![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
ঘুরেফিরে ৪৪-৪৫টি হলে মুক্তি পাচ্ছে ভারতীয় ছবি?
আট মাসে পাঁচটি ভারতীয় ছবি মুক্তি পেয়েছে, বছর শেষে ‘ডানকি’সহ আসছে আরো দুটি। নানান ঘটন-অঘটনের মধ্যে ভারতীয় সিনেমার মুক্তির অনুমতি আদায় করা হলেও তাতে একটিপক্ষই লাভবান হচ্ছে বলে অভিযোগ। আবার এসব সিনেমা সিঙ্গেল স্ক্রিনের ততটা উপকারে আসেনি, যতটা মাল্টিপ্লেক্সে পাচ্ছে সাড়া। যদিও বলা হয়েছিল, দেশের সিনেমা হল বাঁচতেই এ আমদানি।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/12/dunki_salaar_bmdb_image.jpg?resize=1024%2C538&ssl=1)
সিনেমা হল প্রসঙ্গে একাধিক যুক্তি তুলে ধরেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি মিয়া আলাউদ্দীন।
তিনি পুরো বিষয়টিকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ দাবি করে বলেন, ‘হিন্দি ছবি মুক্তি পেলেও সাধারণ হলগুলোর কোনো লাভ হচ্ছে না। বাংলাদেশে যাঁরা ছবি আমদানি করছেন তাঁরা মনোপলি ব্যবসা করছেন। ছবিগুলোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটা রেন্টাল বেঁধে দিচ্ছেন। ফলে ছোট হলগুলো ছবি নিতে পারছে না।’
‘দেখবেন, প্রতিটি ভারতীয় ছবিই ৪৪-৪৫টি হলে ঘুরেফিরে মুক্তি পাচ্ছে। সারা দেশে তো ১০০টির ওপরে ছবি চালানোর মতো হল আছে। সেগুলোতে দর্শকও আছে। তাহলে কেন সেখানে ভারতীয় ছবি চলছে না?’
মিয়া আলাউদ্দিন বলছেন, ‘আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে ভারতীয় ছবি আমদানির জন্য আন্দোলন করেছিলাম, সেটা পূরণ হয়নি। এই মাসের শেষের দিকে আমরা হল মালিকদের নিয়ে একটা বৈঠক করব। সেখানে হিন্দি ছবি নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের মনে হয়েছে, হিন্দি ছবি দেশে মুক্তি পাওয়ায় শুধু মাল্টিপ্লেক্সগুলো লাভবান হচ্ছে। সাধারণ হল মালিকরা চেয়ে চেয়ে দেখছেন, কিছুই করার নেই তাদের।’
যে আশা নিয়ে ভারতীয় ছবি আমদানি করা হচ্ছে, তার কতটা পূরণ হয়েছে বা হচ্ছে? এ বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সেন্সর বোর্ডের সদস্য খোরশেদ আলম খসরু বলেন, “চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠন প্রথম থেকেই বিদেশি ছবি আমদানির বিরুদ্ধে ছিল। আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনও করেছিলাম। তবে করোনার দুই বছরে প্রযোজকরা কোনো ছবি নির্মাণ করতে পারেননি। এদিকে হল মালিকরাও স্ট্রাইক করেন। বাধ্য হয়ে হল বাঁচাতে আমরা বিদেশি ছবি তথা ভারতীয় ছবি আমদানির পক্ষে কথা বলি। তবে বেশ কয়েকটি শর্ত দিই। যেমন – কোনো উৎসবে বা দেশি বড় ছবি মুক্তি পেলে তখন ভারতীয় ছবি মুক্তি দেওয়া যাবে না। প্রথম বছর সর্বোচ্চ ১০টি ও পরের বছর আটটি ছবি আমদানি করা যাবে। হল মালিকদের হল সংস্কার করতে হবে। এখন দেখছি ছবি আমদানি হচ্ছে ঠিকই, তবে হল মালিকরা হল সংস্কারের বিষয়ে কিছুই করছেন না। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের ‘টুপি’ পরানো হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে এখন।এতে করে তাঁরাই কিন্তু ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ছবি যতই ভালো হোক, পর্দা, সাউন্ড, বসার চেয়ার ভালো না হলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে যাবে না।”
অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশে বাণিজ্যিক স্বার্থেই শুধু হিন্দি ছবি আমদানি করা হচ্ছে। ‘এনিম্যাল’ ছবির সঙ্গে একই দিন ভারতে মুক্তি পেয়েছে ‘শ্যাম বাহাদুর’। স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর প্রধান ছিলেন শ্যাম মানেকশ। মেঘনা গুলজারের এই ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বেশ ভালোভাবে উঠে এসেছে। আইএমডিবি রেটিং ৮.২, যা ‘এনিম্যাল’-এর চেয়ে বেশি। অথচ এই ছবিটি আমদানি করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় অনন্য মামুনের সঙ্গে। তিনিই সব কটি ভারতীয় ছবি আমদানির সঙ্গে জড়িত। মামুন বলেন, “আমরা হলে দর্শক ফিরিয়ে আনার জন্যই ছবি আনছি। এখানে তারকারা একটা বড় ব্যাপার। রণবির কাপুর নিশ্চয়ই ভিকি কৌশলের চেয়ে বড় তারকা। ব্যাবসায়িক দিকটাও দেখুন, ‘এনিম্যাল’ কত ব্যবসা করেছে আর ‘শ্যাম বাহাদুর’ কত? ‘এনিম্যাল’ দিয়ে টঙ্গী ও কুষ্টিয়ায় দুটি হল চালু হয়েছে। এটাই তো আমরা চেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস, আগামী বছর অন্তত আরো ৫০টি হল চালু হবে। তখন দেশীয় ছবির বাজারও বাড়বে।”
১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় ছবি মুক্তির অনুমতি দেয় তথ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ১২ মে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ ছবিটি মুক্তি পায় সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে। এরপর একে একে মুক্তি পায় ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’, ‘জওয়ান’, ‘এনিম্যাল’ ও ‘মানুষ’। খবর কালের কণ্ঠ।