Select Page

কানে জায়েদ-নিপুণদের কাজ কী?

কানে জায়েদ-নিপুণদের কাজ কী?

ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের একটি দল ঘুরছে। সাংবাদিক থেকে নির্মাতা; নানান কিসিমের মানুষ আছে সেই দলে। সেখানে তাদের কাজ কী? সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতীয় নায়িকাদের খুঁজে খুঁজে ছবি তোলা ছাড়া আপাতত তাদের কাজ নেই। বলিউড অভিনেত্রী ও নির্মাতা নন্দিতা দাস বলছিলেন, কান কোনো ফ্যাশন শো নয়, চলচ্চিত্র উৎসব। আমরাও দেশী ভাই-বোনদের উদ্দেশে বলতে পারি, কান ভারতীয় নায়িকাদের সঙ্গে সেলফি তোলার ইভেন্ট নয়!

তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ ও আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর অংশগ্রহণ ছাড়া গত অর্ধশত বছরে কানে আমাদের কোনো উল্লেখযোগ্য অংশ নেই। বরং ফিল্ম বাজারে টাকার বিনিময়ে ছবির প্রিমিয়ার করে ও ছোট দৈর্ঘ্য সিনেমার অনুল্লেখ প্রদর্শনীকে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে উপস্থাপন দেখা যায় নানা সময়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ছবিই কানের ফিল্ম বাজারে পরিবেশক পায়নি। বা ওই সব ছবি দেশেও দর্শক আনুকল্য পায়নি। কেন পকেটের টাকা খরচ করে বছর বছর এই কাণ্ড!

তবে এবার সরকারি টাকা শ্রাদ্ধ করার আয়োজন করা হলেও কান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশের বিএফডিসি নেতৃত্বাধীন টিম। কারণ সময় স্বল্পতার কারণে ফরাসি দূতাবাস ছয় সদস্যের কাউকে ভিসা দেয়নি। এ কারণে ফিল্ম বাজারে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ স্টলটি খালিই পড়ে আছে। মাঝে খানিকটা সময় অরণ্য আনোয়ার তার ‘মা’ ছবির প্রচারে স্টলটি ব্যবহার করেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের হয়ে কানে যাওয়ার কথা ছিল বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, দুই কর্মকর্তা এ কে এম আমিনুল করিম খান (সহকারী পরিচালক নিরাপত্তা ও প্রশাসন), রফিকুল ইসলাম (ল্যাব চিফ, অতিরিক্ত পরিচালক বিক্রয়), চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার ও নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজারের।

টিমের এই সদস্যদের কীভাবে নির্বাচন করা হয়েছে সে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিএফডিসির এই কর্মকর্তারা কানে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন বা বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের সিনেমা সম্পর্কে কী জানাবেন? এখন ঠিক কীভাবে এফডিসি বাংলা সিনেমার প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে কেন জায়েদ, নিপুণ বা গুলজার? সমিতি কেন্দ্রিক পলিটিকস ছাড়া তাদের অবদান কী সিনেমায়। তাদের এমন কোনো সিনেমা কি আছে, যা ‘এ’ লিস্টেড ফেস্টিভ্যাল তো দূরের কথা দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির উৎসবেও প্রদর্শনযোগ্য? সিনেমার চেয়ে পদ-পদবি নিয়েই তাদের আলোচনায় থাকতে দেখা যায়। বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে বলার যোগ্যতা কি তারা রাখেন?

আরো জানা গেছে, ডলার সংকটে কৃচ্ছতা সাধনের এই সময়ে দূতাবাস পর্যন্ত যাওয়ার আগে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে ছিলেন ২০ জনেরও বেশি! বিপত্তিটা বেঁধেছে সেখানেই। তালিকা ছোট করতে গিয়েই তথ্য মন্ত্রণালয়ের এতটা সময় বিলম্ব হয়। তাদের অনুমোদন নিয়ে যখন চূড়ান্ত হলো ছয় জন, তখন কানসৈকতে বাজলো পর্দা নামানোর প্রস্তুতি! পুকুর খনন দেখতে, মাছ চাষ দেখতে বা বৃক্ষরোপণ দেখতে সরকারি সফরের খবর তো আমরা প্রায়ই শুনি। সেখানে এটা আর নতুন কী! এফডিসি কর্মচারীদের বেতন দিতে পারুক আর না-ই পারুক কানে না গেলে যে কান কাটা যাবে!


মন্তব্য করুন