![অনুদান পাওয়ার সাত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে ‘আজব কারখানা’](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2024/06/ajob_karkhana1_bmdb_image.jpg?resize=150%2C150&ssl=1)
সালমান, শাকিব, মৌসুমী বা শাবনূরই বাংলা চলচ্চিত্রের সব নয়!
একপক্ষীয় চিন্তা বা সমালোচনা-বিরোধী মনোভাব একটা প্রজন্মের মধ্যে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে তার পরিস্কার ধারণা পাবেন ফেসবুকে গড়ে উঠা এ দেশের নাটক, চলচ্চিত্র বা সংগীত জগতের তথাকথিত সুপারস্টারদের ফ্যানবেইজ ভিত্তিক পেইজগুলোতে বা অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রিক পেজে। একটা প্রজন্ম কী রকম অসহিষ্ণু! কী রকম আক্রমণাত্মক ও বিরোধী মতের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হতে পারে তার বাস্তব চিত্র দেখা যায় তাদের কর্মকাণ্ড থেকে। হাজার দেড়েক প্রেক্ষাগৃহ থেকে শতের নিচে সংখ্যা নামলেও তারা পড়ে রয়েছে অহেতুক তর্কে। আরে, সিনেমা হলই নেই সেখানে আবার সুপারস্টার!
![](https://i0.wp.com/bmdb.co/wp-content/uploads/2022/05/bangla_movie_fan_bmdb_image.jpg?resize=858%2C509&ssl=1)
শাকিব খানের ফ্যানপেইজে গেলে মনে হবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির বয়স ২২ বছর আর এই ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খান ছাড়া কোন নায়ক আসেনি, আসবে না কখনও। যা কিছু অর্জন সব শাকিব খানের। এরা হল বুকিং লিস্ট দেখেই শাকিব খানের প্রতিটি চলচ্চিত্রকে সুপার-ডুপার বাম্পারহিট করে দেয়। আবার সালমান শাহর ফ্যানপেইজে গেলে মনে হবে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহর আগে ও পরে কোন নায়ক নেই, সালমান শাহর ৩ বছরই এই ইন্ডাস্ট্রির সব অর্জন সাফল্য। শাবনূরের ফ্যানপেইজে গেলে মনে হবে শাবনূর ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রে আর কোন নায়িকা ছিলো না এবং শাবনূরের মতো মেধাবী নায়িকা আর নেই। ঠিক একই রকম চিত্র শুভ, সিয়াম, অপু বিশ্বাস, মৌসুমীসহ আরও অনেক তারকার ফ্যানপেইজগুলোতে যা আলাদা আলাদা উল্লেখ করতে গেলে লেখাটি অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে।
যখনই আপনি সেই সকল পেইজে গিয়ে তাদের মতের বিরুদ্ধে আপনি কিছু বলবেন তখনই দেখবেন এরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতোই বিরোধী মতের টুটি চেপে ধরেছে! আপনাকে শুধু গালিগালাজ বা অপমানই করবে না আপনার ফেসবুক আইডিটি পর্যন্ত এরা রিপোর্ট করে ডিজেবল করে দেবে; যার অভিজ্ঞতা আমার ১ বার নয় ৩ বার হয়েছে৷ এ পর্যন্ত আমার আইডি ৭ বার ব্যান হয়েছিলো যার ৩ বার করেছিলো শাকিব খানের ভক্তরা আর বাকি ৪ বার অন্যান্যরা।
এরা জসিম, ইলিয়াস কাঞ্চন, ওমর সানী, বাপ্পারাজ, শাবানাকে নিয়ে ট্রল করে নিজেদের খুব স্মার্ট মনে করে। অথচ তাদের পছন্দের তারকার পুরো ক্যারিয়ার বিচার বিশ্লেষণ করলে একজন জসিমের সমান অবদান হবে না। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতা, প্রযোজক, ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে জসিমের যে অবদান তা শাকিব খানের সব সিনেমা বাম্পার হিট হলেও জসিমের কর্মের সমান হবে না। শাবনূরের ভক্তরা শাবনূরকে শাবানার চেয়েও বড়-সফল অভিনেত্রী মনে করে অথচ এরা জানে না শাবানা যে মানের প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীদের সাথে কাজ করে নিজেকে অন্যন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শাবনূর আরও ১০ বার সুযোগ পেলেও শাবানার সেই ধারে কাছে পৌঁছাতে পারবে না।
সালমানের ভক্তরা মনে করে সালমান শাহর জনপ্রিয়তা ছিলো কিন্তু ওমর সানীর ছিলো না। তারা হয়তো হিসাব করে দেখেনি যে সালমানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্র থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ৩ বছরের ক্যারিয়ারে সালমানের চেয়ে ওমর সানীর মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সংখ্যা বেশি। আবার সালমান জীবিতবস্থায় শাবনূরের সাথে জুটি বেঁধে যতগুলো চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিলো ঠিক একই সময়ে সানী-মৌসুমী জুটির মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র বেশি। সানীর যদি জনপ্রিয়তা একদমই থাকতো না তাহলে এগুলো সম্ভব হতো না।
ওই ভক্তরা ‘গড গিফটেড’ একটা ব্যাপার থাকে সেটা বিশ্বাস করে না। নিজেদের পছন্দের তারকা ব্যতীত অন্যদের অবদান স্বীকার করতে চায় না, সত্যকে অস্বীকার করে নিজেদের বড় করতে চায় ঠিক অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর মতো। এ যেন একটি ‘স্বৈরাচার প্রজন্ম’!
যারা পড়ছেন তাদের জন্য থাকলো নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার অন্যতম সেরা গান ‘মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে’। মনিরুজ্জামান মনিরের কথা এবং আলম খানের সুর ও সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া এ জে মিন্টুর ‘প্রথম প্রেম’ ছবিতে গানটি ব্যবহৃত হয়।