![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
কলকাতার রিমেক সিনেমার পরিচালক বানাচ্ছে ‘অপারেশন জ্যাকপট’
দীর্ঘদিন গবেষণার পেছনে সময় দিয়েও ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নির্মাণের সুযোগ পেলেন না গিয়াসউদ্দিন সেলিম। তার বদলে বেছে নেয়া হয়েছে দক্ষিণী সিনেমা নকল করে কলকাতায় নাম কামানো পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাসকে।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/11/rajiv_kumar_biswas_bmdb_image.jpeg?resize=1024%2C667&ssl=1)
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নৌ সেক্টর পরিচালিত সফলতম গেরিলা অপারেশনের নাম অপারেশন জ্যাকপট। কয়েক বছর ধরে অনেক নাটকীয়তার পর আগামী মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে শুটিং। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কালের কণ্ঠ।
রাজীব জানান, এরই মধ্যে তিনি ছবির চিত্রনাট্যসহ পাত্র-পাত্রীও নির্বাচন করেছেন। ছবির প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করবেন এ সময়ের ঢাকাই ছবির নামি ১০ নায়ক।
১ ডিসেম্বর হবে ছবির মহরত। সেদিন উপস্থিত থাকবেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ১০ নায়ক। এই ১০ নায়কের মধ্যে রয়েছেন অনন্ত জলিল, তিনিই অভিনয় করবেন ছবির প্রধান চরিত্রে। রাজীবের ভাষ্যে, এ ছাড়া থাকবেন রিয়াজ আহমেদ, বাপ্পী চৌধুরী, সাইমন সাদিক, নিরব হোসেন, মামনুন হাসান ইমন, আব্দুন নূর সজল, সিয়াম আহমেদ, জিয়াউল রোশান ও জয় চৌধুরী। রিয়াজ, রোশান ও নিরবের সঙ্গে এখনো চূড়ান্ত চুক্তি না হলেও অন্য সাত অভিনেতা এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। যদিও সিয়াম এরই মধ্যে অভিনয়ের কথা অস্বীকার করেছেন।
রাজীব বলেন, ‘এতজন নায়ক নিয়ে ইউনিট সামলানো চাট্টিখানি কথা নয়। তার ওপর ঢাকা, গাজীপুর, মোংলা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে শুটিং। গত দুই মাস ঢাকা-কলকাতা আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলাম। লোকেশন রেকি থেকে শুরু করে সব কিছু নিজের হাতেই করেছি। আশা করছি, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের দারুণ একটি ছবি নির্মাণ করতে পারব।’
ছবিতে নারী শিল্পীদের প্রায় সবাই পশ্চিমবঙ্গের। তালিকায় রয়েছেন স্বস্তিকা ব্যানার্জি, সায়ন্তিকা ব্যানার্জির মতো অভিনেত্রী। রাজীব বলেন, ‘অনন্ত ভাইকে বলেছি, একটি চরিত্রে আমি স্বস্তিকা ব্যানার্জিকে নিতে চাই। আইটেম গানে থাকবেন সায়ন্তিকা ব্যানার্জি। কলকাতা থেকে আরো দু-চারজন অভিনেত্রীর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা তো মুক্তিযুদ্ধের ছবি, তার ওপর একটি রাতকে ঘিরে গল্প। তাই এখানে অন্যান্য বাণিজ্যিক ছবির মতো প্রেম-ভালোবাসা দেখানোর ব্যাপার নেই। তবে এই মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ছিল, কারো স্বপ্নের মানুষ ছিল, বাবা-মা, বোনও ছিল। সেই সব চরিত্রের জন্য আমরা কয়েকজন শিল্পী নির্বাচন করেছি। বলতে পারেন তাঁরাও সবাই পরিচিত মুখ।’
টালিগঞ্জে রাজীব কুমার বিশ্বাস যত ছবি নির্মাণ করেছেন তার বেশির ভাগই প্রেম-ভালোবাসার। ‘দুজনে’, ‘অমানুষ’, ‘পাগলু’, ‘ইডিয়ট’, ‘খোকা ৪২০’, ‘মজনু’, ‘অমানুষ ২’, ‘বিন্দাস’—বেশির ভাগই বক্স অফিসে সফল।
তবে দেশপ্রেম নিয়ে ‘অপারেশন জ্যাকপট’ই তাঁর প্রথম ছবি। রাজীব বলেন, ‘‘আমি সব সময়ই চেয়েছি আমার ট্র্যাকের বাইরে গিয়ে ছবি করতে। বাংলাদেশ থেকে সেই সুযোগ পেলাম। ‘অপারেশন জ্যাকপট’ বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের দর্শকও পছন্দ করবে, এটা আমার আশা।’’
৭০ দিন শুটিং হবে ছবিটির। ফেব্রুয়ারিতেই শুটিং শেষ করতে চান পরিচালক। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ছবিটি মুক্তি দিতে চান।
‘অপারেশন জ্যাকপট’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রায় আড়াই বছর ধরে নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম চিত্রনাট্য তৈরি করেন। পুরো প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। গত বছর ছবিটি নির্মাণের দায়িত্ব পড়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর। দরপত্র আহ্বান করে তারা। তখন ছবিটি নির্মাণের কাজটি পায় কিবরিয়া ফিল্মস। গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘আশীর্বাদ চলচ্চিত্র’ দরপত্র থেকে ছিটকে পড়ায় তখন বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল। কিবরিয়া ফিল্মসের ব্যানারে ছবিটির সম্ভাব্য নির্মাতাদের তালিকায় ছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। গতকাল তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কেউ কথা বলেননি এটা নিয়ে। তাই কিছু বলতে পারছি না। দেখি, সময় করে ফোন দেব প্রযোজককে।’ ছবিটি ভারতের পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাস নির্মাণ করছেন শুনে তিনি আর মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন অবলম্বনে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ নির্মাণ করেন শ্যাম বেনেগাল। এ হাই প্রোফাইল নির্মাতাকে নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। এবার ‘অপারেশন জ্যাকপট’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে বেছে নেয়া হলো এমন এক ভারতীয় নির্মাতাকে যার ঝুলিতে মৌলিক ও স্মরণীয় কোনো সিনেমা নেই।