Select Page

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ

‘প্রত্যেক নারীই চায় তার জন্য একজন পুরুষ পাগল থাকুক’…♥

‘তালাশ’ ছবিটি ভালোবাসার, হৃদয়ে রক্তক্ষরণের ছবি যার ফিলিংসটা এ সংলাপে আছে।

ঢালিউড এখন যে সময় পার করছে তাকে স্ট্রাগল পিরিয়ড বলাই ভালো। ঈদ ছাড়া একসাথে একাধিক ছবি মুক্তিও কমে গেছে। দুই ঈদের মাঝে অন্য একটি ছবির সাথে মুক্তি পেয়েছে ‘তালাশ’ ছবিটি। পরিচালনায় সৈকত নাসির।

সৈকত নাসিরের ‘দেশা : দ্য লিডার’ ডিজিটাল সময়ের প্রথমদিকের আলোচিত কাজ ছিল। ‘তালাশ’ ভিন্ন কনটেন্টের ছবি। প্রচারণায় বলা হয়েছে ‘যারা ভালোবেসে সফল বা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের ছবি’। ভালোবাসায় সাফল্য ও ব্যর্থতা দুইদিকেই এ ছবি আছে এমনটি মিন করা হয়েছে। অবশ্য ভালোবাসতে পারাটাই একটা সাফল্য আর লোকে যা বানায় তা হচ্ছে ব্যর্থতা।

বুবলীর হারিয়ে ফেলা ভালোবাসা পুনরায় ফেরত আসে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে। তারপর তার জীবনটা পাল্টে যেতে থাকে। নিজের প্রেমিককে বাঁচাতে চায় কিন্তু তার সাথে যা ঘটছে সেটা আসলেই কী ঘটছে সেটা প্রশ্ন। নায়ক-নায়িকা দুজনেরই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ভালোবাসা, নিয়তি ও রহস্যের দোলাচলে ছবিটি এগিয়েছে।

ছবির একদম ক্লাইমেক্স পর্যন্ত টেনে নিয়ে মেমোরি লেনে অতীত ঘেঁটে রহস্য উদঘাটন করাটা ছবির সবচেয়ে ভালো দিক ছিল। রহস্যের কিনারা করার যে পদ্ধতি তাতে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল বটে কিন্তু শেষটা ছিল সারপ্রাইজিং।

অভিনয়ে শবনম বুবলী প্রথমে থাকবে। তার অভিনয়ের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। ‘চরকি’-র ‘টান’ এবং ‘সাত নাম্বার ফ্লোর’ কাজগুলোতে নিজের পরিবর্তন বা চেষ্টাটা প্রশংসনীয়। ‘তালাশ’ ছবিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে মনের সাথে যুদ্ধ করা অভিনয় চমৎকার ছিল বুবলীর বিশেষ করে ছবির ক্লাইমেক্সে সে অসাধারণ। আদর আজাদ নতুন নায়ক হিসেবে লুকের দিক থেকে পারফেক্ট। ঝাঁকড়া চুলের স্টাইল এবং বডি ফিটনেসে অ্যাকশন ছবিতে ভালো মানাবে মনে হয়। এক্সপ্রেশন যথেষ্ট ভালো তবে অভিনয়ে উন্নতি করতে হবে বিশেষ করে সিরিয়াস সময়গুলোতে। প্রথম ছবি হিসেবে বেশ ভালো ছিল পারফরম্যান্স এবং বলা যায় তার জন্য কঠিন চরিত্রই ছিল। দীপক সুমনের অভিনয় বরাবরের মতোই ভালো এবং তার জন্য সঠিক চরিত্রই ছিল। অন্যান্য চরিত্রগুলো প্রয়োজন মোতাবেক ছিল।

ছবির দুর্বল দিক হলো খাপছাড়া বিজিএম। কোনো সময় বেশ ভালো তো আবার মন্থর। তবে গানগুলো ছবিটিকে এগিয়ে নিয়েছে। ‘একা রাস্তায়’ বেস্ট গান। এর বাইরে ‘রঙের দুনিয়া’ বেশ এনার্জেটিক এবং রোমান্টিক গানটি ভালো ছিল। ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবিতে ভুপেন হাজারিকার কালজয়ী গান ‘মেঘ থমথম করে কেউ নেই’ ফিমেল ভার্সনে ব্যবহৃত হয়েছে এটা খুবই ভালো ছিল। ছবির স্টোরি টেলিং দর্শকভেদে ভিন্ন মনে হতে পারে।

এ মুহূর্তে ঢালিউডের যে অবস্থা তাতে ‘তালাশ’ এর মতো ছবিও কম হচ্ছে। পুরোদস্তুর কমার্শিয়াল ছবি ছাড়া ইন্ডাস্ট্রির গতি ধরে রাখা সম্ভব না এবং সেটা গল্পে, নির্মাণে ভালো হলেই হলো। সেদিক থেকে ‘তালাশ’ মানসম্মত ছবি।

মেসেজ :
‘stop giving up’ ছবিতে এক চরিত্রের টি-শার্টে লেখা ছিল যেটা ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে না যেতে বলেছে।

রেটিং ৭/১০


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন