![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
‘মধ্যবিত্ত ভালো সিনেমা চায়, হলে যায় না’
মধ্যবিত্তের দেখার মতো সিনেমা নির্মাণ হয় না; এমন দাবি অনেকেরই। আবার খোলা চোখে দেখলে, অনেক সিনেমা নানাভাবে প্রশংসিত হলেও দর্শক খরায় হল থেকে নেমে গেছে সাম্প্রতিক অতীতে। এইসব প্রসঙ্গে ‘সাঁতাও’ নির্মাতা খন্দকার সুমন জানান, মধ্যবিত্তই ভালো সিনেমার জন্য সমস্যা। কারণ তারা ভালো সিনেমা দেখতে যায় না।
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/01/saatao1_bmdb_iamge.jpg?resize=862%2C569&ssl=1)
সম্প্রতি পরপর কয়েকটি সিনেমা হল পাওয়া নিয়ে সমস্যায় ভুগেছে। এমনকি কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রথম অফিশিয়াল নির্মাণটিও যথাযথ সম্মান পায়নি।
হল সমস্যা নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে খন্দকার সুমন বলেন, ‘… কারণ কমার্শিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর (পরিবেশক) যারা আছেন, তারা বলছেন যে এই বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ভালো সিনেমা চায়, কিন্তু ভালো সিনেমা দেখতে কখনো সিনেমা হলে যায় না।
পরিবেশকরা বলেছিলেন, ‘…অ্যাওয়ার্ড পাবে। এটা আপনার সান্ত্বনা। এরা (মধ্যবিত্ত) প্রত্যেক বছর বছর ২৬ শে মার্চ বা ১৬ই ডিসেম্বরে এই সিনেমাগুলো টিভিতে দেখবে আর ফেসবুক স্ট্যাটাস দেবে যে, আহ কী সুন্দর সিনেমা বানিয়েছে। কিন্তু তার সিনেমা হলে যায় না।‘
এ কথা ‘বিশ্বাস না’ করে এক প্রকাশ চ্যালেঞ্জই নিয়েছিলেন সুমন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের শিক্ষিত-মধ্যবিত্ত সমাজ এটা প্রমাণ করছে যে ঢাকা শহরে বিশেষ করে, ঢাকার বাইরে যারা শিক্ষিত-মধ্যবিত্ত নয় নিম্নবিত্ত তারাও দেখছে।’
সাক্ষাৎকারে নিজেকে থিয়েটারকর্মী হিসেবেও উল্লেখ করেন খন্দকার সুমন। জানান, শুধু মধ্যবিত্তই নয় সিনেমার প্রতি থিয়েটারকর্মীদের অবজ্ঞা দেখেছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে পেশাদার থিয়েটার না হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন মন্তব্যে।
তিনি বলেন, ‘কোনো থিয়েটারকর্মী সিনেমাটি দেখতে যায়নি। এগুলো অবজ্ঞা। যখন এই মানুষগুলো সিনেমা হলে যাইতো তখন কোনো সিনেমা হল থেকে নামায় দিতো না। …. ঢাকার শহরের থিয়েটারের যারা কর্মী তারা সিনেমাকে কখনো বিশ্বাসই করেন নাই। ফলাফলে তারা নিজেরাও এখনো কোনো প্রফেশনাল থিয়েটারেও ঢুকতে পারে নাই। এই প্রফেশনাল থিয়েটারে ঢুকতে না পারার কারণে তাদের কী হইছে, সাম্রাজ্যবাদের মতো একটা করে দল হইছে। দলটার নাম হইছে ওমুকের দল তমুকের দল।’
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2023/02/khandokar_sumon_bmdb_image.jpg?resize=858%2C480&ssl=1)
‘এ কথাগুলো আপনার অস্বস্তি তৈরি করার জন্য আপনাকে ঘুম পাড়ানোর জন্য না’, কথা প্রসঙ্গে সঞ্চালককে এমনটাও বলেন নির্মাতা।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘সাঁতাও’-এর নায়িকা আইনুন পুতুল। প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে গতবছরের ব্লকবাস্টার ‘হাওয়া’র কথা। সঞ্চালকও ওই ছবির প্রশংসা করেন। সেই প্রসঙ্গে সুমন বলেন, মধ্যবিত্ত মাইন্ডগেম পছন্দ করে। যখন কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেদের সিনেমার টিকিট কিনে আর দর্শক এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে যায়, তখন তারা ওই সিনেমার প্রতি আকর্ষিত হয়। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সমর্থনপুষ্ট ‘হাওয়া’র ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে বলে জানান। সেক্ষেত্রে তিনি ‘অরগানিক’ভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে চান বলে উল্লেখ করেন।
গত ২৭ জানুয়ারি মুক্তি পায় ‘সাঁতাও’। ছবিটি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্যানারোমা বিভাগে সেরা নির্বাচিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ভাষা চলচ্চিত্র উৎসবে শব্দশৈলী বিভাগে জিতেছে পুরস্কার। এ ছাড়া একাধিক আন্তর্জাতিক উৎসবে পেয়েছে সমাদর।
সিনেমা কেবল নির্মাণর গুণে কখনই সফল হয়নি। পরিবেশন যথাযথ হওয়া চাই। খন্দকার সুমনের মতো নির্মাতার সংখ্যা কম নয়, যারা কেবল ভালো সিনেমা নির্মাণ করেই সফল হতে চান। এবং, পরে দর্শকের উপর ক্ষোভ ঝাড়েন।