![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
কাবিননামা ছিল জাল, কখনো বিয়ে করেননি অঞ্জু ঘোষ!
অতিচর্চিত বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতার বাসিন্দা ‘বেদের মেয়ে জোছনা’-খ্যাত অঞ্জু ঘোষ। চলচ্চিত্র পরিচালক এফ কবীর চৌধুরী এবং তার প্রণয় ও বিয়ে, যা ওই সময় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছিল। কিন্তু নায়িকা সম্প্রতি বলছেন তাদের কোনোদিন বিয়েই হয়নি। প্রকাশিত কাবিননামাটি ছিল নকল। সম্প্রতি অঞ্জুর একটি সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যম, তবে তারা সূত্রটির নাম উল্লেখ করেনি।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2021/09/anju_gosh_bmdb_image-3.jpg?resize=972%2C596&ssl=1)
আশির দশকের শুরুর দিকে এফ কবীর চৌধুরীকে অঞ্জু বিয়ে করেছেন এই খবর হয়, আর কয়েকদিন পর বলা হয়, তাদের ছাড়াছাড়িও হয়ে গেছে। প্রকাশ হয় কাবিননামাও।
ওই বিষয়ে সম্প্রতি অঞ্জু বলেন, ‘আমাদের কোনো দিনই বিয়ে হয়নি। আমার প্রোডাকশন থেকে প্রথম একটি সিনেমা নির্মাণ করি। প্রচুর অর্থ লগ্নি করি। কিন্তু সিনেমাটি যখন রিলিজ দেব তখন এফ কবীর আবদার করে বসলেন যে, এই সিনেমাটি তাঁর ড্রিমল্যান্ড প্রোডাকশন থেকে রিলিজ করতে হবে- আমি বেঁকে বসলাম। দুজনার মধ্যে লেগে গেল দ্বন্দ্ব। অদ্ভুত বিষয় হলো চুক্তিপত্রে আমি যে স্বাক্ষর করেছিলাম তা জাল করে বিয়ের কাবিননামা বানানো হয়েছিল। এটা সত্যি যে, এফ কবীর আমার শুভাকাঙক্ষী ছিলেন।’
অঞ্জুর বিয়ে সম্পর্কে কয়েক বছর আগে সাংবাদিক ইমরুল শাহেদের বরাত দিয়ে জাগো নিউজ লেখে, “ইমরুল শাহেদের ভাষ্য অনুযায়ী তখন চলচ্চিত্র পাড়ায় ‘যত দোষ অঞ্জু ঘোষ’ এমন একটি কথা প্রচলিত ছিল। অঞ্জু তখন ‘সওদাগর’, ‘আবে হায়াৎ’, ‘নরম গরম’ সিনেমার সাফল্যের কারণে সুপার-ডুপার হিট। সমকালীন তারকা শাবানা, রোজিনাসহ আরো অনেককে অতিক্রম করে প্রথম সারির তারকার আসনে চলে এসেছেন। এ কারণে তাকে অনেকেই হিংসার চোখে দেখত। কিন্তু তিনিও যে বিতর্কের উর্ধ্বে ছিলেন এমন নয়। জনপ্রিয়তা অনেক সময় মানুষকে স্বেচ্ছাচারী করে তোলে। অঞ্জুর ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছিল।
ইমরুল শাহেদ বলেন, ‘‘একদিন রাতের এফডিসিতে গিয়েছিলাম। সেদিন ছিল বুধবার। অঞ্জু এবং আলমগীর পরিচালক হাফিজউদ্দিনের ‘আওলাদ’ সিনেমার শুটিং করছিলেন এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের দোতলায়। অঞ্জুর পরনে ছিল পুলিশের পোশাক। আমাকে দেখেই অঞ্জু স্যালুট দিয়ে বলল, ‘থেকো তোমার সঙ্গে কথা আছে।’’
শুটিং শেষ হতে সেদিন বেশ রাত হয়েছিল। প্যাকআপের পর অঞ্জু ইমরুল শাহেদকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন। গাড়ি ছুটে চলে সংসদ ভবনের পাশে অঞ্জুর বাসভবনের দিকে। গাড়িতে হঠাৎ অঞ্জু বলেন, ‘কাল একটি পত্রিকায় পরিচালক এফ কবীর চৌধুরী এবং আমার বিয়ের খবর প্রকাশ হতে যাচ্ছে। বিশ্বাস করো আমি তাকে বিয়ে করিনি।’
ঘটনা শুনে ইমরুল শাহেদ নিরাবেগ কণ্ঠে জানতে চান- তুমি যখন বিয়ে করোনি, তখন সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর তুমি কি পত্রিকাটির বিরুদ্ধে মামলা করবে?
