Select Page

সন্তোষজনক ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’

সন্তোষজনক ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’

শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ এখন কমে গেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের গল্প থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র যথেষ্ট হয়েছে। ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন‘ তার ‘রাতুলের দিন রাতুলের রাত’ গল্প থেকে নির্মিত নতুন শিশুতোষ চলচ্চিত্র। পরিচালনা করেছেন আবু রায়হান জুয়েল।

সরকারি অনুদানে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। পূর্বে এ ধরনের ছবি যত হয়েছে সেগুলোর সাথে মোটামুটি সন্তোষজনক কাজ হয়েছে। এটা বলার কারণ ছবির মধ্যে কোথায় যেন ঘাটতি থেকে গেছে এটা মনে হবে।

সুন্দরবনগামী একটি জাহাজ একদল শিশুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ভ্রমণই তাদের লক্ষ্য। তাদের জাহাজে সেলিব্রেটিসহ আরো অনেকে আছে। জাহাজটি ভালোভাবেই এগিয়ে যায় কিন্তু একসময় বিপদ আসে তারপর সেই বিপদ থেকে উদ্ধারের উপায় তারা খুঁজতে থাকে। তারা শেষ পর্যন্ত বিপদমুক্ত হতে পারবে কিনা সেটাই ছবির শেষকথা।

শিশুতোষ চলচ্চিত্র অতীতে যেগুলো হয়েছে তার সবগুলো একরকম নয়। অ্যাডভেঞ্চার জাতীয় যে ছবিগুলো হয়েছে তার মধ্যে প্রথমে থাকবে ‘দীপু নাম্বার টু’ এরপর থাকবে ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’। এ ছবিগুলো অনবদ্য উপস্থাপনে। পরিচালক বড় একটি ফ্যাক্টর তো অবশ্যই। দুটি ছবিতেই কৈশোরের দুরন্তপনায় আবিষ্কার সংক্রান্ত বিষয় ছিল। ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’-এ আবিষ্কার সংক্রান্ত বিষয় নেই। ছবির শেষের দিকে কিছুটা আনন্দদায়ক উপাদান থাকলেও তা যথেষ্ট না বাকি ছবির তুলনায়।

ছবির প্রধান চরিত্রে সিয়াম আহমেদ তার ক্যারিয়ারের বৈচিত্র্যে এ ছবিতেও অভিনয় করেছে। শিশুতোষ ছবিতে প্রথমবারের মতো তার অভিনয় করা এবং গল্পের নামকরণসূত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে। ছবিতে যতটুকু প্রাণ এসেছে সিয়ামের মাধ্যমেই এসেছে। শিশুদের সামলানোর কাজটা তার চরিত্রের প্রধান দিক ছিল। গল্পে টার্ন সেই এনেছে। ছবির শেষেও তার চরিত্রের গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। পরীমণির জন্যও শিশুতোষ ছবি প্রথমবার। তার ন্যাচারাল অভিনয় এবং কিউটনেস দেখার মতো। শিশুদেরকে সামলানোর ক্ষেত্রে তারও একটা অংশগ্রহণ ছিল। সিয়ামের সাথে বন্ধুত্ব ও খুনসুটির দিকটাও ভালো ছিল। আবু হুরায়রা তানভীরও ভালো অভিনয় করেছে। শহীদুল আলম সাচ্চু এ ধরনের চরিত্রে আগেও কাজ করেছিল। সবচেয়ে অপচয় করা চরিত্র ছিল আজাদ আবুল কালামের, তার অভিনয়শক্তির চরিত্র এটা আসলে না। কচি খন্দকার কিছুটা বিরক্তির সৃষ্টি করেছেন অভিনয়ে। এছাড়া সেলিব্রেটি চরিত্রের মেয়েটির অভিনয় খুবই দুর্বল ছিল। শিশুর দলের অভিনয় ভালো এবং এটা ছিল পজিটিভ দিক। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত শিশু রাজা ছিল অন্যদের চেয়ে চরিত্রের দিক থেকে এগিয়ে।

গানের দিক থেকে ‘তুই কি আমায় ভালোবাসিস’ গানটাই সবচেয়ে ভালো ছিল। শিশুতোষ গান ‘আয় চলে সব তাড়াতাড়ি’ ওভারঅল ভালো হয়নি।

শিশুতোষ ছবির দর্শক এখন কমে গেছে তা কিন্তু বলা যাবে না। এমন ছবিও আকর্ষণীয় হতে হবে তাহলে দর্শক দেখবে। ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির টিম হয়তো চেষ্টা করেছে ভালো একটি ছবি উপহার দেওয়ার তবে কাজটি সন্তোষজনক হয়েছে, প্রত্যাশা আরো বেশি ছিল এটা বলতেই হয়।

শিশুতোষ ছবি আরো নির্মিত হোক।

রেটিং – ৭/১০


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন