কাঞ্চন-চম্পার প্রেমের ছবি ‘সহযাত্রী’
আশির দশকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলো ইলিয়াস কাঞ্চন-চম্পা। শিবলি সাদিকের সুপারহিট ‘তিন কন্যা’ সিনেমার মধ্য দিয়েই এই জুটির পথচলা শুরু যা ছিলো চম্পার প্রথম চলচ্চিত্র।
এরপর এই জুটি অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছিলো। সামাজিক অ্যাকশন ও রোমান্টিক দুই ধারাতেই এই জুটি ছিলো চমৎকার। যদিও চম্পা জাফর ইকবালের সাথেও বেশ কিছু চলচ্চিত্র অভিনয় করে সফল হয়েছিলো তারপরেও কাঞ্চন-চম্পা জুটির জনপ্রিয়তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।
শিবলি সাদিকের তিন কন্যা, নীতিবান, ভেজা চোখ তিনটিই ছিলো এই জুটির সেইসময়ের সুপারহিট সিনেমা। ‘ভেজা চোখ’ সিনেমাটি তো আজও বাণিজ্যিক সিনেমার রঙ্গিন যুগের রোমান্টিক ক্লাসিক হয়ে আছে। এ সিনেমার সাফল্যর অনুপ্রাণিত হয়ে পরিচালক আজহারুল ইসলাম খান কাঞ্চন-চম্পা জুটিকে নিয়ে নির্মাণ করলেন ‘সহযাত্রী’।
সিলেটের কাকলি সিনেমা হলে সপরিবারে দেখতে গিয়েছিলাম সিনেমাটি। ভেজা চোখের মতো যথারীতি এটিও রোমান্টিক সিনেমা তবে শেষটা ছিলো আরেকটু ভিন্ন। শিক্ষা সফরে গিয়ে কাঞ্চন-চম্পার পরিচয় । সেখান থেকে অনেক খুনসুটির পর একসময় দুজনার প্রেম।এরপর যখনই দুজন দুজনাকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছিলো তখনই ইলিয়াস কাঞ্চনের মারনব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। কাঞ্চন চম্পার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। কাঞ্চনের এই পরিবর্তন শুধু জানে বন্ধু আলীরাজ। আলীরাজের সাথে কাঞ্চন চম্পার বিয়ে দেখে যেতে চায় কিন্তু শেষ পর্যন্ত চম্পা কি কাঞ্চনকে ভুলে আলীরাজকে বিয়ে করে কিনা তা জানতে হলে আপনাকে সহযাত্রী সিনেমাটি দেখতে হবে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লিখা কাহিনী ও গীতিকার রফিকুজ্জামানের চিত্রনাট্য ও সংলাপে রচয়িত পুরো সিনেমাটাই তারুণ্যর প্রেমের ছবি। নেই কোন অস্থিরতা, জটিলতা ও ধুন্ধুমার অ্যাকশন। রফিকুজ্জামানের লিখা গান ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুর ও সঙ্গীতে ‘পৃথিবীর যত সুখ/ আমি তোমারই ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’ গানটি ছিলো সুপারহিট।
‘ভেজা চোখ’ সিনেমায় কাঞ্চনের মৃত্যু দর্শকদের নাড়া দিয়ে হয়েছিলো সুপারহিট কিন্তু ‘সহযাত্রী’ সিনেমায় কাঞ্চন-চম্পা দুজনের মৃত্যু দর্শক সেভাবে গ্রহন করেনি, যার ফলে ব্যবসায়িক দিক থেকে সফল হয়নি। ব্যবসাসফল না হলেও ‘সহযাত্রী’ ছিলো পরিছন্ন আধুনিক রোমান্টিক সিনেমা যা মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রেণীর কাছে ভালো লাগবে।