবে সে প্রণয় পূর্ণতা পায়নি। অন্য জায়গায় বিয়ে করে ভালোই জীবন কাটাচ্ছে সাবিলা। হঠাৎ একদিন তার প্রাক্তন এসে উপস্থিত। উটকো ঝামেলা ভেবে উপেক্ষা করতে থাকলেও তাকে কিছুতেই বিদায় করা যাচ্ছে না। এমন সময় তার স্বামী এসে উপস্থিত। তখন কঠিন বিপত্তিতে পড়ে সাবিলা। এই জায়গা থেকে ভালো একটি থ্রিলার গল্পে রূপ নিচ্ছিল হোয়াই। কিন্তু পরিচালক ঠিক ‘কেন’র শেষটা অসম্পূর্ণ রাখলেন তা বোধগম্য হলো না। তবুও নাটকটি বেশ উপভোগ্য।

মানুষের গল্প
পরিচালনা: প্রীতি দত্ত
অভিনয়: মৌসুমী হামিদ, ইরফান সাজ্জাদ

করোনাকালীন সমাজের চার ধরনের মানুষের তিনটি গল্প প্যারালালি এগিয়েছে। এক চোর, নিশিকন্যা, নিঃসন্তান স্বামী-স্ত্রী এবং এক অল্প বয়সী দম্পতি। পরিচালকের সফলতা এত অল্প সময়ের মধ্যে করোনাকালীন চারটি গল্পে খুব সুন্দর সমাপ্তি টেনেছেন। ইরফান সাজ্জাদের লুক ও অভিনয় বেশ ভালো হয়েছে। খুব শক্তিশালী না হলেও একবার দেখার মতো কাজ।

সিটি অফ এরর
পরিচালনা: সেরনিয়াবাত শাওন
অভিনয়: নিশো, তাসনুভা তিশা

হুট করে বিশাল কালো টাকার মালিক এক ধনাঢ্য ব্যাবসায়ী ও তার গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পরিচিত এক মডেল খুন হয়। সে খুনের তদন্ত নিয়ে থ্রিলার গল্প৷ আমি বরাবরই থ্রিলারধর্মী কাজের ভক্ত। তবে গল্পের শুরুটা বেশ আগ্রহ জাগানিয়া হলেও পরিচালকের অদক্ষতায় নাটকটা ঝুলে গেছে। একঝাঁক গুণী অভিনয়শিল্পী দিয়েও নাটকটি জমানো গেল না। তবুও স্বল্প পরিসরে থ্রিলার উপস্থাপনের প্রচেষ্টা সাধুবাদ প্রাপ্য।

আপনার ছেলে কী করে
পরিচালনা: সঞ্জয় সমাদ্দার
অভিনয়: অপূর্ব, তিশা

বর্তমানে আমাদের সমাজে সরকারি চাকরি নিয়ে যে তুমুল হাইপ তা নিয়ে নাটক আপনার ছেলে কী করে৷ কাহিনীতে বড় ছেলের কিছুটা ছাপ পাওয়া যায়, অন্যদিকে গল্পে অনেক প্লটহোল থাকলেও অপূর্বের অভিনয় ও শেষটুকুর জন্য একবার দেখা যায়৷

 

বিশেষ: ২৩শে শ্রাবণ (শর্টফিল্ম)
পরিচালনা: মীর ইশতিয়াক
অভিনয়: মেহজাবিন, রকিব

ভুল পার্সেল চলে যাওয়া নিয়ে ঘটনাক্রমে নায়ক-নায়িকার ফোনে পরিচয়-প্রণয়। শুরুটা কিছুটা হঠাৎ বৃষ্টির মতো। ভিন্নধর্মী গল্প এবং দুজনের কথোপকথনে বেশ উপভোগ্য। শেষতক টুইস্টের মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দিয়ে গল্প সমাপ্ত হয়। অল্প কিছু প্লটহোল থাকলেও এই ঈদের বেশ ভাল একটি কাজ ২৩শে শ্রাবণ। (শর্টফিল্ম তালিকা এটি দেখার পূর্বে দেওয়াতে এ পর্বে এটিকে রাখা হলো)


মন্তব্য করুন