অঞ্জু উত্তর দিয়েছিলেন, ‘দরকার হলে তাই করতে হবে। পুরো ব্যাপারটাই আহমদ জামান চৌধুরী (চিত্রালী সম্পাদক) ও কবীর ভাইয়ের ষড়যন্ত্র।’
ততক্ষণে গাড়ি ফার্মগেট পৌঁছে গেছে। ইমরুল শাহেদ গাড়ি থামিয়ে মাঝ রাস্তায় নেমে গেলেন। তার আগে পকেট থেকে অঞ্জুর বিয়ের কাবিননামা বের করে অঞ্জুর চোখের সামনে মেলে ধরে বললেন, ‘এটা কারো ষড়যন্ত্র নয়। তুমি বিয়ে করেছ আমি জানি। এখন একটা সত্যকে আমাকে দিয়ে তুমি মিথ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছ!’
অঞ্জু সেদিন খুব অবাক হয়েছিলেন। ঘটনা সামাল দিতে বলেছিলেন, ‘কাল সকালে বাসায় এসো। এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।’ কিন্তু পরদিন আর অঞ্জুর বাসায় যাননি এই জ্যেষ্ঠ বিনোদন সাংবাদিক।“
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/03/ef1fac3c5c0dd19997629e34ad6fb618.0.jpg?resize=1024%2C594&ssl=1)
এদিকে নিজের লাভ লাইফ নিয়ে অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘আমার প্রেমিকদের তালিকা দীর্ঘ। এমনও সময় গেছে, আমাকে দেখার জন্য ঢাকায় আমার বাসার দরজায় সারারাত অপেক্ষা করেছে। তাদের নাম না বলি। তারা সবাই এখন সংসার করছেন। নাম বলে তাদের বিব্রত করতে চাই না।’
তিনি যোগ করেন, ‘সে সময় অনেকেই আমার পেছনে ঘুরঘুর করতো। আমি পাত্তা দিতাম না। মনে হতো, সবাই অর্থের মোহে আমাকে চাইতো।’
বিয়ে না করার কারণ হিসেবে অঞ্জু ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের ‘ম’ আদ্যক্ষরযুক্ত একজন চিত্রনায়কের সঙ্গে আমার সত্যিকারের মন দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তারপর আর ওই পথে যাইনি।
একসময়ের ব্যস্ততা, এখন অফুরন্ত অবসরে সময় কীভাবে কাটে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সংবাদমাধ্যমকে অঞ্জু ঘোষ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, আমার বাড়িতে মন্দির রয়েছে, ধর্মকর্ম পূজা-পার্বণ করেই সময় কেটে যায়। আমার বাসায় যেমন দুর্গার প্রতিমা রয়েছে তেমনি পবিত্র মক্কা শরিফ, খাজা বাবার ছবিও রয়েছে। মানব ধর্মের চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই। অন্য আট-দশজন নায়িকার মতো অঞ্জুর জীবনেও প্রেম এসেছিল। তবে সে প্রেমের পরিণয় ঘটেনি।
অঞ্জু ঘোষের প্রকৃত নাম অঞ্জলি। ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের মঞ্চনাটকে জনপ্রিয়তার সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৮২ সালে এফ কবীর চৌধুরীর ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তীতে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সিনেমাটি তাকে রাতারাতি তারকাখ্যাতি এনে দেয়।
২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে পাকাপাকিভাবে কলকাতায় চলে যান অঞ্জু ঘোষ। এরপর দেশের সঙ্গে তেমন একটা যোগাযোগ নেই তার। মাঝে কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন।