Select Page

‘পরাণ’ হিট না হইলে এত তাড়াতাড়ি ভাঙার দশায় যাইত না সংসার

‘পরাণ’ হিট না হইলে এত তাড়াতাড়ি ভাঙার দশায় যাইত না সংসার

শরিফুল রাজের ফিলিম পরাণ হিট না হইলে এত তাড়াতাড়ি রাজ – পরীমনির সংসার ভাঙার দশায় যাইত না। পরীমনি ছিল পরিচিত নায়িকা ইন্ড্রাস্ট্রির, সবচাইতে আলোচিত সমালোচিত, এবং বিয়ার সময় রাজ ছিল অপরিচিত। এই অপরিচিত রাজের রাতারাতি এত বেশি জনপ্রিয় হইয়া যাওয়া, অবশ্যই সমস্যার তৈরি করবে দুইদিক থেকেই।

রাজ আগে যা মানত, এখন জনপ্রিয় রাজ তা মানবে না। আর আগে পরীমনি যেইটা বিনাবাক্যে হাসিমুখে মানতে দেখত, সেইটা এখন না মানা হইতেছে দেখলে সহ্য করবে কীভাবে?

তার সাথে যুক্ত হইল, মিম। পরাণ ছবির হিট নায়িকা। তার হাত ধইরা পোলা করলো ভুল। আরো নিশ্চয়ই কিছু কিছু ঘটনা আছে।

পরীমনির ক্যারেক্টার যদি খেয়াল করেন, তার কর্মকাণ্ডে একটা প্যাটার্ন আছে। সে আবেগ দিয়া চলে, এবং খুব সম্ভবত তার ছোট বেলায় বাপ মায়ের মৃত্যু তারে এমন একটা অবস্থায় ফেলছে যে সে এফেকশন খোঁজে। তারে আপনে ধরতে পারেন হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের মেয়েগুলার মত। ধরা যাক এইসব উপন্যাস থেকে উইঠা আসা মেয়ে, যে মন প্রাণ সঁপে যার কাছে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নিল, সেই রাজরে রাইত তিনটায় ফোন দিয়া বলল সে ছাদে যাইতে চায়, গিয়া চাঁদ দেখতে চায়।

আগেকার অপরিচিত রাজ হইলে না করত না। কিন্তু এখনকার জনপ্রিয় রাজ তো শ্যুটিং এ, ওই ফিল্মে সে আবার আবার মিমের নায়ক, সে কি আর আসবে? এই দুঃখ পরীমনি নিবে ক্যামনে।

অন্যদিকে রাজের দিকটাও খেয়াল করেন। কম স্ট্রাগল করে নাই ফিল্মে। তার লাকি ফিলিম পরাণ দিয়া সে অবিশ্বাস্য সাকসেস পাইল, এবং মনে হইল সে বাংলা ফিল্মের এক নতুন ঘটনা যেন। এইটা একজন অভিনেতার সারাজীবনের স্বপ্ন। এখান থেকেই তার জয়রথ শুরু হবার কথা। এই অবস্থায়, সে পড়ছে পরীমণির মত একটা ডিস্ট্রার্বড চাইল্ডহুডের আবেগী মেয়ের প্রেমে। কারো পূজার বস্তু হওয়া ভয়ংকর, তাও এইরকম একজনের হইলে তো কথাই নাই। সে তার প্রেম ও পূজা দিয়া সমগ্ররে গ্রাস করতে চাইবে, সকল এটেনশন, সকল ক্রিয়েটিভ এনার্জি কেবল তারে কেন্দ্র করেই ধাবিত হোক, এমন চাইবে। অভিনেতা রাজ, জীবনের সবচাইতে সেরা সুযোগের সময়ে নিজের সকল এটেনশন, ক্রিয়েটিভ এনার্জি প্রেমিকার দিকে দিয়া কি নিজের কেরিয়ার ও স্বপ্নরে বিসর্জন দিতে পারবে? ত্যাগ হিশাবে বেশি বড় হয়ে যায়।

তাহলে, এখন করণীয় কী আছে এই দুইজনার, যদি সংসার টিকাইতে হয়? আমি বলব কাউন্সেলিং ছাড়া আর কোন পথ নাই। কাপল কাউন্সেলিং, নিজেদের ইগোর দ্বন্দ্বরে বুঝতে হবে ও কন্ট্রোল করতে হবে তাদের।

পরীমনিরে মানতে হবে রাজের নায়ক হিশাবে কেরিয়ার। এবং নিজে প্রত্যাবর্তন করতে হবে আবার ফিলিমে। রাজরে বাদ দিয়াই নিজের ফিলিম করতে হবে।

নিজের উইকনেসগুলা, সেইটা রাজের হইতে পারে, যেমন কোন ধরণের এডিকশন বা এগ্রেশন কন্ট্রোল করতে না পারা জনিত সমস্যা, আর পরীমনির ক্ষেত্রে তার বেড়ে উঠা ও পরবর্তী জীবনের বাস্তবতায় তৈরি হওয়া কিছু সমস্যা, এইগুলা বুঝে, এদের সাথে ডিল করার উপায় বের করতে হবে।

অন্যথায়, দুইজন তারা সংসার টিকাইতে পারবে না ফিল্মে থেকে।

স্বেক্ষেত্রে আরেক অপশন, সংসার টিকাইতে দুইজনেরই ফিলিম ছাইড়া ইউরোপ বা আমেরিকায় চলে যাইতে হবে। সংসারকেই ধ্যান গ্যান জীবনের ব্রত মনে কইরা চলতে হবে। এটা প্রায় অসম্ভবই।

এবং আরেক পয়েন্ট ও আয়রনি, পরাণ ফিল্ম মিন্নি ও নয়ন বন্ড এনাদের কাহিনী নিয়া, অনুমতি ছাড়াই একটা পাবলিক উদযাপন হইছে। ঘটনাটা কিন্তু খুব দুঃখের, কে দোষী তা নির্দিষ্ট করা যায় না। নয়ন বন্ডরে তো মাইরা ফেলল সরকার। এই কাহিনী দিয়া জনপ্রিয় হওয়া রাজের নিজের জীবনে মিন্নির বদ দোয়া লাগে নাই, এটা বলা যায় না। যদি বদ দোয়া এখানে ফাংশনাল থাকে তাহলে নেক্সটে আমরা মিম ও নাটের গুরু রায়হান রাফীর ক্ষেত্রেও এমন কিছু ঘটতে দেখব, আমি এই সাধুদের সাবধান হইতে বলছি। মিন্নির কাছে গিয়া তারা মাপ চাইতে পারেন।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

লেখক ও বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন