পরীমনিকে নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আবার শুরু করলাম: গিয়াস উদ্দিন সেলিম
গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে পরীমনির দুটি ছবি। পূর্ণদৈর্ঘ্যে ‘স্বপ্নজাল’ ও ছোটদৈর্ঘ্যে ‘প্রীতি’। এর মধ্যে ‘স্বপ্নজাল’কে পরী মনে করেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম ও প্রধান বাঁক বদলের উপাদান হিসেবে। সমালোচকেরাও নায়িকা প্রসঙ্গে এ ছবির নাম নেন।
সাম্প্রতিক মাদক মামলায় পরীমনিকে হেনস্তা করার বিপরীতে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন ‘মনপুরা’ নির্মাতা। জামিন আদেশের পর তিনি পরীকে নতুনভাবে শুরুর পরামর্শ দেন। পারলে এখনই পরীকে নিয়ে সিনেমা বানাতে চান, যদিও এখনই তা সম্ভব নয়।
এই নির্মাতা মনে করেন, জেল থেকে বের হওয়ার পর পরীকে আরও সচেতন হতে হবে। নতুন করে জীবনটাকে গোছাতে হবে। মানসিক শক্তিটা রিকভার করা জরুরি। তা না হলে, ঘুরে দাঁড়ানো কষ্ট হয়ে যাবে পরীমনির জন্য।
সেলিম বলেন, ‘পরীর এই সাময়িক মুক্তিতে আমি যতটা খুশি, ততধিক খুশি হতাম দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি ওকে আমার সিনেমার জন্য কাস্ট (চুক্তিবদ্ধ) করতে পারতাম। আমি বরং সেই সুসময়ের অপেক্ষায় আছি। ওকে নিয়ে আবার সিনেমা নির্মাণের। সে জন্যই প্রার্থনা করছি, ফেরার পর ও যেন দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। ফের কাজে মন বসাতে পারে।’
সেলিম বলেন, ‘জামিনের আগে আমার পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টার সেটা করেছি। আমার হাত আর কতই লম্বা। কতটুকুই বা পারি বলুন! যেমন, আমার তো ইচ্ছে পরীকে নিয়ে দ্রুত সময়ে আরেকটা সিনেমা তৈরির। কিন্তু সেটা তো এখনই সম্ভব না। আমার হাতে একটা নতুন কাজ রানিং। তবে ওকে নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আবার শুরু করলাম। কারণ, ওকে শুটিং স্পটে দেখলে সবচেয়ে খুশি হতাম। সেটা যার ইউনিটেই হোক। প্রার্থনা করি, ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক দ্রুত।’
যে প্রক্রিয়ায় পরীমনি ও চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে সেটি সমর্থন করেন না বলে সপ্তাহ দুয়েক আগে জানিয়েছেন পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম। এ ঘটনা শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন বলেও মনে করেন তিনি।
সেলিম বলেন, ‘পরীমনি এবং চয়নিকা চৌধুরীকে আটকের ঘটনা দেখে আমার মনে হয়েছে আমরা বোধহয় আরো দুজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করছি। পরীমনিকে যেভাবে আটক করা হয়েছে, তাতে তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। কারণ কোনোরকম সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়া কাজটি করা হয়েছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক।’
পরীমনি গ্রেপ্তারের পরপরই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি এই চিত্রনায়িকার সদস্যপদ স্থগিত করে। এ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘জায়েদ খানের কথা টক শোতে শুনেছি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়েছেন। সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যরা নেতা হিসেবে বিষয়টি দেখেননি বরং ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়েছেন বলে আমার মনে হয়েছে।’
‘বন্ধু বাড়াতে হবে। বন্ধু না থাকলে সংগঠন দাঁড়াবে না। তাদের কথাবার্তা খুবই দায়সাড়া এবং এই মনোভাব অপেশাদার’ বলেও উল্লেখ করেন এই নির্মাতা।
পরীমনিকাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আমরা শুধু অন্যের ভুল-ত্রুটি ধরার জন্য এই মিডিয়া ব্যবহার করছি। নিজে কেমন সেই চিন্তাটা অনেকেই করেন না। আমরা জাতিগতভাবে, অন্যের ভুল নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি। এক ধরনের মিডিয়া, ক্যামেরা ট্রায়াল হচ্ছে। বিচারে অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পর একজন মানুষকে অপরাধী বলা যায়। কিন্তু সেটা হচ্ছে না, তার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসুস্থভাবে আমরা বিচার করে ফেলছি।’
বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য নুসরাত ফারিয়া ও শরীফুল রাজকে নিয়ে ‘গুনিন’-এর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সেলিম। শিগগিরই শুরু হবে শুটিং। এ ছাড়া হাতে আছে সরকারি অনুদানের ‘কাজল রেখা’, এ ছবির কাস্টিংয়ের ঘোষণা এখনো আসেনি।
সুত্র/ বাংলা ট্রিবিউন ও রাইজিং বিডি