Select Page

তবুও অপুকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি : টিভি লাইভে শাকিব

তবুও অপুকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি : টিভি লাইভে শাকিব

দাম্পত্য বিতর্ক নিয়ে লম্বা সময় নিয়ে টিভি লাইভে মুখ খুলেছেন শাকিব খান। মঙ্গলবার রাত ১০টায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি মুখোমুখি বসেন খালেদ মুহিউদ্দীনের। অনুষ্ঠানে এসে শাকিব খান কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘শুধু আমার ছেলে আব্রাহামের জন্যই অনেক কিছু মেনে নিয়েছি। বিকজ আই লাভ মাই সন। অপু যেহেতু আমার স্ত্রী, তাই বিতর্ক আর না বাড়িয়ে আমি ওকে মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কারণ অপু আমার স্ত্রী এবং সন্তানের মা।’

যদিও এই বিতর্কের শুরু থেকে দর্শক-সমালোচকদের অভিযোগের তীর শাকিব খানের দিকেই ছিলো। আছে এখনও। কারণ স্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ বছর তিনি তার স্ত্রী ও পুত্রকে আড়াল করার মতো অপরাধ করেছেন। একই ইস্যুতে দেড় বছর পর প্রকাশ্যে ফিরে রাজপুত্র আব্রাহাম খানকে কোলে নিয়ে কেঁদে-কেটে দারুণ সমবেদনাও আদায় করেছেন অপু। অথচ শাকিব খান এই অনুষ্ঠানে এসে ‘অপুকে ক্ষমা করে দিয়েছি’ এবং নিজেকে কথায় কথায় একজন ‘সুপারস্টার’ দাবি করে দিলেন!

এই নিয়ে শাকিবের বিপক্ষে তীরের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুন- এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অনুষ্ঠানের এক সময়ে শাকিব খান মিষ্টি হাসি দিয়ে এটুকুও যোগ করে বলেন, ‘মাশআল্লাহ আমার ছেলে দেখতেও খুব সুন্দর হয়েছে।’

এদিকে রাত ১০টায় শুরু হওয়া সরাসরি এই অনুষ্ঠানের শুরুতেই শাকিব খান বেশ আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে আমি বহুবার এসেছি। প্রতিবারই কোনও না কোনও সুখবর নিয়ে এসেছি দর্শকদের সামনে। শুধু আজকের প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন। আমি বলবো না আজকের বিষয়টা অশুভ। বাট বিষয়টা এমন নাও হতে পারতো। আরও অনেক সুন্দর হতে পারতো। আফসোস এখানেই।’

কথা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,`ব্যাপারটা আরও সুন্দর হতে পারতো। আমার ছেলেকে এমন প্রেজেন্টেশন দিতে চাইনি। আমি চেয়েছি আমার ছেলেকে শাকিব খানের মতোই মানুষের সামনে প্রেজেন্টেশন দিতে। কিন্তু সেটি আর হলো না।’

খালেদ মুহিউদ্দীনের পাল্টা প্রশ্ন ছিল কেমন প্রেজেন্টেশন হতে পারতো? শাকিব বলেন, ‘আমি চেয়েছি একজন সুপারস্টারের ছেলের মতোই সবার সামনে তুলে ধরতে।’

পাল্টা এক প্রশ্নে অনুষ্ঠান সঞ্চালক শাকিব খানকে বলেন, আমি জানিনা- অপু বিশ্বাসকে আমি আপনার স্ত্রী বলবো কি না। কারণ আমি গতকাল থেকে অনেক ধরনের কথা শুনছি। অপনি একবার বলছেন অপু আপনার স্ত্রী। একবার বলছেন বিয়েটা হয়নি এখনও। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আপনার আসলে সম্পর্কটা কী ছিল, কেমন আছে এবং কী থাকবে?

