Select Page

সমাজ খারাপ, চলচ্চিত্র তারই প্রতিচ্ছবি : সোহেল রানা

সমাজ খারাপ, চলচ্চিত্র তারই প্রতিচ্ছবি : সোহেল রানা

sohel-rana

‘চলচ্চিত্রের অবস্থা আসলে খারাপ হয়নি। খারাপ হলে আমাদের সমাজ খারাপ হয়েছে। চলচ্চিত্র হচ্ছে এই সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ রাজনীতির চেয়ে অনেক ভাল আছে।’— কথাগুলো চিত্রনায়ক সোহেল রানার। তার মতে, সমাজ ও চলচ্চিত্রের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। সমাজ বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করা ছাড়া চলচ্চিত্রকে বোঝা যাবে না।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’-এর প্রযোজক সোহেল রানা। পরে নায়ক খ্যাতির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় প্রযোজক পরিচয়। সম্প্রতি চলচ্চিত্র নির্মাণ, অভিনয়, স্বাধীনতাযুদ্ধ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কিংবদন্তি এই অভিনেতার মুখোমুখি হন মাসুম আওয়াল। ওই আলাপচারিতার নির্বাচিত অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল—

আপনার শৈশব-কৈশোর কোথায় কেটেছে?
আমার জন্ম ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৯৪৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। শৈশব-কৈশোর কেটেছে ময়মনসিংহে।

পুরো স্কুলজীবন কি ময়মনসিংহে কেটেছে?
আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। প্রতিবছরই বিভিন্ন জেলায় তার পোস্টিং হতো। ১০ বছরে প্রায় ১২-১৪টি স্কুলে আমি পড়েছি। অষ্টম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হাই স্কুলে। এখান থেকেই ম্যাট্রিক পাস করেছি। পরে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে পড়েছি।

কলেজজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন?
হ্যাঁ, আনন্দমোহন কলেজেই ১৯৬১ সালে আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। ১৯৬৩ সালে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হই। ১৯৬৫ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি হই। ১৯৬৬ সালে ময়মনসিংহের রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের এজিএস হই। তখন রাজা ভাই সম্পাদক, আমি সহ-সম্পাদক।

১৯৬৮ সালে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে অনার্স শেষ করি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় ৭ জনের রেজাল্ট আটকে যায়, আমি তাদের একজন। সে সময় আমার মাথা ফাটে। তখন ইকবাল হলে থাকি। ১৯৭১ সালে এখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকাকালে যতগুলো নির্বাচনে হয়, তাতে ইকবাল হল থেকে একমাত্র আমিই পাস করলাম। আর সমস্ত হলে ছাত্রলীগ ফেল করল। কারণ ছাত্রলীগ তখন ভাগ হয়ে গিয়েছিল— জাসদ ছাত্রলীগ, বাংলা ছাত্রলীগ ও শুধু ছাত্রলীগ। অন্যগুলোতে সবাই নিজেদের মধ্যেই ফেল করল, শুধু আমি পাস করলাম। ১৯৬৮-১৯৭২ সাল পর্যন্ত আমি সেখানেই ছিলাম।

আপনার মা-বাবা প্রসঙ্গে বলুন। চলচ্চিত্রে আসার ক্ষেত্রে তাদের অনুপ্রেরণা কতটা ছিল?
আমার বাবা মরহুম আব্দুল মালিক আর মা মরহুম দেলওয়ারা বেগম। তারা কেউই আমাকে চলচ্চিত্রে আসার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেননি। এমনকি সে সময় চলচ্চিত্রে অভিনয় করব কিংবা চলচ্চিত্র নির্মাণ করব আমি নিজেও কখনো ভাবিনি।

sohel-rana2

তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পর কীভাবে চলচ্চিত্রে জড়ালেন?
সেটা আরেক গল্প। দৈনিক ইত্তেফাকে সে সময় আমি মাঝেমধ্যে চলচ্চিত্র নিয়ে লিখতাম। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় নিজেই ‘নূপুর’ নামে একটা পত্রিকা প্রকাশ করতাম। স্বাধীনতার পর হঠাৎ করে মনে হল আমরা যেভাবে যুদ্ধ করলাম সেগুলো যদি সেলুলয়েডের মধ্যে তুলে রাখা যেত খুব ভাল হতো। একটা ডকুফিকশনের মতো হতো। এই চিন্তার পাশাপাশি আরও কয়েকজনের অনুপ্রেরণায় ‘ওরা ১১ জন’ নির্মাণ হল। আমি তখনো ইকবাল হলেই ছিলাম। ‘ওরা ১১ জন’ প্রযোজনা করলেও সেখানে আমি অভিনয় করিনি। এর পর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘মাসুদ রানা’তে প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয় করা। সে সময় চিত্রালী পত্রিকার আহমেদ জামান চৌধুরী, সুমিতা দেবী, এস এম শফিসহ পাঁচ বন্ধু মিলে একটা কমিটি গঠন করলাম। ‘মাসুদ রানা’তে অভিনয়ের জন্য প্রায় ৪০টি আবেদন জমা পড়েছে। আমরা কাকে নির্বাচন করব ঠিক করার জন্য মিটিংয়ে বসেছি। এই সময় আহমেদ জামান চৌধুরী আমাকে বলে, ‘এই চরিত্রে তুমি অভিনয় করবে। এখন থেকে তোমার নাম মাসুদ পারভেজ না, সোহেল রানা।’ তার চাপেই মূলত অভিনয়ে আসা।

‘মাসুদ রানা’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনেতা ও পরিচালক হিসেবে আমার যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে ‘মাসুদ রানা’ মুক্তির পর ব্যাপক সাড়া পড়ে গেল। তখন আমার পড়ালেখাও শেষ। আমিও ভাবলাম, অভিনয়ের মধ্য দিয়েই আল্লাহ বোধ হয় আমার কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুও বললেন, চলচ্চিত্রে থেকে যাওয়ার জন্য। এর পর ‘এপার ওপার’, ‘দস্যু বনহুর’, ‘জীবন নৌকা’— এভাবে একের পর এক প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি।

এ প্রসঙ্গে আবার আসব। এখন মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতে চাই। যুদ্ধে কীভাবে জড়ালেন?
এ সব কথা বললে বিতর্ক হবে। তার পরও বলি— কতিপয় লোক ছাড়া সে সময়ের অধিকাংশ মানুষই মুক্তিযুদ্ধ করেছে। একটা গ্রুপ তখন বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ করেছে, আরেক দল যুদ্ধ করেছে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য। বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ যুদ্ধ করেছে বললে আমরা নিজেরাও আটকা পড়ে যাব। কারণ আমরা এখন রাজাকারের বিচার করছি। সংখ্যায় কম হলেও একদল মানুষ যারা সে সময় স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল।

মুক্তিযুদ্ধের কিছু স্মৃতি যদি শেয়ার করেন—
যুদ্ধের স্মৃতি আসলে শেয়ার করা যায় না। যেমন ভয়ের স্মৃতি শেয়ার করা যায় না। আর্মিদের কাছে মাত্র ২৫ দিন ট্রেনিং নিয়ে যারা যুদ্ধ করেছে তাদের আবেগ-অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা যুদ্ধ করেছি আমাদের মা-বোনের সম্মান রক্ষা করার জন্য, আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য। আমাদের লক্ষ্যই ছিল প্রাণের বিনিময়ে হলেও এই দেশকে রক্ষা করা।

sohel-rana1

চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ নিয়ে আগেও বলেছেন। আরেকটু বিস্তারিত শুনতে চাই।
আমি তখন ইকবাল হলের ভিপি ছিলাম। আমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর একজন দারোয়ান আমাকে বলল, ‘স্যার অনেকে ফিরে আসল, অনেকেই ফিরল না।’ এই কথাটা আমার মনে গভীরভাবে দাগ কাটে। তখন আমাদের প্রত্যেকের টুকরো টুকরো ঘটনা একসঙ্গে জোড়া লাগিয়ে ‘ওরা ১১ জন’-এর মাধ্যমে একটা মালা গাঁথার চেষ্টা করেছি। চলচ্চিত্র হিসেবে উত্তীর্ণ হতে না পারলেও ডকুমেন্টারি ফিল্ম হিসেবে এটার আজীবন মূল্য থাকবে।

চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে কেমন খরচ হয়েছিল?
সাড়ে চার লাখ টাকা। মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র সাধারণত ব্যবসাসফল হয় না, সে কারণেই হয়তো নির্মাতারাও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র নির্মাণে কম আগ্রহী। মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র নির্মাণে যে ধরনের এনভায়রনমেন্ট প্রয়োজন, সরকারি সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না। আমি যখন ‘ওরা ১১ জন’-এর কাজ শুরু করি আর্মস থেকে শুরু করে গোলাবারুদ সবকিছুই সরকার দিয়েছিল। এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার সরকারি অস্ত্র ব্যবহারের জন্য সাহায্য করেছিলেন। সে কারণেই ট্যাঙ্কসহ অনেক ভারী অস্ত্র দেখাতে পেরেছি। যেটা পরে অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রে দেখানো সম্ভব হয়নি। এই কারণেই হয়তো সফল হয় না মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র।

আপনাদের সময়কে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী সময়। কখন থেকে সোনালী সময়টা ধূসর হতে শুরু করে?
আমি আসলে এ কথাটির সঙ্গে একমত নই। মানুষের এটা একটি জন্মগত বৈশিষ্ট্য— তারা সব সময়ই বলে আমাদের সময় সবকিছু ভাল ছিল। এটা তোমার বাবাও তোমাকে বলেছে, আমার বাবাও আমাকে বলেছে, আমাদের দাদারা আমাদের বাবাকে বলেছে। সবাই তাদের সময়টাকে ভাল বলে। আর চলচ্চিত্রের কথা যদি বল, তাহলে চলচ্চিত্রের অবস্থা আসলে খারাপ হয়নি। খারাপ হলে আমাদের সমাজ খারাপ হয়েছে। চলচ্চিত্র হচ্ছে এই সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ রাজনীতির চেয়ে অনেক ভাল আছে।

তাহলে চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ নিয়ে আলাদা করে ভাবার নেই।
না। তবে এই কথা বলা যায়, একটা সময় ছিল সে সময় একসঙ্গে অনেক জ্ঞানী-গুণী লোকের আগমন হয়েছিল। এটা শুধু বাংলা চলচ্চিত্রে নয়, অন্য ক্ষেত্রেও হতে পারে। যেমন বাগানে যখন ফুল ফোটে তখন দেখা যায় একসঙ্গে হাজারো ফুল ফুটেছে। আবার একটা সময় দেখা যায় বাগানে কোনো ফুল নেই। আমাদের চলচ্চিত্রের এমন একটা সময় ছিল যখন রাজ্জাক, ববিতা, শাবানা, সোহেল রানা, ফারুক, আলমগীর একসঙ্গে ফুটেছে। কাজেই সেটাকে সোনালী যুগ মনে হয়েছে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও যখন জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, বঙ্গবন্ধুরা রাজনীতি করেছেন, তখন প্রায় দেশেই বাঘা বাঘা নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন। লেখকদের ক্ষেত্রেও একটা সময় শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম, তারাশঙ্কর— তাদের পরে দশ বছর তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য লেখক দেখা যায়নি। বাংলাদেশে আমাদের চলচ্চিত্রেও একটা সময় ছিল যেটাকে অনেকে সোনালী সময় বলে। আমি বলি, সে সময়টা আমাদের চলচ্চিত্রের বসন্ত ছিল।

এবার অভিনয় প্রসঙ্গে আসি। আপনার বেশীরভাগ চলচ্চিত্রই এ্যাকশনধর্মী, এর কারণ কী?
এটা আসলে শুধু আমার আগ্রহের কারণেই হয়নি। দর্শক সে সময় এই ধরনের চলচ্চিত্রকেই বেশী পছন্দ করত। তারা আমাকে এ্যাকশন নায়ক হিসেবেই গ্রহণ করেছে। এই কারণেই হয়তো এই ধরনের চলচ্চিত্রে বেশী অভিনয় করা হয়েছে।

sohel-rana3

নিজের কোন চলচ্চিত্রগুলোকে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন?
যে চলচ্চিত্রে আমার চরিত্র পছন্দ হবে না, সেই চলচ্চিত্রে আমি কখনই অভিনয় করব না। সেদিক থেকে আমার প্রতিটি চরিত্রই আমার কাছে প্রিয়। তবে কিছু চলচ্চিত্র আছে যেগুলো আমার কাছেও ভাল লেগেছে, পাশাপাশি আকাশছোঁয়া দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছে। এই চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে আছে— মাসুদ রানা, এপার ওপার, জীবন নৌকা, মা, স্ত্রী, দোস্ত দুশমন, মিন্টু আমার নাম ইত্যাদি।

কতটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন?
পারভেজ ফিল্মসের ব্যানারে ৩০টি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এগুলো হল— ওরা ১১ জন, মাসুদ রানা, দস্যু বনহুর, গুনাহগার, জবাব, যাদুনগর, জীবন নৌকা, যুবরাজ, নাগ পূর্ণিমা, বিদ্রোহী, রক্তের বন্দী, লড়াকু, মাড়কশা, বজ্রমুষ্ঠি, ঘেরাও, চোখের পানি, ঘরের শত্রু, গৃহযুদ্ধ, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা, শত্রু সাবধান, খাইছি তোরে, ভালবাসার মূল্য কত, অন্ধকারে চিতা, ভয়ংকর রাজা, ডালভাত, চারিদিকে অন্ধকার, রিটার্ন টিকিট ও মায়ের জন্য পাগল। সর্বশেষ আমার ছেলে ‘অদৃশ্য শত্রু’ নির্মাণ করল। ২৫টির বেশী চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছি।

এখন বেশীরভাগ চলচ্চিত্রই ব্যবসাসফল হয় না—
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া চলচ্চিত্র চলতে পারে না। যেমন মায়ের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া একটা বাচ্চা বড় হতে পারে না। ঠিক চলচ্চিত্রও তাই। এখানে সরকার যদি নজর না দেয় তাহলে কোনোকিছু করা যাবে না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ১৮০০ সিনেমা হল ছিল। আজ সেখানে ৪০০ সিনেমা হল হয়েছে। অন্যগুলো গেল কোথায়! এটার জন্য যখন যে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তাদের কাছেই কাগজপত্র দিয়েছে। কোনো কাজ হয়নি। সে সব কাগজ উইপোকাতে খেয়েছে।

এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, হল বাঁচাতে হলে হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি করতে হবে।
যেখানে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করে গেছেন বাংলাদেশে উর্দু-হিন্দি চলচ্চিত্র আনা হবে না। সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথাকে সরিয়ে দিয়ে কতগুলো অশিক্ষিত মূর্খ মিনিস্টার প্রাইম মিনিস্টারকে কী বুঝিয়েছেন জানি না। বাংলাদেশে হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছেন। ওদের দেশে একজন নায়কই নেয় ২০ কোটি টাকা। আর আমাদের দেশে একটা চলচ্চিত্রই বানানো হয় ৮০-৯০ লাখ টাকা দিয়ে। প্রতিযোগিতা যদি করতেই হয় ওদের বাংলা ১০টি চলচ্চিত্র আসুক, আমাদের ১০টি চলচ্চিত্র যাক। ওদের বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গে এখনো আমরা টক্কর দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখি। আসলে আমরা যাদের কর্তাব্যক্তি মনে করি তারা চলচ্চিত্র সম্পর্কে কেমন ধারণা রাখেন, সেটা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার সময় বোঝা যায়। রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি ছাড়া কোনো পুরস্কার পাওয়া যায় না।

sohel-rana-masum-awal

একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। পরিচালক শহিদুল ইসলাম খোকনের অনেক চলচ্চিত্রে আপনি অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় আছেন…
মাত্র ১২ বছর বয়সে খোকন আমার কাছে এসেছে। আমি বলব না, আমিই ওকে তৈরি করেছি। আমার সঙ্গে অনেক দিন কাজ করেছে। প্রথমে থার্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট, এরপর সেকেন্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট ও ফার্স্ট এ্যাসিস্ট্যান্ট— এভাবেই নিজেকে এগিয়ে নিয়েছে। এক সময় ওকে চলচ্চিত্র বানাতে বললাম। ও সফল হয়েছে, এটা আমার গর্ব।

আর কথা বাড়াচ্ছি না। আপনার বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন।
আমি সারাবছরে একটা চলচ্চিত্রে অভিনয় করি। স্ক্রিপ্ট পছন্দ না হলে অভিনয় করি না। বর্তমানে দু’জন পরিচালকের সঙ্গে কথা চলছে। এখনো জানি না অভিনয় করব কি-না।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
চলচ্চিত্রের সঙ্গে আছি, চলচ্চিত্রের সঙ্গে থাকব।

পাঠকেদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
ট্রাই টু বি এ গুড ম্যান।

: ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ সাক্ষাৎকারটি দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত হয়।


মন্তব্য করুন