Select Page

মাহি কি সুপারস্টার?

মাহি কি সুপারস্টার?

একজন অভিনেত্রীকে সুপারস্টার হতে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে? আমি দশটি পয়েন্টের মাধ্যমে আলোচনা করছি—

১. অভিনেতাদের মতোই নিজেকে সিনেমার প্রাণবিন্দুতে সচল রাখতে হবে।

২. গ্রাম্য-শহুরে সব শ্রেণির দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে হবে।

৩. ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমাগুলোতে তাকে নিয়ে পরিচালক-প্রযোজক দের আস্থা থাকতে হবে।

৪. সিনেমায় অন্যান্য আর্টিস্টদের থেকে তার প্রতি আলাদা আকর্ষণ থাকতে হবে, এমনকি তারকাবহুল চলচ্চিত্রেও নিজের উপস্থিতি ঠিক রেখে প্রশংসা কুড়িয়ে নিতে হবে।

৫. নিজেকে সুপারস্টার হিসাবে প্রমাণ করতে, ইন্ডাস্ট্রিতে থাকা পরিণত সুপারস্টারের সাথে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে।

৬. নিজ দর্শকদের প্রতি আস্থা রেখে বারবার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।

৭. কখনও সম্ভব হয়নি মিডিয়ায় এমন কোন নতুন ধাপ ইন্ডাস্ট্রিকে উপহার দিতে হবে।

৮. অধিক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েও নিজ দর্শকপ্রিয়তা ধরে রাখতে হবে।

৯. সফল সিনেমা উপহার দেবার জন্য কোন বড় উৎসবের জনপ্রিয়তা বা কোন বড়স্টারের জনপ্রিয়তায় বিশ্বাস করা যাবে না।

১০. সর্বোপরিই, নিজ টানে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক আনতে হবে।

এই গুণগুলো যে অভিনেত্রীর মাঝ থেকে খুঁজে পাওয়া যাবে তাকে সুপারস্টার মানতে কি আপনার কোন অসম্মতি আছে?

উপরোক্ত প্রতিটি গুণই মাহির মাঝে লক্ষ্য করা যায়। তাই আপত্তিহীনভাবেই তাকে সুপারস্টার ভাবতে পারি। বিয়ের পর অধিকাংশ ইন্টারভিউতেই মাহিকে সুপারস্টার বলেছে উপস্থাপকরা। তারা সত্য কথাটিই বলেছেন।

আসুন, উল্লেখিত সুপারস্টার গুণগুলো মাহির মাঝ থেকে খুঁজে নিই—

১. অভিনেতাদের মতোই মাহি সিনেমার প্রাণবিন্দুতে নিজেকে সচল রাখে। এরপ্রমাণ বারবার বিভিন্ন সিনেমায় পেয়েছি। কখনও সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করে প্রাণবিন্দুতে থেকেছেন, কখনও সিনেমার গল্প তার ভালোবাসাকে ঘিরে রেখেছে।

২. সব চরিত্রে সব স্থানের দর্শকদের হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে মাহি। ভালবাসার রঙ, অন্যরকম ভালবাসা,আজকাল বা জুলিয়েট হয়ে একদিকে রোমান্টিক প্রেমীদের মন কেড়েছে।

অন্যদিকে অগ্নি, বিগ ব্রাদার বা অগ্নি টু দিয়ে উত্তেজিত দর্শকের গভিরে ঢুকেছে।

যেমনভাবে ময়নামতির ময়না বা পোড়ামন-এর পরী হয়ে গ্রাম বাংলার দর্শকদের মানিয়ে নিয়েছে, তেমনভাবে কৃষ্ণপক্ষের অরু হয়ে স্তব্ধ নিথর দর্শকের হৃদয় নেড়েছে।

৩. যখন দুইবাংলার সব থেকে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্রে একমাত্র মাহির উপর আস্থা রেখে বাজি ধরেছিল পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী, দেশিয় প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং ভিনদেশি প্রডাকশন এসকে মুভিজ, তখন মাহি কিন্তু তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়নি। একের পর রেকর্ড ভেঙে মান রেখেছেন নিজের কাজের। এখনও পরিচালকরা সম্পূর্ণ মাহিকে কেন্দ্র করে গল্প লিখে ঘুড়ছেন মাহির পিছে।

৪. তারকাবহুল সিনেমায় পর্দা উপস্থিতি বা প্রশংসা নিয়ে যদি কিছু বলতেই হয় তাহলে ঢাকা অ্যাটাক লক্ষ করুন। ৭/৮ জন আকর্ষিত তারকা থাকার সত্ত্বেও মাহির উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না কেউ। এমনকি এতগুলো তারকার মাঝে মাহি একাই যা প্রশংসিত হয়েছে তা দৃষ্টিগোচর।

৫. নিজেকে সুপারস্টার হিসাবে প্রমাণ করতে সফলতার ক্যাটাগরিতে সুপারস্টারের মতো করে দেখিয়েছে মাহি। বছর শেষে সেরা দশে সুপারস্টার শাকিব খানের ৪টি সিনেমা থাকলে মাহিও এগিয়ে এসেছে তিনটি নিয়ে, কোন নায়ক আসেনি শাকিবকে প্রতিযোগিতা করতে। কখনও বা শাকিবের সাথে পাল্লা দিয়েই একের পর এক রেকর্ড ভেংগে গিয়েছে মাহি।

৬. তার দর্শকদের প্রতি বিশ্বাস রেখে এখনও মাহি নতুনদের সাথে কাজ করছে। নতুন নায়ক, নতুন পরিচালকদের মিডিয়ায় আসার এক সুযোগ করে দিচ্ছে, তার জনপ্রিয়তায় বারবার আলোচনায় আসছে তারা।

৭. মারমার কাটকাট টাইপের অগ্নি দিয়ে পুরো ইন্ডাস্ট্রিকেই পাল্টে দিয়েছেন মাহি। যুক্ত করেছেন ঢালিউডের নতুন এক ক্যাটাগরি। ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আবারো এসেছেন সিক্যুয়েল নিয়ে।

৮. জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাথে বিতর্ক আর আচমকাই বিয়ে করে যে সমালোচিত হয়েছেন মাহি তার জবাব ঢাকা অ্যাটাক সিনেমাই দিয়ে দিয়েছেন। বোঝা যায় কতটা বেড়েছে তার হলদর্শক।

৯. উৎসববিহীন সময়গুলোতে পোড়ামন,অগ্নি,জুলিয়েট বা ঢাকা অ্যাটাকের সফলতাই এনে দিয়েছে মাহিকে সফলতা শীর্ষে। কোন স্টারের স্টারডম ব্যবহার না করে, ফ্লপস্টার,নতুন স্টারদের সাথেই বারবার উপহার দিয়েছে তার দুই ব্লকবাস্টার অগ্নি সিক্যুয়েল।

১০. আর সর্বোপরিই, মাহির নিজ টানে দর্শক টানে প্রেক্ষাগৃহে। কথাটি বিশ্বাস করেছেন, তার পরিচালক প্রযোজকরা। এমনকি মাহি নিজেও।

সুপারস্টার হতে খুব বেশি সিনেমা থাকার প্রয়োজন হয় না, এ রকম উদাহরণ অনেক পাওয়া যাবে। তাই ক্যারিয়ারের ১৮ সিনেমা নিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীকে সুপারস্টার ভাবতে আমার কোন সমস্যা হয় না।


মন্তব্য করুন