এবার শাকিব একটু বিব্রত। তবে নিজেকে সামলে উঠে ঝটপট জবাবে বলেন, ‘অপু আমার ছেলের মা। অফকোর্স সে আমার স্ত্রীও। কারণ, আমার ছেলে তো অবৈধ নয়। আমার সন্তানের মা হিসেবে সে অনেক উপরে। বাট সাম হাউ- কিছু অশুভ মানুষ কাছের মানুষ অপুকে দিয়ে এই বিব্রতকর কাজটা ঘটিয়েছে। এটা আমি আগে বুঝতে পারিনি।’

শাকিব আরও বলেন, ‘আমি নিজেও বুঝিনি কালকের ঘটনা কেন হলো। আপনারা খেয়াল করবেন- অপু নিজেই বলেছেন আমি সময় দিয়েছি। বাচ্চাকে আদর করেছি। টাকা দিয়েছি। পারিবারিকভাবে সবাই বিষয়টি অবগত। তাহলে সে আর কী চায় আমার কাছে? সে আসলে আমার সন্তান কিংবা সংসার চায়নি। চেয়েছে তার ক্যারিয়ার রক্ষা করতে। আমি নিজেও কোরবানীর ঈদে তাকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছিলাম। বাট সেটা তো আর হলো না। আমার ক্যারিয়ারের চেয়ে অপু তার নিজের ক্যারিয়ারকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিল।’

শাকিব জানান, ‘যে ঘটনা ঘটেছে এরপর আর কখনও আমাদের জুটি হয়ে পর্দায় আসা হবে না। কারণ, স্বামী-স্ত্রী নায়ক-নায়িকা হতে পারে না। এটা আমাদের দর্শক নিবে না।’

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সঞ্চালকের এক প্রশ্নে শাকিব বলেন, ‘যা হয়েছে তাতে আমার অনেক মানহানি হয়েছে। আমি অনেক ক্ষুব্ধ হয়েছি। তবুও এই সময়ে এসে, আমি ওকে মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কারণ অপু আমার স্ত্রী এবং সন্তানের মা।’

এর আগে দুপুরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নিজের কথা পাল্টান শাকিব খান। সোমবার বাচ্চাকে মেনে নিলেও স্ত্রী অপু বিশ্বাসের দায়িত্ব নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন গণমাধ্যমে। কিন্তু মঙ্গলবার বেলা তিনটা নাগাদ গণমাধ্যমে নতুন স্টেটমেন্ট দেন। বলেন, ‌‌‘বাচ্চা যেহেতু আমার সেহেতু অপুও আমার ওয়াইফ। গতকাল রাগের মাথায় অনেক কথাই বলেছি। সেটা ঠিক ছিল না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাচ্চা তো অবৈধ কিছু না, ওয়াইফও না। অপুও হয়তো বুঝতে পারেনি বিষয়টি এভাবে খারাপ দিকে যাবে। আসলে একটা চক্র অপুকে ঠাণ্ডা মাথায় উসকে দিয়েছে। তা না হলে ও এমন কাজ করার কথা না। সে (অপু) এখন হয়তো বুঝতে পারছে তার ভুলের বিষয়টি। আমি নিজেও জানি কারা করেছে এই চক্রান্ত। তাদের কাজই এটা, কেউ উপরে থাকলে নিচে নামানোর চেষ্টা করে এই চক্র।’

শাকিবের নতুন মন্তব্যে অপু তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘গতকাল থেকে আমি এই কথাটাই বলতে চেয়েছি। আমি তো খুব বেশি কিছু চাইনি। চেয়েছি স্বীকৃতি। আমি খুশি সন্তান ও আমার স্বীকৃতি পেয়ে। কারণ এখন আমি মানুষের সামনে মুখ উঁচু করে চলতে পারবো। এরচেয়ে ভালোলাগার কিছু হয় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি যা কিছু করেছি নিজের সামাজিক স্বীকৃতি আর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে করেছি। কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাকে দিয়ে কিছু করাননি।’

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন


মন্তব্য করুন