Select Page

ছোট চরিত্রে বড় অভিনেতা সালেহ আহমেদ

ছোট চরিত্রে বড় অভিনেতা সালেহ আহমেদ

সালেহ আহমেদ। এক সময় টেলিভিশনে প্রিয়মুখ ছিল তিনি। অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের লেখা গল্পে তাকে দারুণ মানিয়ে যেতো। সাদামাটা চরিত্রকে অতুলনীয় করে তুলতে তার তুলনায় পাওয়া ভার। সে দিক থেকে কমিক থেকে সিরিয়াস যেকোনো চরিত্রে মানানসই ছিলেন তিনি। গত শতকের ত্রিশের দশকের মাঝামাঝিতে তার জন্ম। মারা যান ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল। উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমায় তার চরিত্রায়ণ স্মরণ করছি আজ—

আগুনের পরশমণি

হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের এ ছবিতে তিনি মহল্লার দোকানদার। ইয়াহিয়া খানের ফটোগ্রাফ দোকানে রাখেন নিরাপত্তার জন্য। দিনে অনেকবার থু থু দেন আবার মুছে ফেলেন। নীরব প্রতিবাদী চরিত্র।

শ্রাবণ মেঘের দিন

হুমায়ূন আহমেদের এ ছবিতে তিনি ছিলেন শাওনের বাবার চরিত্রে। অনেকদিন বাদে বাড়ি ফেরেন মাহফুজকে নিয়ে। মাহফুজের সাথে শাওনের বিয়ের সম্বন্ধ করেন। খুব সাদামাটা মাটির মানুষের চরিত্র।

জয়যাত্রা

তৌকীর আহমেদ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের এ ছবিতে তিনি মসজিদের মুয়াজ্জিন। গ্রামে মিলিটারি নামলে মসজিদের সামনে তাঁকে পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়। না বলাতে তাঁর গালে চড় মারে। দৃশ্যটি ছিল মর্মস্পর্শী। একজন বয়স্ক মানুষের গায়ে তুলতেও পাকবাহিনী দ্বিধা করত না। তাদের এ ঘৃণ্য আচরণটি তুলে ধরা হয়েছে সালেহ আহমেদকে দিয়ে।

মেড ইন বাংলাদেশ

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত এ ছবিতে তিনি ছিলেন বিরোধী দলের নেতা। জাহিদ হাসান ডিসি অফিস জিম্মি করার পর যাদেরকে জরুরি মিটিং-এ ডাকা হয় তিনিও সেখানে ছিলেন। সরকারি দলের সাথে কার বাকবিতণ্ডা হয় সেখানে। একদম বাস্তবের মতো তিনি চরিত্রটি তুলে ধরেছেন। বাস্তবে যেভাবে নেতারা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে ঠিক সেভাবেই। চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল রাজনৈতিকভাবে।

সুভা

চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত এ ছবিতে তিনি ছিলেন বোবা মেয়ে সুভা বা পূর্ণিমার বাবা। অসহায় মেয়েটির মনের কথা তিনি বুঝতেন। সুভা যে প্রতাপ বা শাকিব খানকে ভালোবাসে সেটা তিনি বুঝতে পারেন। নিজেই উদ্যোগী হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন প্রতাপের বাবাকে কিন্তু অপমানিত হন। পরে মেয়ের সামনে কাঁদতে থাকেন। মেয়ের প্রতি বাবার ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, অসহায়ত্ব তিনি তুলে ধরেছেন। অসাধারণ অভিনয় ছিল।

খেলাঘর

মোর্শেদুল ইসলাম পরিচালিত এ ছবিতে তিনি চেয়ারম্যানের ভূমিকায় ছিলেন। নারীলোভী এবং ভণ্ড চরিত্রে ভিন্নতা দেখিয়েছেন।

আমার আছে জল

হুমায়ূন আহমেদের নাটকের মতো চলচ্চিত্রেও একসময় রেগুলার আর্টিস্ট হয়ে ওঠেন তিনি। সে সুবাদে তাঁর শেষের দিকের এ ছবিতেও ছিলেন। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মচারীর ভূমিকায় ছিলেন। পাতার বাঁশি বাজিয়ে শোনাতে দেখা যায় তাঁকে। এ ছবিতেও সাদামাটা চরিত্রে ছিলেন।


About The Author

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

Leave a reply