Select Page

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন
টেলিভিশনে এগিয়ে শাকিব খান, সালমান শাহ ও জয়া আহসানের সিনেমা

<div class="post-subheading">বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন</div>টেলিভিশনে এগিয়ে শাকিব খান, সালমান শাহ ও জয়া আহসানের সিনেমা

ষাট দশকের শেষ ভাগ থেকে টেলিভিশনে ঢাকাই সিনেমার প্রদর্শন হচ্ছে। নব্বই দশক পর্যন্ত এতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল বিটিভির। তখন চ্যানেলটি সবচেয়ে বেশি দর্শক পেত শুক্রবার বিকেলে। কারণ বাংলা সিনেমা। তবে এখন দুই ডজন টিভি চ্যানেলে দিনে প্রায় অর্ধশত সিনেমা প্রদর্শিত হয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি টেলিভিশনে সিনেমা প্রচার বাবদ আয় ও তারকাদের জনপ্রিয়তা তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে চলতি তারকাদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছেন শাকিব খান ও জয়া আহসান। এছাড়া মৃত্যুর তিন দশক পরও সালমান শাহ এখনো দর্শক টানেন। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো টেলিভিশনে সিনেমা বাবদ আয় ততটা আহামরি নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিএমডিবি এ প্রতিবেদন যাচাই করে দেখেনি

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের একটি মাত্র টিভি চ্যানেল বিটিভিতে সিনেমা যারা সাপ্লাই দিতেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রয়াত অভিনেতা খলিল। এছাড়া ছবির প্রযোজকরা সরাসরিও টিভিতে ছবি দিতেন। এখনো এ অবস্থা চালু রয়েছে।

জানা গেছে, একটি ছবি বছরে তিনবার প্রদর্শনের চুক্তিতে দরদাম নির্ধারণ হতো। তখন বিটিভি একটি ছবি নিত ১-৩ লাখ টাকায়। সিনেমার দাম নির্ধারণ হতো নায়ক-নায়িকা ও নতুন-পুরোনো ছবির ওপর ভিত্তি করে।

টিভিতে সিনেমা সাপ্লাইয়ারদের অন্যতম কয়েকজন হলেন শাওন গাজী, মোশাররফ, আবদুর রউফ, ইউনুস মুন্সী প্রমুখ। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সিনেমা সাপ্লাই দেন নাট্য প্রযোজক আবদুর রউফ। তিনি জানান, ষাট ও সত্তরের দশকে সবচেয়ে বেশি আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা পাওয়া যেত নায়করাজ রাজ্জাকের সিনেমা টিভিতে দিয়ে। এখনো রাজ্জাকের সিনেমা উচ্চমূল্যে টিভি কিনে নেয়। নায়িকার মধ্যে কবরী-শাবানা-ববিতার ছবির রেট ছিল বেশি।

১৯৯৭ সালে এ দেশে প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলা চালু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় ৪০টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল চালু হয়েছে। এসব চ্যানেলের মধ্যে তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে- যেমন নিউজ চ্যানেল, মিক্সড চ্যানেল ও সিনেমার চ্যানেল। দেশে সিনেমার চ্যানেল রয়েছে হাতেগোনা দু-একটি। এর মধ্যে আনন্দ টিভি অন্যতম।

আবদুর রউফ জানান, বর্তমানে সব ধরনের টিভি চ্যানেলে সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। গড়ে প্রতিদিন প্রতিটি টিভি চ্যানেল এক থেকে তিনটি পর্যন্ত সিনেমা প্রদর্শন করে থাকে। নায়ক-নায়িকা ও নতুন-পুরনো এবং হিট ফ্লপ সিনেমা ভেদে বছরে একটি সিনেমা তিনবার প্রদর্শনের চুক্তিতে টিভি চ্যানেলগুলো ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় প্রতি সিনেমা নিয়ে থাকে। এসব সিনেমা নির্ধারিত সাপ্লাইয়ার কিংবা সিনেমার প্রযোজকের কাছ থেকে নেওয়া হয়। বর্তমানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন টিভি সিনেমা সাপ্লাইয়ার রয়েছেন। তারা ছবির প্রযোজকের কাছ থেকে পুরনো ছবি ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকায় কিনে নেন। এরপর টিভি চ্যানেলে তা সাপ্লাই দিয়ে আয় রোজগার করেন।

