Select Page

কপিরাইট আইন ও সিনেমার গান

কপিরাইট আইন ও সিনেমার গান

কপিরাইট, কপিরাইট আইন- এসব শব্দ এ দেশের শিল্প-সাহিত্যের অধিকাংশ মানুষ শুধু শুনেছেন, বিস্তারিত জানেন না। সাধারণ মানুষ তো জানবেন না স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্টার জাফর রাজা চৌধুরীর সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকার ও ‘কপিরাইট আইন, ২০০০’ অবলম্বনে লেখাটি লিখছি।

কপিরাইট কী?
কোন সৃজনশীল কর্মের উপর সৃজনকারীর নৈতিক ও আর্থিক অধিকার। সহজ ভাষায় সৃজনশীল মানুষের তার সৃষ্টির উপর স্বত্ব ও অধিকার, যা তার সৃজনশীল কাজকে অন্যের দ্বারা নকল বা ব্যবহার করা থেকে সুরক্ষা দেয়।

গানের ক্ষেত্রে ৮ ধরনের কপিরাইট হয়ঃ
১. হুবহু পুনরুৎপাদনের অধিকার
২. রেকর্ড বা মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে জনসম্মুখে প্রদর্শনের অধিকার
৩. জনসাধারণকে দেখানো বা শোনানোর অধিকার
৪. অন্য ভাষায় অনুবাদ বা রুপান্তরের অধিকার
৫. চলচ্চিত্র বা নাটকে ব্যবহারের অধিকার
৬. বেতার, টিভি, ডিজিটাল ও ইন্টারনেটে সম্প্রচারের অধিকার
৭. পুনঃবিন্যাস বা অভিযোজনের অধিকার অর্থাৎ সহজ বাংলায় যাকে রিমিক্স বলা হয়।
৮. পুনঃবিন্যাসিত বা অভিযোজিত গানের
পুনরুৎপাদনের অধিকার।

যেকোন সৃজনশীল কর্মে সৃষ্টিশীল মানুষের দুই ধরনের অধিকার থাকে।

নৈতিক অধিকারঃ সৃজিত কর্মে প্রণেতার নামসহ অবিকৃত উপস্থাপন।
বাণিজ্যিক অধিকারঃ সৃজিত কর্মটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অধিকার।

একটা গানের মূল কপিরাইট হয় গীতিকার, সুরকার ও গীতিকারের।

কপিরাইট আইনের ২(২৪) ধারা অনুযায়ী গীতিকার ও সুরকার গানের মূল অধিকার পান। শিল্পী পান ‘রিলেটেড রাইটস’। গীতিকার বা সুরকারের ক্ষেত্রে গানটি পাবলিকলি প্রকাশের দিন থেকে ৬০ বছর কপিরাইট থাকে। অন্যদিকে শিল্পীর যেহেতু ‘রিলেটেড রাইটস’, তাই থাকে ৫০ বছর।

আইনের ২৩ ধারা অনুযায়ী গানটির অনুলিপি কেউ করলে কমপক্ষে ১০% রয়্যালটি পাবেন।

কেউ যদি তার কপিরাইট কাউকে লিখিতভাবে দিয়ে দেন বা অস্বীকার করেন, তারপরও তিনি যে কোন সময় তা দাবি করতে পারবেন।

একটা গান প্রকাশের আগে গীতিকার মালিক। প্রকাশের পর মূল মালিক সুরকার।

সিনেমার গানের ক্ষেত্র নিয়মঃ

১৭ ধারা অনুযায়ী কোন চলচ্চিত্রের গানের ক্ষেত্রে মূল মালিক চলচ্চিত্রটির প্রযোজক। যেহেতু তিনি বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু শর্ত থাকে যে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীর লিখিত অনুমতি ব্যতীত গানটি ওই নির্দিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যতীত অন্য কোন চলচ্চিত্রে এমনকি অন্য কোন মাধ্যমে (ডিজিটাল, ইন্টারনেট, রেকর্ড, ভিডিও, টিভি, রেডিও, যেখানে দেখানো বা শুনানো সম্ভব) প্রকাশ করতে পারবেন না৷ সেক্ষেত্রে ২৩ ধারা অনুযায়ী রিসেলিং রাইটস দিতে হবে। এবং তা কমপক্ষে ১০% রয়্যালটি। তবে অবশ্য লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে পারবেন। কোন মৌখিক চুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।

তথ্যসূত্রঃ
১. https://m.facebook.com/watchparty/937512623327835/
২. http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-846/section-30160.html


মন্তব্য করুন