Select Page

দুই দিনের দুনিয়া’য় চঞ্চল-বাবুর ভেলকি!

দুই দিনের দুনিয়া’য় চঞ্চল-বাবুর ভেলকি!

দুই দিনের দুনিয়া’য় যা প্রত্যাশা করেছিলাম ঠিক তাই’ই পেয়েছি

এ সময়ের সেরা দুই অভিনেতা- চঞ্চল চৌধুরী আর ফজলুর রহমান বাবুকে একসাথে দেখতে পাওয়াটা দর্শকদের জন্য নিঃসন্দেহে একটা বড় প্রাপ্তি; তার উপর ছবির নির্মাতা যদি হন অনম বিশ্বাসের মতো দক্ষ কেউ- তাহলে তো সোনায় সোহাগা!

চরকি’র নতুন ছবি ‘দুই দিনের দুনিয়া’ তাই আগ্রহ নিয়েই দেখতে বসেছিলাম।

যা প্রত্যাশা করেছিলাম ঠিক তাই’ই পেয়েছি ছবিতে।

অনম বিশ্বাসের চমৎকার নির্মাণ আর চঞ্চল, বাবুর অভিনয় জাদুতে ১ ঘন্টা ২৪ মিনিট দৈর্ঘ্যের ওয়েবফিল্মটি এক বসাতেই দেখে ফেললাম।

ছবির গল্পটা ইন্টারেস্টিং।

চঞ্চল চৌধুরী একজন ট্রাক ড্রাইভার। একদিন এক অচেনা বয়স্ক লোক অর্থাৎ ফজলুর রহমান বাবু তাকে ফলো করে। চঞ্চল কৌতুহলে হয়ে কারনটা জানতে চাইলে লোকটা জানায় যে, সে ভবিষ্যত থেকে এসেছে। সে আরো জানায় যে, চঞ্চলের সামনে বড় বিপদ আছে। যদি তার কথা মতো চঞ্চল চলে তাহলে সে বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পারে।

এরপর ধীরে ধীরে গল্পের একেকটি অধ্যায় উম্মোচিত হতে থাকে এবং আমরা জানতে পারি চঞ্চল সম্পর্কে, ফজলুর রহমান বাবু সম্পর্কে। কে এই বৃদ্ধ লোকটা! তার উদ্দেশ্য কী কিংবা কেন সে এসব আজব কথা বলছে! ট্রাক ড্রাইভারেরই বা কেন বিপদ হবে কিংবা কোন কর্মের ফল এই বিপদ! সে কি বিপদ থেকে উদ্ধার পাবে – এসব কিছুই সুন্দর ও গোছানোভাবে নির্মাতা ছবিটিতে দেখিয়েছেন।

ছবির গল্প, চিত্রনাট্য যেমন গোছানো তেমনি সুন্দর এর লোকেশন এবং সিনেমাটোগ্রাফি। সুন্দর কালারে দৃশ্যগুলো দেখে আরাম পাওয়া গেছে।

অনম বিশ্বাসের নির্মাণস্টাইল বরাবরের মতোই আধুনিক ও চমৎকার।

ফজলুর রহমান বাবু আর চঞ্চল চৌধুরীর মতো অভিনেতা কোন ছবিতে থাকলে সে ছবি শুধুমাত্র অভিনয়ের জন্যই দেখা যায়। দুই দিনের দুনিয়া’য় চঞ্চল, বাবু একসাথে যে ভেলকি দেখিয়েছেন তা মিস করা আমার দ্বারা সম্ভব ছিল না। বাংলদেশে আমার প্রিয় অভিনেতার তালিকা করলে এই দুজনের নাম আমি উপরের দিকেই রাখবো। ‘দুই দিনের দুনিয়া’য় তারা দুজনেই নিজ নিজ চরিত্রে সেরাটা দিয়ে আবারো প্রমাণ করলেন কেন তারা সময়ের সেরা অভিনেতার খেতাবধারী।

যদিও গোটা ছবি জুড়ে স্বভাবতই এই দুই অভিনেতার ভেলকি দেখা গেছে তারপরও অন্যান্য অভিনয় শিল্পীরাও নিজ নিজ চরিত্রে দারুণ মানিয়ে গেছেন।

চঞ্চল চৌধুরীর স্ত্রীর চরিত্রে এক সময়ের প্রিয় অভিনেত্রী তানভিন সুইটি চমৎকার অভিনয় করেছেন। তার বড় বড় চোখের ধারালো এক্সপ্রেশন দিয়ে তিনি যেন তার করা প্রতিটি দৃশ্যকে অন্য লেভেলে নিয়ে গেছেন।

আমাদের মেধাবী অভিনেত্রীরা সুযোগ পেলে যে কীভাবে জ্বলে ওঠেন তারই আরেকটি প্রমাণ যেন এ ছবিতে তানভিন সুইটির অনবদ্য অভিনয়।

এছাড়া ছোট্ট একটি চরিত্রে মৌসুমী হামিদকেও ভালো লেগেছে।

ট্রাক ড্রাইভার চঞ্চল চৌধুরীর হেলপার চরিত্রের ছেলেটাকেও দারুণ লেগেছে।

সবমিলিয়ে, নির্মাণ আর অভিনয় গুণে ‘দুই দিনের দুনিয়া’ ভালোভাবেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

মন্তব্য করুন