আবদুর রউফ জানান, বর্তমান সময়ে নায়ক শাকিব খানের সিনেমা সবচেয়ে বেশি দামে কিনতে হয় ও টিভি চ্যানেলে তা দিয়ে বেশি আয় করা যায়। অন্য নায়ক-নায়িকাদের ছবির দাম টিভি চ্যানেল থেকে খুবই কম পাওয়া যায়। শাকিবের প্রতি পুরনো সিনেমা টিভিতে দেওয়া হয় ১০-২০ হাজার টাকায়। আর শাকিবের নতুন সিনেমা প্রতি সর্বনিম্ন রেট ১ লাখ টাকা। শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ টিভিতে দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকায়।

নায়িকাদের মধ্যে জয়া আহসানের ছবির রেট বেশি দেয় টিভি চ্যানেল। অন্য নায়ক-নায়িকাদের সিনেমার মূল্য ৫-১০ হাজার টাকার মধ্যে সীমিত থাকে।

আবদুর রউফ আরো জানান, শাকিব খানের পাশাপাশি প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ অভিনীত সিনেমার রেট এখনো বেশি। সালমানের প্রতিটি সিনেমা টিভিতে দেড় লাখ টাকায় দেওয়া হয়।

তিনি জানান, বিটিভিতে সিনেমা দিয়ে সবচেয়ে বেশি টাকা পাওয়া যায়। বিটিভিতে প্রতিটি সিনেমা বাবদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত পায় সাপ্লায়াররা।

এদিকে বাংলাভিশন টিভি চ্যানেলের মার্কেটিং বিভাগ জানায়, টিভি চ্যানেলগুলো সিনেমা চালায় মূলত দর্শক চাহিদার কারণে, আয়ের জন্য নয়। কারণ মিক্সড টিভি চ্যানেলে সিনেমা চালানো হয় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অফ পিক আওয়ারে। এ সময় বিজ্ঞাপনের রেট থাকে খুবই কম। চ্যানেলগুলো বিশেষত করোনা মহামারির আগে যখন আর্থিকভাবে সচল ছিল তখন দিনে একটি সিনেমা চালাত। করোনার পর আর্থিক অবস্থা কিছুটা মন্দা হওয়ায় কোনো কোনো টিভি চ্যানেল দিনে তিনটি সিনেমাও প্রদর্শন করে থাকে। কারণ এ সময় অন্য অনুষ্ঠান প্রচার করতে গেলে প্রতি অনুষ্ঠানে কয়েক লাখ টাকার বাজেট প্রয়োজন হয়। ওই জায়গায় যদি সিনেমা প্রচার করা হয় তাহলে কয়েক হাজার টাকায় তা সেরে নেওয়া যায়।

এনটিভির প্রোগ্রাম বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টিভি চ্যানেলে সিনেমা চালিয়ে তেমন আয় হয় না, মূলত দর্শক চাহিদা ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্যই অফ পিক আওয়ারে সিনেমা চালানো হয়। সিনেমার ক্ষেত্রে স্পন্সর নয়, বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়, তাও স্বল্পমূল্যে। সিনেমা প্রচারে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান দেয় প্রতি মিনিট সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। সেখান থেকে আবার ৫ পার্সেন্ট হারে ভ্যাট কেটে নেওয়া হয়। অথবা সিনেমা প্রচারের জন্য মাসে প্যাকেজ হিসেবে মাত্র ৩ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন দেয় কোনো কোনো সংস্থা। অবশ্য সিনেমার চ্যানেল পায় প্রতি মিনিট ১ হাজার টাকার বিজ্ঞাপন।


Leave a reply