Select Page

রহস্যময় ‘লাবনী’ শেষ পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখে  

রহস্যময় ‘লাবনী’ শেষ পর্যন্ত রহস্য ধরে রাখে  

বঙ্গর ‘বেইজড্ অন বুক’ সিরিজের চতুর্থ ছবি ‘লাবনী’ একটি রহস্যময় গল্প দেখায় (সাসপেন্স থ্রিলার জনরের গল্প বলা যায়)। মারুফ রেহমানের একই নামের উপন্যাস থেকে এটি বানিয়েছেন কিসলু গোলাম হায়দার। আর এতে অভিনয় করতেছেন মনোজ প্রামাণিক, মুমতাহিনা টয়া, শাহদাত হোসেন, আয়নুন পুতুল প্রমুখ।

ছবি শুরু হয় একটি খুনের দৃশ্য দিয়ে। একজন স্বামী তার স্ত্রীকে একটি চাকু দিয়ে খুন করে। এরপর দেখি একটি পুরাতন জিনিসপত্রের দোকানে কলের গান বাজে।

 

শোনা গেল লাশকাটা ঘরে

নিয়ে গেছে তারে;

কাল রাতে ফাল্গুনের রাতের আধারে

যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাদ

মরিবার হল তার সাধ।

 

জীবনানন্দ দাসের লেখা কবিতা গানের সুরে বাজে। ফলে শুরুতেই ছবিতে রহস্যময় পরিবেশ তৈরী হয়।

ধীরে ধীরে জানতে পারি, খুনের পিছনে কারণ হিসেবে রয়েছে এক রহস্যময় বই। মলাটহীন, ছেড়া একটি উপন্যাসের বই। বইয়ের উপরে লেখা ‘বইটি ভালো না’।

উপন্যাসের নায়িকার নাম ‘লাবনী’। লাবনী এক অদ্ভুত রহস্যময়ী নারী। সে বইয়ের পাতা থেকে যেন জীবন্ত হয়ে ধরা দেয় আর যুবক পাঠকদের মনোজগতে নিয়ে আসে বিপর্যয়।

ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাতা সাসপেন্স ধরে রেখতে পেরেছেন। বিশেষ করে সমাপ্তিটুকু একেবারেই আনপ্রেডিকটেবল এবং ইন্টারেস্টিং। নির্মাতার নির্মাণ স্টাইল খানিকটা রিপিটিটিব লাগলেও দৃশ্যে দৃশ্যে সাসপেন্স এবং থ্রিল তৈরিতে তিনি সক্ষম হয়েছেন।

মনোজ প্রামাণিক এবং মুমতাহিনা টয়া দুজনেই দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যদিও মনোজ প্রামাণিক একাই পুরো ছবি টেনে নেয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন। তাকে একইসঙ্গে গোবেচারা চরিত্র এবং শহুরে ডুড চরিত্র করতে হয়েছে। আবার তার দুটি চরিত্রেরই মানসিক অস্থিরতা কিংবা মনোজগতের দ্বন্দন্দ্বউঠে আসে। এমন জটিল মানসিকতার দুই চরিত্রে মনোজ যেন সহজে মিশে যায়। তাকে দেখতে যেমন ন্যাচারাল এবং সুন্দর লাগে তেমনি তার কন্ঠে, এক্সপ্রেশনে বয়িস চার্ম থাকায় তার পারফর্মেন্স উপভোগ্য লাগে।

মুমতাহিনা টয়া মনোজের মতো অতোটা ইন্টারেস্টিং চরিত্র পায়নি। তার চরিত্র দিয়ে ছবির নাম হলেও তার চরিত্র মনোজের চরিত্রের কাছে ম্লানই লাগে। তবে সে যতটুকু সূযোগ পেয়েছে তার মধ্যে থেকে সাবলীল অভিনয় করে গেছে। শাহাদাত হোসেন কম স্ক্রীন স্পেস পেলেও তার চরিত্র ভীষণ গুরুত্বপূর্ণএবং সে তার চরিত্রে মানিয়ে গেছে। বাকি দুইজন অভিনেত্রী অর্থাৎ মনোজের বোন এবং স্ত্রী চরিত্রের দুই অভিনেত্রীও সাবলীল ছিলেন।

সব মিলিয়ে, লাবনী সাসপেন্স থ্রিলার হিসেবে উপভোগ্য লেগেছে। ছবির গল্প, নির্মাণ স্টাইল এবং প্রধান চরিত্রে মনোজ প্রামাণিক ছবির শেষ দৃশ্য পর্যন্ত পর্দায় চোখ আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছে।


Leave a reply